সেরা: চার ওভারে ১৪ রানে দুই উইকেট। ফাইনালের সেরা বুমরাই। পিটিআই
রবিবারের রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল জিতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হল ঠিকই, কিন্তু বিরাট কোহালিও এই ম্যাচ দেখে স্বস্তি পেতে পারে। ভারত অধিনায়ক দেখে নিল, তার সেরা অস্ত্র দুরন্ত ছন্দেই আছে। সেই অস্ত্রের নাম যশপ্রীত বুমরা। মুম্বইকে চতুর্থ আইপিএল ট্রফি তুলে দিল এই পেসারই।
অসাধারণ চারটে ওভার করে গেল বুমরা। চার ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে দু’উইকেট তুলে নিল। শেন ওয়াটসনের ওই সহজ ক্যাচটা না পড়লে মুম্বইয়ের জিততে এতটা কষ্ট করতে হয় না, বুমরার ঝুলিতেও আরও একটা উইকেট চলে আসে।
বুমরা এমন সময় নিজের শেষ দুটো ওভার বল করতে এল, যখন তার ঠিক আগের ওভারগুলোয় ২০ করে রান উঠেছে। প্রথমে লাসিথ মালিঙ্গা ১৬তম ওভারে ২০ রান দিল। বুমরা এসে ১৭ নম্বর ওভারে দিয়ে গেল চার রান।
আরও পড়ুন: পর পর চার ম্যাচে হার, মুম্বই ভীতিই কি হারিয়ে দিল চেন্নাইকে?
এর পরে ১৮ নম্বর ওভারে ক্রুণাল পাণ্ড্য এসে ওই ২০ রানই দিয়ে গেল। ১৯ নম্বর ওভারে রোহিত শর্মা আবার বল তুলে দিল বুমরার হাতে। ওই ওভারে পাঁচ রান দিয়ে এক উইকেট তুলে নিল ভারতীয় পেসার। আমার মতে ১৯তম ওভারটাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়। বুমরার শেষ বলে কুইন্টন ডি’কক ওই বাই চার রান না দিলে মালিঙ্গার ওপর অত চাপ থাকত না শেষ ওভারে।
শেষ দু’ওভারে বুমরা শর্ট অব লেংথে শরীর তাক করে বল করে গেল। প্রায় সব বলই কাঁধের উচ্চতায় উঠে এসেছে। এই সব বল ব্যাটসম্যানদের পক্ষে মারা খুবই কঠিন। বিশেষ করে সে সব বল যদি ঘণ্টায় ১৪৫ থেকে ১৫০ কিলোমিটার গতিতে করা হয়। তার উপরে গতি পরিবর্তন করেও ব্যাটসম্যানদের ছন্দ পেতে দেয়নি। এই রকম ভয়ঙ্কর ফর্মের বুমরা কিন্তু বিশ্বকাপে ভারতের তুরুপের তাস হয়ে উঠবে।
বুমরার অবিশ্বাস্য স্পেলের আগে অবশ্য মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নেতৃত্ব এবং উইকেটকিপিং নজর কেড়ে নিল। এ দিন দু’টো ক্যাচ ধরে আইপিএলের সব চেয়ে সফল উইকেটকিপার হয়ে গেল ধোনি (১৩২ শিকার)। এই ধোনি কিন্তু বিশ্বকাপে ভারতকে অনেক কিছু দিতে পারে। তা, উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে কোহালিকে পরামর্শ দেওয়াই হোক বা ক্ষিপ্রতার সঙ্গে ক্যাচ বা স্টাম্প করে প্রতিপক্ষের কয়েকটা উইকেট তুলে নেওয়াই হোক। দুর্ভাগ্যবশত রান আউট হয়ে যাওয়ায় অবশ্য ধোনির ব্যাটিংটা উপ্পলে দেখা যায়নি।
প্রথমে ধোনির নেতৃত্বের কথায় আসি। মুম্বই ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই চেন্নাইয়ের দীপক চাহারকে তিনটে ছয় মারল কুইন্টন ডি’কক। ওই ওভারের পরে দীপকের বোলিং হিসাব দাঁড়ায় ২-০-২২-০। এর পরে যে কোনও অধিনায়ক পাওয়ার প্লে-তে দীপককে বল দেওয়ার কথা ভাবত না। আমিও একই কথা ভাবছিলাম। কিন্তু সবাইকে অবাক করিয়ে ষষ্ঠ ওভারেই আবার দীপকের হাতে বল তুলে দিল ধোনি।
তবে একটা বদল করেছিল সিএসকে অধিনায়ক। দীপককে অন্য প্রান্ত থেকে বল করতে এনেছিল। এ বার হাওয়ার বিপক্ষে। হাওয়ার বিপক্ষে আসা মানে বলের গতি একটু কমে যাওয়া। ব্যাটসম্যানের টাইমিং করতে সমস্যা হবে। দীপক যে বলে রোহিতকে আউট করল, সেটা নাকল বল ছিল। অফস্টাম্পের সামান্য বাইরে পড়ে হাল্কা সুইং করে বেরিয়ে যাচ্ছিল। রোহিত ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে দিল।
তার পরেই দেখলাম, ধোনির দুরন্ত কিপিং। ভাল গতিতে আসা বল, সঠিক উচ্চতায় উইকেটকিপারের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে আর কিপার শরীর ছুড়ে ক্যাচ নিচ্ছে, এই দৃশ্য আমরা দেখেই থাকি। কিন্তু বলটা উইকেটকিপারের সামনে পড়ছে, এই অবস্থায় ক্যাচ ধরা কিন্তু বেশ কঠিন। বল তখন প্রায় মাটি ছুঁতে যাচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে ধোনি সামনে শরীর ছুড়ে ক্যাচটা নিয়ে নিল। বয়স যত বাড়ছে, ধোনির রিফ্লেক্সও যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। নিজে কিপিং করতাম বলে জানি, এই বয়সে এই ধরনের ক্যাচ নেওয়া
কতটা কঠিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy