Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বিদ্রুপের জবাবে নেমার: আমার সব ম্যাচই অ্যাওয়ে

ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়িয়ে গিয়েছে। স্কোর তখনও গোলশূন্য। মনে হচ্ছিল যন্ত্রণাবিদ্ধ অবস্থাতেই মাঠ ছাড়তে হবে ব্রাজিলীয় মহাতারকাকে।

নায়ক: বিস্ময় গোলের পরে নেমারের বিশেষ উৎসব। এএফপি

নায়ক: বিস্ময় গোলের পরে নেমারের বিশেষ উৎসব। এএফপি

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৬
Share: Save:

তিনি মাঠে নামা থেকেই দর্শকদের বিদ্রুপে বিদ্ধ হচ্ছিলেন। তাঁর বার্সেলোনা যাওয়া নিয়ে যে নাটক গত কয়েক মাস ধরে চলেছে, তা মেনে নিতে পারছিলেন না প্যারিস সাঁ জারমাঁর দর্শকরা। শনিবার রাতে ঘরের মাঠে স্থাসবুয়ঁর বিরুদ্ধে তাই নেমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়রের নাম ঘোষণা হওয়া মাত্রই গ্যালারির একটা বড় অংশ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। নেমাররের উদ্দেশে কটূক্তি ভেসে আসতে থাকে।

ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়িয়ে গিয়েছে। স্কোর তখনও গোলশূন্য। মনে হচ্ছিল যন্ত্রণাবিদ্ধ অবস্থাতেই মাঠ ছাড়তে হবে ব্রাজিলীয় মহাতারকাকে। কিন্তু ৯২ মিনিটের মাথায় এক বিস্ময় গোলে ছবিটা পুরো বদলে দিলেন নেমার।

আবদু দিয়ালোর ক্রসটা যখন তাঁর কাছে উড়ে আসছে, নেমার গোলের দিকে উল্টো মুখ করে দাঁড়িয়ে। ওই অবস্থায় শরীরটা শূন্যে ভাসিয়ে দিয়ে, বাঁ পায়ের অবিশ্বাস্য একটা ভলিতে বল স্থাসবুয়ঁর গোলে পাঠিয়ে দেন ব্রাজিলীয় মহাতারকা। প্যারিসে যে ম্যাচ নিশ্চিত ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছিল, নেমার ম্যাজিকে পিএসজি জিতে নিল ১-০ গোলে।

কিন্তু এই বিস্ময় গোল কি মহাতারকার ক্ষোভে প্রলেপ দিতে পারল? দর্শক-বিদ্রুপ নিয়ে কী বলছেন তিনি? ম্যাচের পরে নেমার বলে যান, ‘‘আমি পরিষ্কার করে দিতে চাই, সমর্থকদের বিরুদ্ধে আমার কোনও ক্ষোভ নেই। ক্লাব হিসেবে পিএসজির বিরুদ্ধেও আমার কোনও বক্তব্য নেই। সবাই জানে, আমি ক্লাব ছাড়তে চেয়েছিলাম। আমি সে সব নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না। শুধু এইটুকু বলব, সময় এসেছে এই সব ভুলে যাওয়ার। আমি এখন পিএসজির ফুটবলার। আর তাই মাঠে নেমে ক্লাবের হয়ে নিজেকে উজাড় করে দিতে আমি তৈরি।’’

মে মাসের পরে আর ক্লাবের হয়ে মাঠে নামেননি নেমার। তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা চলছিল বলে ফরাসি লিগ ওয়ানের প্রথম চারটে ম্যাচে বাইরেই থাকতে হয়েছিল। মরসুমের প্রথম লিগ ম্যাচে নেমে দর্শক বিদ্রুপের শিকার হওয়াটা কতটা যন্ত্রণা দিচ্ছে আপনাকে? ম্যাচের পরে নেমার বলে যান, ‘‘এই প্রথম তো আমার জীবনে এ রকম ঘটনা ঘটল না। ব্রাজিলে খেলার সময় বিদ্রুপের শিকার হয়েছি। আবার এখন ফ্রান্সে খেলার সময়ও ছবিটা বদলায়নি। ব্যাপারটা দুঃখের। কিন্তু আমি জানি, এখন থেকে ঘরের মাঠেও প্রতিটা ম্যাচ আমার কাছে অ্যাওয়ে ম্যাচ।’’ গোলটা করার পরে নেমারকে আবার নতুন এক উৎসব করতে দেখা যায়। বলটা পেটের কাছে ঢুকিয়ে মুখে আঙুল পুরে সতীর্থদের কাছে ছুটে যান তিনি। যার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে, নেমার কি আবার বাবা হতে চলেছেন? খেলার পরে এই নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্নও করেন তাঁকে। নেমার সামান্য হেসে বলে যান, ‘‘আরে না, না। শান্ত হন, আমি আর বাবা হচ্ছি না।’’ তা হলে ওই রকম উৎসব কেন? নেমারের ব্যাখ্যা, ‘‘আমি ভিনিসিয়াসের সঙ্গে কথা বলছিলাম। ম্যাচের সময়ই ক্যারল মা হয়েছে। ওরা ছেলের নাম রেখেছে ভ্যালেন্টিন। আমি কথা দিয়েছিলাম, গোল করতে পারলে ভ্যালেন্টিনকেই উৎসর্গ করব।’’

ক্যারল হলেন নেমারের প্রাক্তন বান্ধবী। যিনি আবার নেমারের সন্তান লুকা দাভির মা। ব্যবসায়ী ভিনিয়াস মার্টিনেজের সঙ্গে এই বছরই বিয়ে হয় ক্যারলের। যাঁদের ছেলে ভ্যালেন্টিনকেই গোল উৎসর্গ করলেন নেমার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football Neymar PSG Strasbourg
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE