গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
কোনও কসরতই করতে হয়নি ভারতকে। রোহিত শর্মা ও শিখর ধওয়ন ছিলেন। দু’জনে মিলেইম্যাচ জিতিয়ে দিয়েছেন। ওঁদের দেখে শেখা উচিত পাকিস্তানের। রবিবার এশিয়া কাপ সুপার ফোরে হেরেছে পাকিস্তান। তাও আবার চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে। তার পর থেকেই এমন মন্তব্য ঘুরপাক খাচ্ছে পাক সংবাদমাধ্যমে। তাতে যোগ দিয়েছেন সে দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও। সংবাদমাধ্যমে সরফরাজ বাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা।
রবিবার ম্যাচের পরই বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাতে ওয়াসিম আক্রম সহ অনেকেই হাজির ছিলেন। সেখানে পাক ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন তাঁরা। জিও টিভিতে ওয়াসিম আক্রম বলেন, ‘‘গত বছর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল ছিল। তাতে জিতেছিল পাকিস্তান। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে নেহাত সৌভাগ্যবশতই জিতেছিলাম আমরা।’’
পি টিভিতে রশিদ লতিফ বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ভারত আর পাকিস্তান ক্রিকেটের মধ্যে কয়েক আলোকবর্ষের তফাত রয়েছে।’’ সাকলিন মুস্তাকের মতে, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেটারদের ফিটনেসের সঙ্গে আমাদের ক্রিকেটারদের ফিটনেসের কোনও তুলনাই চলে না।’’ আবদুল রজ্জাক বলেন, ‘‘রোহিত শর্মা আর শিখর ধওয়ন মিলেই তো ম্যাচ জিতিয়ে দিলেন ভারতকে। ওঁদের দেখে শেখা উচিত সরফরাজদের।’’
আরও পড়ুন: দুবাইয়ে রোহিত-শিখরের ব্যাটে কী কী রেকর্ড হল, জানেন?
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করে ৭ হাজারি ক্লাবে রোহিত শর্মা
প্রাক্তন সতীর্থরাই যখন এমন মন্তব্য করছেন তখন সংবাদ মাধ্যম কি আর ছেড়ে কথা বলে? ঠিক তেমনটাই ঘটেছে। রবিবার লজ্জাজনক হারের পর দলের সমালোচনায় সরব হয়েছে সে দেশের প্রায় সব সংবাদ সংস্থাই। দলের হেড কোচ মিকি আর্থারের একটি সাক্ষাৎকার ছেপেছে ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ সংবাদপত্র। তাতে দলের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ ও তাঁর সতীর্থদের ওপরই হারের দায় চাপিয়েছেন হেড কোচ আর্থার। তাঁর কথায়, ‘‘আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছে ওরা।মাঠে নামবে কি, ড্রেসিংরুমেই ব্যর্থতার ভয় চেপে ধরছে ওদের।এখন আর লুকোছাপা করে লাভ কী? বরং এই পরিস্থিতিতে সত্যের মুখোমুখি হওয়া দরকার। তবে হাল ছাড়লে চলবে না।’’
এ প্রসঙ্গে ওপেনার ফখরকে টেনে আনেন তিনি। বলেন, ‘‘ক্রিকেট আত্মবিশ্বাসের খেলা। ফখর জামানকেই দেখুন! কী ভাল খেলোয়াড়।ওকে ঘিরে কত প্রত্যাশা।কিন্তু ও নিজেই এখন নিজের যোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান।এই মুহূর্তে ওকে আত্মবিশ্বাস জোগানো ছাড়া উপায় নেই।’’
হারের জন্য অধিনায়ক সরফরাজকে দায়ী করেছেন অনেকে। ব্যাটিং না নিয়ে বোলিং করলে হার এড়ানো যেত বলে দাবি তাঁদের। জিও টিভির মতে, দুঃসময়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার দায়িত্ব অধিনায়কের। কিন্তু এশিয়া কাপের শুরু থেকেই তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন সরফরাজ। একেবারেই রান পাননি তিনি। আবার কখন কী করা উচিত, সময় মতো সেই সিদ্ধান্তও নিতে পারেননি।
তবে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকেই (পিসিবি) হারের জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন। সে দেশের জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘ডন’-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোর্ডের সিদ্ধান্তে দূরদর্শিতার অভাব রয়েছে। ফখর জামান, বাবর আজম, হাসান আলি এবং শাহদাব খানের মতো খেলোয়াড়দের মধ্যে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিশ্বমানের খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে অনেক পিছিয়ে তাঁরা। তার জন্য দায়ী পিসিবি।
কারণ, ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর সেভাবে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগই পাননি পাক খেলোয়াড়রা। শ্রীলঙ্কা, স্কটল্যান্ড এবং জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে লিমিটেড ওভারের ম্যাচ হয়েছে বটে। জুলাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজে জয়ও মিলেছে। কিন্তু ভারতের মতো প্রতিপক্ষকে সামাল দিতে তা কি আদৌ যথেষ্ট? আরও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলানো কি উচিত ছিল না? সঠিক অর্থে প্রতিযোগিতা বলতে যা বোঝায়, সেই ধরনের ম্যাচ খেলার কোনও সুযোগই তো পাননি পাক খেলোয়াড়রা। তাই হঠাৎ করে ভারতের বিরুদ্ধে নামিয়ে দিলে মুখ থুবড়ে পড়াটাই স্বাভাবিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy