আপ্লুত: নজিরবিহীন দৃশ্য। দুরন্ত ইনিংসে দিল্লিকে জেতানোর পরে মাঠেই ঋষভকে কোলে তুলে নিচ্ছেন দলের উপদেষ্টা সৌরভ। দর্শক পৃথ্বী শ। এএফপি
সোমবারের জয়পুরের সোয়াই মান সিংহ স্টেডিয়ামকে তাঁরা যেন বেছে নিলেন জবাব দেওয়ার মঞ্চ হিসেবে।
অধিনায়কত্ব চলে যাওয়ার পরেই ছন্দে ফিরলেন অজিঙ্ক রাহানে। ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন তিনি। নতুন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথকে সঙ্গে নিয়েই উপহার দিলেন শতরান।
কিন্তু নাটকের সেখানেই তো শেষ নয়। বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়ার পর থেকে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে দেখা যায়নি ঋষভ পন্থকে। এ দিন তাঁর হয়ে কথা বলল ব্যাট। ৩৬ বলে অপরাজিত ৭৮ রানের ঝলমলে ইনিংস। মারলেন ছ’টি বাউন্ডারি, চারটি বিশাল ছয়। স্ট্রাইক রেট ২১৬.৬৬। চার বল বাকি থাকতে জয়পুর-জয় করে ঋষভই পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে নিয়ে গেলেন দিল্লি ক্যাপিটালসকে।
সোমবার ঋষভের আক্রমণাত্মক ইনিংস কি দেখলেন নির্বাচক মহোদয়েরা? ম্যাচের পরে দিল্লি দলের উপদেষ্টা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পর্যন্ত কোলে তুলে নিলেন নায়ককে। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে এমনই বিরল ছবি থেকে কি নির্বাচকরা কোনও শিক্ষা নিলেন? সময়ই বলবে!
শুরুতে ব্যাট করে ছয় উইকেট হারিয়ে রাজস্থান তুলেছিল ১৯১ রান। জবাবে দিল্লি ক্যাপিটালসের দুই ওপেনার পৃথ্বী শ (৩৯ বলে ৪২ রান) ও শিখর ধওয়ন (২৭ বলে ৫৪ রান) আট ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৭২ রান যোগ করে জয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছিলেন। সেই সরণি ধরে দলকে জয় উপহার দিয়ে মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়লেন ঋষভ। তারই মধ্যে এ দিনও ঘটল সেই অদ্ভুত কাণ্ড। দিল্লি ইনিংসের ১৬ ওভারে জোফ্রা আর্চারের বল পৃথ্বীকে পরাস্ত করে লাগল উইকেটে। কিন্তু বেল পড়ল না! চলতি আইপিএলে এই নিয়ে চার বার। এবং এই নিয়ে দ্বিতীয় বার সেই বিচিত্র ঘটনার শিকার আর্চারই।
রাহানে ৬৩ বল খেলে অপরাজিত ছিলেন ১০৫ রানে। যে দর্শনীয় ইনিংস তিনি সাজিয়েছিলেন ১১টি চার ও তিনটি ছক্কা দিয়ে। নেতৃত্ব বদলের পরে ব্যাট হাতেই সমালোচকদের জবাব দিলেন তিনি। ১৭ বলে যখন তাঁর রান ১৬, তখন তাঁর ক্যাচ পড়েছিল। কিন্তু নতুন জীবন পেয়েই ব্যাটে ঝড় তোলেন তিনি। পরের ১৬ বলে করেন ৩৬ রান। এর পরে আর থামানো যায়নি রাহানেকে। স্টিভ স্মিথও ৩২ বলে করেন ৫০ রান। এই যুগলবন্দিতেই ২০ ওভারে রাজস্থান রয়্যালসের রান দাঁড়াল ১৯১-৬। এই মরসুমে রাজস্থানের সর্বোচ্চ রান। তবে রাহানে ও স্মিথ—রাজস্থান রয়্যালসের এই দুই ব্যাটসম্যান রান পেলেও বড় ইনিংস খেলতে এ দিন ব্যর্থ সঞ্জু স্যামসন (০), বেন স্টোকস (৮) এবং অ্যাশটন টার্নার (০)।
রাহানের শতরানে মুগ্ধ সচিন তেন্ডুলকরও। রাজস্থান রয়্যালস ইনিংস শেষ হতেই ‘মাস্টার ব্লাস্টারের’ টুইট, ‘‘দারুণ একটা ইনিংস খেলল রাহানে। রাজস্থানের ইনিংসটা দায়িত্ব নিয়ে গড়ে দিয়ে গেল। বল ব্যাটে ভালই আসছে। পিচও খারাপ নয়। যদি শিশির পড়ে, তা হলে কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক একটা ম্যাচ হবে।’’ আর হলও ঠিক তাই।
টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। শেষ পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই জিতেছেন দিল্লি অধিনায়ক। জয়পুরের বাউন্সি পিচে কাগিসো রাবাডার মতো পেসার যে ভয়ঙ্কর হতে পারেন, তা নিয়ে খুব সম্ভবত সংশয় ছিল না শ্রেয়সের। দেখা গেল, তাঁর ভাবনায় খুব একটা ভুল ছিল না। রাহানে ও স্মিথ আউট হতেই রাজস্থানের মাঝের সারির ব্যাটিং দিল্লির বোলিং আক্রমণের সামনে ধসে পড়ে। ‘ডেথ ওভারে’ বেশি রান যোগ করতে পারেনি রাজস্থান। শেষ পাঁচ ওভারে রাবাডা ও ক্রিস মরিসের আগ্রাসী বোলিংয়ের সামনে চার উইকেট হারিয়ে মাত্র ৪১ রান যোগ করেন বেন স্টোকসরা। দিল্লির হয়ে বল হাতে সফল রাবাডা। চার ওভার বল করে ৩৭ রানে দুই উইকেট নেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy