উইলিয়ামস বোনেদের বিষাদ আর উচ্ছ্বাস! যার মেরুকরণ আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে সোমবার রাতে ঘটে গেল ভিনাস আর সেরিনার পর পর দুটো ম্যাচে।
ছত্রিশের ভিনাসের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে দু’দশকের যাত্রা টেনিসের ওয়াকিবহাল মনে করছে, তাঁর ১৯তম নিউইয়র্ক অভিযানে শেষ হয়ে গেল। যখন ষষ্ঠ বাছাই স্থানীয় মহাতারকা চতুর্থ রাউন্ডে নিজের চেয়ে বারো বছরের ছোট চেক মেয়ে ক্যারোলিনা পিসকোভার কাছে ৬-৪, ৪-৬, ৬-৭ (৩-৭) হেরে নিজে কাঁদলেন। সেন্টার কোর্টের গ্যালারিকেও কাঁদালেন। আবেগ, কষ্ট, যন্ত্রণায়!
যার মাত্র ঘণ্টাদেড়েক পরে একই কোর্ট, একই গ্যালারি জুড়ে আনন্দ, হাসি, সুখ। পরের চতুর্থ রাউন্ড ম্যাচেই চৌত্রিশের সেরিনা কাজাখের ইরোস্লাভা সেদোভাকে ৬-২, ৬-৩ উড়িয়ে দিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যামের ইতিহাসে ছেলেমেয়ে মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জেতার মাইলফলক গড়ে ফেলেন যে! যার পরে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা শীর্ষ বাছাই মার্কিন কী বললেন? ‘‘জাস্ট ওয়ার্ম আপ করলাম!’’ সেরিনার যে মন্তব্যকে বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবের দিকে দৌড়নো বাকি সাত মেয়ের জন্য সতর্কবার্তা বলাই যায়!
সেরিনার সব মিলিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম ম্যাচ জয়ের সংখ্যা আপাতত ৩০৮। গত রাতের পরে এই তালিকায় তাঁর পরে দ্বিতীয় স্থানে রজার ফেডেরার (৩০৭), তিনে মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা (৩০৬)। অর্থাৎ, পরের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া ওপেন থেকে চলবে রজার-সেরিনার একে অন্যকে টপকে যাওয়ার দৌড়। তবে আপাতত ‘সেরিনাময়’ বিশ্ব টেনিস। একটা বিশ্বরেকর্ডের পরে চলতি সপ্তাহান্তে সেরিনার আর একটা বিশ্বরেকর্ডের আশায় অপেক্ষমান তাঁর ভক্তকুল। ওপেন যুগে স্টেফি গ্রাফের সর্বাধিক গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবের (২২) রেকর্ড ভেঙে সেরিনার ২৩ করা!
সেরিনার মন্তব্যের সুর টেনে তাঁর এক ভক্ত যেমন টুইট করেছেন, ‘ফ্লাশিং মেডোজ সেরিনার। পুরো দাপট না দেখিয়েই!’ উইম্বলডনে স্টেফির ২২ গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবকে ছোঁয়ার পর থেকে সেরিনা ডান কাঁধের ব্যথায় যে ভাবে পেশাদার ট্যুরের প্রায় বাইরেই কাটিয়েছেন শেষ দু’মাস, তার পরে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে তাঁর ফর্ম বিশ্বের এক নম্বর মেয়ের এ বারের ফ্লাশিং মেডোজের নতুন টেনিস পোশাকের মতোই চমকপ্রদ। ‘‘এ বার এখানে আমার কেমন যেন মনে হচ্ছে, কোর্টে এক-একটা রাউন্ড খেলতে নামছি আর জিততে ঠিক যা-যা আমার করা দরকার সেটাই করতে পারছি। দরকারের বেশি খেলছি না, আবার দরকারের কমও নয়। নিজের মেজাজে খেলে চলেছি। এর আনন্দ, অনুভূতিই আলাদা,’’ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ম্যাচ জয়ের শৃঙ্গে পৌঁছে বলেছেন সেরিনা উইলিয়ামস।
ইতিহাস গড়ার দিনে একটা ছোটখাটো নজিরও থাকল যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে। বিশ্বের ১৪৩ নম্বর দেল পোত্রো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে ১৯৯১ সালে জিমি কোনর্সের (সেই সময় বিশ্বের ১৭৪ নম্বর) পরে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে নীচে থাকা প্লেয়ার হিসেবে ফ্লাশিং মেডোজে শেষ আটে উঠলেন। ভারতীয় টেনিসের জন্যও ভাল খবর রয়েছে। নতুন চেক সঙ্গী বারবারা স্ট্রাইকোভাকে নিয়ে বিশ্বের এক নম্বর ডাবলস প্লেয়ার সানিয়া মির্জা মেয়েদের ডাবলসে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy