বেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েশনকে স্টেডিয়াম তৈরির জন্য দেওয়া চার একর জমি ফিরিয়ে নিতে চাইছে রাজ্যের ক্রীড়া দফতর। ঘটনাচক্রে বিএইচএ-র সচিব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোট ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই স্বপনবাবুর সংস্থার কাছে হঠাৎ করে সরকার কেন জমি ফেরত চাইল, তা নিয়েই ময়দানে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
যুবভারতী ক্যাম্পাসের ভিতর এক নম্বর গেটের কাছে ছয় বছর আগে অ্যাস্ট্রোটার্ফ বসানোর জন্য জমি দিয়েছিল তৎকালীন রাজ্য সরকার। সেই জমি ফেরত চেয়ে যুবভারতীর সিইও জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্যায় দিন চারেক আগে একটি চিঠি দিয়েছেন রাজ্য হকি সংস্থাকে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘‘আপনারা এত দিন ওই জমিতে কিছু করতে পারেননি। সেটা পড়ে রয়েছে। সরকার ওখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের হকি স্টেডিয়াম করতে চায়। আপনাদের কিছু বলার থাকলে ২৮ জুলাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’’ এই চিঠি পাওয়ার পর শুক্রবার বিএইচএ কাউন্সিল মিটিং ডাকে। সেখানে ওই চিঠি নিয়ে হইচই হয়। নানা আলোচনার পর ঠিক হয়, ২৮ তারিখ বিএইচএ-র প্রতিনিধি দল সরকারি কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘আমাদের দেওয়া ওই জায়গা এত দিন ডেকরেটার্সের জিনিসপত্র রেখে এবং কয়েকটি গুদাম বানিয়ে জবরদখল করে রেখা হয়েছিল। তাই আমরা কিছু করতে পারিনি। অর্থেরও অভাব আছে। শুনেছি সেখানে ক্রীড়া দফতর অ্যাস্ট্রোটার্ফ বসাবে। আলোচনা হলে বুঝতে পারব ঠিক কী হবে।’’
জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে বিএইচএ-র হাতে তেমন অর্থ নেই। এমনিতেই কলকাতার হকির হাল খারাপ। জমানো টাকাও শেষ হয়ে গিয়েছে। স্টেডিয়াম করতে হলে দরকার প্রায় আট-দশ কোটি টাকা। যেখানে হকি এখন অ্যাস্ট্রোটার্ফ ছাড়া খেলাই হয় না, সেখানে বাংলায় কোনও কৃত্রিম টার্ফই নেই। তা নিয়ে বহু আলোচনা এবং সেমিনার হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সল্টলেকের সাইয়ের টার্ফেই কোনও ক্রমে হয় বেটন কাপ। কলকাতা লিগের ম্যাচ হয় ঘাসের মাঠে। গুরুবক্স সিংহ সহ বেশির ভাগ কর্তাই তাই চাইছেন, সরকার নিজেদের খরচে স্টেডিয়াম এবং টার্ফ তৈরি করে দিক। এতে বাংলার হকির উপকারই হবে। এক কর্তা বললেন, ‘‘রাজ্য হকি সংস্থার যা আর্থিক হাল তাতে জমি পেলেও কোনও দিন স্টেডিয়াম বা টার্ফ হবে না। সরকার যদি করে দেয়, তা হলে ক্ষতি কী! বাংলার ছেলেরাই তো খেলবে। অ্যাকাডেমী তৈরি হলে সেখান থেকেও ফুটবলার বেরোবে।’’ বিএইএ সূত্রের খবর, বেশিরভাগ সদস্যই সরকারকে জমি দেওয়ার পক্ষে। তাদের মনোভাব, এতে যদি বহুদিনের অ্যাস্ট্রোটার্ফ সমস্যা মেটে। না হলে তো খেলাটাই উঠে যাবে। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস রাতে বললেন, ‘‘হকির মাঠ নিয়ে ফাইল চালাচালি চলছে। আমরা একটা হকির অ্যাকাডেমী ও আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম করতে চাইছি। পুরো ঘটনা না জেনে কিছু বলব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy