রিচার্ড উইলিয়ামসের ছোট মেয়ে যতই কেরিয়ারের দ্বিতীয় ‘সেরেনা স্ল্যাম’ আজ লন্ডনের ঝকঝকে বিকেলে উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টে পূর্ণ করুক, আমার মতে তিন-চার বছর আগে সেরেনা উইলিয়ামস এখনকার চেয়ে আরও বেশি ভাল খেলত। আসলে মেয়েদের সিঙ্গলসে ইদানীং প্রতিদ্বন্দ্বিতার মানটা একটু হলেও নেমে এসেছে।
সেরেনা যে বিশ্বের বাকি মেয়েদের চেয়ে খেলার স্ট্যান্ডার্ডে বেশ বড় এক কদম এগিয়ে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এ দিন ফাইনালেও গারবিন মুগুরুজাকে ৬-৪, ৬-৪ হারানোর সময় সেরেনাকে ‘টু গুড’ দেখাল। কিন্তু ওকে সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ দেওয়ার মতো প্রতিপক্ষ এখন পেশাদার ট্যুরে কোথায়, সেটাও ভেবে দেখা দরকার।
যে অর্থে বিলি জিনের একটা মার্গারেট কোর্ট ছিল। এভার্টের একটা নাভ্রাতিলোভা ছিল। স্টেফির একটা সেলেস ছিল। এমনকী হিঙ্গিসেরও একটা জাস্টিন এনা ছিল। সে রকম যোগ্য প্রতিপক্ষ নেটের উল্টো দিকে সেরেনার ইদানীং কোথায়? মারিয়া শারাপোভা ওর সামনে পড়লেই উড়ে যাবে। আজারেঙ্কা একটু-আধটু চ্যালেঞ্জ দেবে— ওইটুকুই। এই যে আজ নিয়ে শেষ চার বছরে চারটে মেয়ে প্রথম বার উইম্বলডন ফাইনাল খেলল, সেটাও আমার মনে হয় সত্যিকারের বিশ্বমানের প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভাবের কারণে। রাডওয়ানস্কা, লিসিকি, বুশার্ডরা কেউ তার পরে আর সে ভাবে বিশ্বসেরা হওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারছে না। দেখার এ বার মুগুরুজাও ওদের দলে নাম লেখায়, না নিজের প্রতিভার সদ্ব্যবহার করে!
তবে এ দিনের পারফরম্যান্সের বিচারে ভেনেজুয়েলান মা আর স্প্যানিশ বাবার বছর একুশের মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি যথেষ্ট আশাবাদী। মুগুরুজার হাতে বিগ সার্ভ আছে। পাওয়ারফুল গ্রাউন্ডস্ট্রোক। ভাল হাইট। ভাল স্বাস্থ্য। শীর্ষে পৌঁছনোর প্রায় সব রসদই আছে ওর খেলায়।
ফাইনালে স্ট্রেট সেটে হারলেও দু’টো সেটেই নাটক তৈরি করতে পেরেছে মুগুরুজা। প্রথম সেটে ৩-১, ৪-২ এগিয়েও তার পরে টানা চারটে গেম ওর হারের কারণ একটাই— এত বড় মঞ্চে খেলার অনভিজ্ঞতা। সেন্টার কোর্টে উইম্বলডন ফাইনাল তাবড় তারকার পেটে গুড়গুড়ানি তোলে। কেন রোজওয়াল, ইভান লেন্ডলের মতো সর্বকালের সেরারাও এখানে কোনও দিন ফাইনালের বাধা টপকাতে পারেনি।
সে দিক দিয়ে তো দ্বিতীয় সেটে মুগুরুজার ১-৫ থেকে সেরেনাকে পরপর দু’বার ব্রেক করে ৪-৫ করা যথেষ্ট কৃতিত্বের। দশম গেমে নিজের সার্ভিসে প্রথম পয়েন্টেই ডাবল ফল্ট করাটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। ওই সময় মুগুরুজা ৫-৫ করতে পারলে খেলাটার শেষমেশ কী পরিণতি হত, নিশ্চিত নই। তখন কিন্তু সেরেনাকে একটু টেনস্ড দেখাচ্ছিল। কিন্তু সুপার চ্যাম্পিয়ন তো! মোক্ষম সময়ে বিপক্ষের ডাবল ফল্টের সুযোগ নিয়ে ব্রেক করে চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট তুলে নিল।
সব শেষে দু’টো কথা। আমার মতে সেরেনা এর পর ইউএস ওপেন জিতে ‘ক্যালেন্ডার ইয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম’ করবে। জন ম্যাকেনরোকে বলতে শুনলাম, সেরেনা অন্তত ২৫টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতবেই। আর সেরেনা কোর্টে ইন্টারভিউয়ে বলে দিল, মুগুরুজা তিন বছরের মধ্যে উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy