Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪

‘নেমার, মাথা ঠান্ডা রেখে প্রমাণ করো তুমি নায়ক’

ফুটবল দুনিয়া দেখছে, ব্রাজিলের সেরা ফুটবলার এই মুহূর্তে নেমার নয়, ফিলিপে কুটিনহো। তবুও একটা কথা বলব। প্রথম পর্বের বাধা পেরনোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নিশ্চয়ই আমাদের ছেলেরা আরও উন্নতি করবে।

মহড়া: বিশ্বকাপে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে ব্রাজিলের সামনে এ বার মেক্সিকো। সেই পরীক্ষায় নামার প্রস্তুতিতে মগ্ন নেমার। ছবি: গেটি ইমেজেস।

মহড়া: বিশ্বকাপে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে ব্রাজিলের সামনে এ বার মেক্সিকো। সেই পরীক্ষায় নামার প্রস্তুতিতে মগ্ন নেমার। ছবি: গেটি ইমেজেস।

রিভাল্ডো
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৮ ০৪:১২
Share: Save:

নানা প্রশ্নের সামনে পড়ে ব্রাজিল নক-আউট পর্বের প্রথম ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে মেক্সিকোর সঙ্গে। প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের সেরা ফুটবলার নেমার এখনও ফর্ম খুঁজে পায়নি। যা নিয়ে ব্রাজিলের মানুষও কথা বলছে।

ফুটবল দুনিয়া দেখছে, ব্রাজিলের সেরা ফুটবলার এই মুহূর্তে নেমার নয়, ফিলিপে কুটিনহো। তবুও একটা কথা বলব। প্রথম পর্বের বাধা পেরনোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নিশ্চয়ই আমাদের ছেলেরা আরও উন্নতি করবে। ব্রাজিল হয়তো খুব দর্শনীয় ফুটবল খেলছে না। সেটা নিয়ে অনেকেই দেখছি সরব। কিন্তু এটাও মনে রাখা দরকার, অনেকেই তাদের প্রথম বিশ্বকাপ খেলছে। সেই অনভিজ্ঞতাটা প্রকাশ পাচ্ছে।

মেনে নিচ্ছি, এটা সেই ব্রাজিল নয়, যে দলকে লোকে দেখতে চায়। আক্রমণ বিভাগে ত্রয়ী এখনও পুরোপুরি নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। আক্রমণ নয়, রাশিয়ায় ব্রাজিলকে জেতাচ্ছে জমাট রক্ষণ। এই দলটা হয়তো দর্শনীয় ফুটবলে বিশ্বাস করে না। তবে উন্নতি করতে চায়। সেই লক্ষণটা স্পষ্ট। কুটিনহো প্রথম দু’টি ম্যাচে সেরা নির্বাচিত হয়েছিল। আমার মতে, তৃতীয় ম্যাচটাতেও ওরই সেই পুরস্কার প্রাপ্য ছিল। যদিও ফিফা পুরস্কারটা দিল পাওলিনহোকে। ব্রাজিল যদি বিশ্বকাপে আমাদের সকলের স্বপ্নপূরণ করতে পারে, তা হলে কুটিনহোর ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে।

আমি আরও এক জনের কথা বলব। থিয়াগো সিলভা। কী অসাধারণ খেলছে ছেলেটা! বিশ্বকাপের আগে সংশয় ছিল, প্রথম একাদশে কে খেলবে— সিলভা বা মারকুইনোস। দেখে মনে হচ্ছিল, সিলভা হয়তো সুযোগই পাবে না। বেঞ্চে বসে কাটাতে হবে। ঠিক বিশ্বকাপের আগেই মারকুইনোসের জায়গায় খেলানো শুরু হয় সিলভাকে এবং ও প্রমাণ করে দিয়েছে, চার বছর আগের সেই দুঃস্বপ্ন এখন অতীত। সিলভাই এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সেরা সেন্টার ব্যাক। মিরান্ডা এবং কাসেমিরোর সঙ্গে দুর্দান্ত বোঝাপড়াও হয়ে গিয়েছে ওর। বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ডিফেন্স এখন ব্রাজিলের। অ্যালিসনকে খুব বেশি অস্বস্তিতেই পড়তে হয়নি জমাট ডিফেন্সের জন্য। মাত্র দু’টো কঠিন ‘সেভ’ করতে হয়েছে। একটাই গোল খেয়েছে। ব্রাজিলকে বিশ্বাস দিচ্ছে ওদের রিজার্ভ বেঞ্চও। তিতেকে শান্তি দিয়েছে বেঞ্চ, যেটা যে কোনও কোচই পেতে চায়। ডান দিকে তৃতীয় বিকল্প হিসেবে এসেছিল ফ্যাগনার। এখন ও-ই দুর্দান্ত খেলে দিচ্ছে। সার্বিয়া ম্যাচে মার্সেলোর চোট লাগার পরে ফিলিপে লুইসকে নামতে হল ১০ মিনিটের মধ্যে। কিন্তু লুইসও দুর্দান্ত খেলে দিয়ে গেল। কোস্টা রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয়ার্ধে নেমে ফিরমিনো দারুণ খেলল। মিডফিল্ডে পরিবর্ত হিসেবে নেমে ব্রাজিলকে স্বস্তি দিল ফার্নান্দিনহো। দেখা যাচ্ছে, তিতে যাকেই পরিবর্ত হিসেবে নামাচ্ছেন, সফল হচ্ছে। এটা এক জন কোচকে সব চেয়ে বেশি স্বস্তি দিতে পারে। কারণ, তাঁর হাতে অনেক রকম বিকল্প তৈরি থাকছে। এর ফলে দল এবং কোচ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে।

ব্রাজিলের এখন একটাই প্রার্থনা চলতে থাকবে। নেমার যেন দ্রুত স্বমহিমায় ফেরে। বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব পর্যন্ত যা হয়েছে, হয়েছে। নেমারকে সে সব ভুলে নতুন ভাবে শুরু করতে হবে। মাথা ঠান্ডা রেখে ওকে সেই চাপ সামলাতে হবে। আগের ম্যাচেই কিন্তু ও হলুদ কার্ড দেখেছে। আর কোনও কার্ড দেখা চলবে না।

মেজাজকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে, নেমার। মনে রেখো, তোমার ঠান্ডা মেজাজের উপর তোমার নিজের এবং দলের ভাগ্য নির্ভর করে আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE