Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মাথাপিছু সত্তর টাকা, জুটছে না জার্সিও

প্রতি বছরই বিদ্যালয় ক্রীড়ায় খোখো, কবাডি, ফুটবল, হ্যান্ডবল-সহ বিভিন্ন দলগত ইভেন্ট আয়োজিত হয়। এ ছাড়া যোগ, জিমন্যাস্টিক, ক্যারাটে, সাঁতার, অ্যাথলেটিক্সের মতো ব্যক্তিগত ইভেন্টও থাকে। প্রতিটি খেলাতেই অনূর্ধ্ব-১৪, ১৭ ও ১৯ বিভাগের ছেলেমেয়েরা যোগ দেয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সৌমেশ্বর মণ্ডল
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৮
Share: Save:

খেলাধুলোয় ইদানীং বেশ ভাল ফল করছে পূর্ব মেদিনীপুর। জেলার অনেক খেলোয়াড়ই আন্তঃজেলা ও রাজ্যস্তরে খেলতে যাচ্ছেন। তবুও প্রশাসনের সাহায্য মিলছে না তেমন ভাবে। অর্থসঙ্কটে সমস্যায় পড়ছেন সেখানকার খেলোয়াড়েরা। মিলছে না প্রয়োজনের জার্সিও।

অভিযোগ, জেলার বাইরে খেলতে গেলে যে খরচ হয়, সেই অনুযায়ী অর্থসাহায্য মিলছে না। খানিকটা টাকা এলেও, তা হাতে পৌঁছতে অনেক দেরি হচ্ছে। পাশাপাশি, রাজ্যস্তরে খেলতে যাওয়া ছেলেমেয়েদের সকলে জার্সি পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ।

প্রতি বছরই বিদ্যালয় ক্রীড়ায় খোখো, কবাডি, ফুটবল, হ্যান্ডবল-সহ বিভিন্ন দলগত ইভেন্ট আয়োজিত হয়। এ ছাড়া যোগ, জিমন্যাস্টিক, ক্যারাটে, সাঁতার, অ্যাথলেটিক্সের মতো ব্যক্তিগত ইভেন্টও থাকে। প্রতিটি খেলাতেই অনূর্ধ্ব-১৪, ১৭ ও ১৯ বিভাগের ছেলেমেয়েরা যোগ দেয়। আর জেলা থেকে প্রচুর প্রতিযোগীই জেলার বাইরে খেলতে যায়। অভিযোগ, যাতায়াত ও খাওয়াদাওয়ার খরচ পাওয়া যায় না ঠিকমতো। জেলা হ্যান্ডবল অ্যাসোসিয়েশনের কোচ মানিকলাল দাস বলেন, “এ বছর আন্তঃজেলায় খেলতে খড়্গপুরের কেশিয়াড়িতে গিয়েছিলাম। ৩৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। আমরা পেয়েছি ২০০০ টাকা।” তিনি জানান, গত বছর অনূর্ধ্ব-১৭ ছেলে ও মেয়েদের দল নিয়ে পুরুলিয়া গিয়ে ২৪ হাজার টাকা খরচ হলেও পাওয়া গিয়েছিল মাত্র ৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া খেলতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সকলের জার্সি পাওয়া নিয়েও সমস্যা হয়। এ বছর রাজ্য প্রতিযোগিতা হবে জলপাইগুড়িতে। সেখানে খেলতে যাওয়ার জন্য টাকা পাওয়া যাবে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন মানিকবাবু। কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি জার্সির ব্যাপারেও। এমনকী, জেলা থেকে রাজ্যস্তরে দল যাবে কি না, তাও পরিষ্কার হয়নি এখনও।

সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংসদের সাধারণ সম্পাদক রজত বেরা। তিনি বলেন, “রাজ্যের পক্ষ থেকে জেলাকে বার্ষিক ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। সেই বরাদ্দেই হয় বাছাই শিবির। পাশাপাশি, সেই টাকাতেই জেলার বাইরে খেলতে যায় ছেলেমেয়েরা।” সেই হিসেবে, খেলোয়াড়দের মাথা পিছু ৭০ টাকা বরাদ্দ হয়। রজতবাবুর কথায়, “এর বেশি টাকা কোথা থেকে দেব?” তিনি জানান, রাজ্যস্তরে খেলতে গেলে প্রত্যেককে জার্সি দেওয়া উচিত। তাই ক্রীড়া সংসদের পক্ষ থেকেই জার্সির ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু খেলে ফেরার পর সেই জার্সি ফেরত নেওয়া যায় না। তাই সামান্য বরাদ্দের মধ্যেই প্রত্যেক বছর নতুন জার্সি বানাতে হয়। রজতবাবুর সঙ্গে একমত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংসদের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ দাস। তিনি বলেন, “এত কম টাকায় সারা বছরের খরচ চালানো যায় না। শিক্ষকদের থেকে টাকা ধার করতে হয়। বরাদ্দ এলে শিক্ষকদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়।” তবে জার্সি নিয়ে সোমনাথবাবু বলেন, “আমাদের কাছে বিভিন্ন মাপের মোট ১২ সেট জার্সি আছে। খেলার আগে প্রতিযোগীদের নাম ডেকে নম্বর দেখে জার্সি দেওয়া হয়। খেলাশেষে মাঠ থেকেই জার্সি নিয়ে নেওয়া হয়।” খেলোয়াড়দের দেওয়া জার্সি ফিরিয়ে নেওয়া হয় কেন? তাঁর বক্তব্য, প্রতি বছর এত নতুন জার্সি পাওয়া মুশকিল। পাশাপাশি তাঁর আক্ষেপ, ছেলেমেয়েদের খেলাধুলোর জন্য অর্থসাহায্যের আবেদনে যদি সরকার সাড়া দিত, তা হলে এই দুর্দশা খানিকটা ঘুচত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Financial Crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE