নায়ক: ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি করে রোহিত। রবিবার। ছবি: এএফপি
জেসন রয় ও জস বাটলারদের জবাব দিয়ে ১৯৮ রান তাড়া করে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহালিরা। রবিবার যে ভাবে হিসেব কষে খেলে আট বল বাকি থাকতেই সাত উইকেটে জিতল ভারত, তাতে মনে হচ্ছে কুড়ি ওভারের সিরিজ ২-১ জিতে ওয়ান ডে-র জন্যও হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন কোহালিরা। অইন মর্গ্যানরাও নিশ্চয়ই বুঝে নিলেন, যতই অস্ট্রেলিয়াকে হেলায় হারিয়ে থাকুন তাঁরা, ভারতকে সামলানো মোটেই সোজা হবে না।
ওয়ান ডে সিরিজ শুরুর ঠিক আগে রোহিতের ঝোড়ো সেঞ্চুরি (৫৬ বলে ১০০) আর হার্দিক পাণ্ড্যর ম্যাচ ঘোরানো বোলিং (৪-৩৮) ভারতকে মানসিক ভাবে নিশ্চয়ই অনেকটা এগিয়ে রাখবে। রোহিত যে দিন নিজস্ব ছন্দে থাকেন, সে দিন আর কারও ব্যাটিং দেখতে ইচ্ছে করে না। আমার দেখা রোহিতের অন্যতম সেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংস এটাই। মাঠের চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে ওঁর শটের ফুলঝুরি। পায়ের কাছে আসা বলে বরাবরই শক্তিশালী। এ দিনও নিখুঁত স্কোয়ার কাট আর স্ট্রেট ড্রাইভগুলো দেখে মুগ্ধ হলাম। ১১টি চার ও পাঁচটি ছয়ের প্রত্যেকটিই দর্শনীয়। এক বারও কোনও হাফ চান্স দেননি। রবিবারের সন্ধেয় যে কোনও উপভোগ্য ছবির মতোই আকর্ষনীয় ছিল ওঁর ইনিংস।
বিরাটও এ দিন দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানকে যোগ্য সঙ্গত দেন দু’টি চার ও ছয় মেরে। পাশাপাশি, দুর্দান্ত বোলিং করে আত্মবিশ্বাসে ফুটতে থাকা হার্দিককে ব্যাট করতে পাঠিয়ে দিলেন সুরেশ রায়না ও মহেন্দ্র সিংহ ধোনির আগে। ওটাই ‘মাস্টারস্ট্রোক’ হয়ে থাকল। বল হাতে যে ভাবে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন হার্দিক, তেমনই ব্যাট হাতে ‘ফিনিশার’-এর কাজটাও সেরে গেলেন। চারটি চার ও দু’টি ছয় মেরে ১৪ বলে ৩৩ রান করলেন হার্দিক।
ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় টি-টোয়েন্টি স্কোর ২২১-৫ ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। রবিবার ব্রিস্টলে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের শুরুটা দেখে মনে হচ্ছিল সেই রানটা ওরা পেরিয়ে যেতে পারে। ব্রিস্টলের ছোট মাঠে রবিবার জেসন রয়, জস বাটলারকে খুবই আগ্রাসী মেজাজে দেখা গেল। যে কারণে ইংল্যান্ডের শুরুটা দারুণ হয়। মর্গ্যানরা ১০৩-১ ছিল। সেখান থেকে ওদের ৯৫ রানে আট উইকেট পড়ে যায় হার্দিকের দাপটে। প্রথম ওভারে ২২ রান দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরেই পরিকল্পনা বদলে ধস নামিয়ে দেন বিপক্ষের ব্যাটিংয়ে।
আরও পড়ুন: শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতে বোলারদের প্রশংসায় কোহালি
ব্রিস্টলে উইকেটটা বেশ অদ্ভূত ছিল। ঘাস থাকলেও পিচে পড়ে বল খুব একটা ‘সিম’ করছিল না। তাই সুইংয়ের উপরেই ভরসা করতে হচ্ছিল। পাণ্ড্যর প্ল্যান ‘এ’ তাই কাজ করেনি। প্রথম ওভারেই ২২ রান দিয়ে ফেলেন। পরের ওভার থেকে একটু ছোট লেংথে বোলিং শুরু করেন। ব্যাটসম্যানকে সামনে এসে জোরে শট মারার জায়গা দেননি। ছোট ছোট আউটসুইংও করাচ্ছিলেন।
এই বয়সেও স্টাম্পের পিছনে যে কতটা তৎপর হওয়া যায়, তা এ দিন বুঝিয়ে দেন ধোনি। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে তিনিই প্রথম উইকেটকিপার, যিনি একই ম্যাচে পাঁচটি ক্যাচ নিলেন। টি-টোয়েন্টিতে সাধারণত এত ক্যাচ স্টাম্পের পিছনে যায় না। রবিবার তা হয়েছে হার্দিকের কৃতিত্বে। প্রতিটি ক্যাচই দুর্দান্ত। তবে মর্গ্যানের ব্যাট থেকে আকাশে ওঠা বলে ক্যাচটাই সেরা।
কিন্তু ভারতের ফিল্ডিং এ দিন ভাল হয়নি। তিনটি ক্যাচ পড়েছে। ওয়ান ডে-তে ফিল্ডিংয়ে আরও উন্নতি করতে হবে। আর কুলদীপ যাদবকে দলে না নেওয়ার সিদ্ধান্তটা বোধহয় ঠিক হয়নি। সম্ভবত ব্রিস্টলের ছোট মাঠের কথা ভেবে কুলদীপকে দলে রাখেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। সেটা তর্কযোগ্য। অইন মর্গ্যানদের বিরুদ্ধে একজন রহস্য বোলার দরকার ছিল। প্রথম দু’টো উইকেট নিলেও সিদ্ধার্থ কল, দীপক চাহাররা কেউই ভাল বোলিং করতে পারেননি। তবে চোটের জন্য বাইরে থাকা ভুবনেশ্বর কুমার ফিরলে বোলিংয়ের চেহারাও ফিরবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy