Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মেসি আক্রমণ করতে বলেন, ফাঁস রোহোর

নায়ক অবশ্য নিজে কৃতিত্ব দিচ্ছেন তাঁর অধিনায়ককে। ম্যাচের বিরতিতে দেখা গিয়েছে লিয়োনেল মেসি তাঁর ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলছেন আলাদা করে।

 নায়ক: শেষ মুহূর্তের গোলে বাজিমাত রোহোর। ফাইল চিত্র

 নায়ক: শেষ মুহূর্তের গোলে বাজিমাত রোহোর। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮ ০৪:২৯
Share: Save:

সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন একটা রসিকতা খুব চলছে। মার্কোস রোহো পাউরুটি সেঁকতে পারেন না, কিন্তু আর্জেন্টিনাকে জেতাতে পারেন!

রসিকতা চালু হওয়ার পিছনে অবশ্য একটা কারণ আছে। দিন কয়েক আগে ইনস্টাগ্রামে এই আর্জেন্তিনীয় ফুটবলার একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। তাতে দেখা যাচ্ছে দু’টো পোড়া টোস্ট প্লেটে নিয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন রোহো। তখন অবশ্য বিশেষ আলোচনা হয়নি ওই ছবি নিয়ে। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে রোহোর দুরন্ত গোলে আর্জেন্টিনা জেতার পরে শিরোনামে চলে এসেছেন এই তরুণ ফুটবলার। সঙ্গে সেই পোড়া টোস্টের কাহিনি!

নায়ক অবশ্য নিজে কৃতিত্ব দিচ্ছেন তাঁর অধিনায়ককে। ম্যাচের বিরতিতে দেখা গিয়েছে লিয়োনেল মেসি তাঁর ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলছেন আলাদা করে। কী বলেছিলেন মেসি? ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের সামনে সে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন রোহো। ‘‘মেসি আমাদের বলেছিল, আমরা জীবন-মরণ পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। লড়াই ছাড়া চলবে না।’’

মেসি যে এই ম্যাচটা জিততে কতটা মরিয়া ছিলেন, তা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে রোহোর কথায়। বিরতিতে আর্জেন্টিনা ১-০ এগিয়ে থাকলেও মেসি চাইছিলেন, আরও গোল করতে। তিনি চাইছিলেন, রক্ষণের ফুটবলররাও যেন আক্রমণে উঠে আসেন। রোহো বলছেন, ‘‘মেসি বলেছিল, আমি যেন আক্রমণে উঠে আসি। হাভিয়ের মাসচেরানোকেও একই কথা বলেছিল। মাথা ঠান্ডা রেখে ঝুঁকি নিয়ে আক্রমণে যেতে চাইছিল মেসি। সামান্য ভুল করলে ম্যাচটা আমাদের হাত থেকে বেরিয়েও যেতে পারত। কিন্তু মেসি নাছোড়বান্দা ছিল। খেলার গতিপ্রকৃতি ও দারুণ ভাবে বুঝে গিয়েছিল। বিশ্বের সেরা অধিনায়ক।’’

মেসি যে ভাবে দলকে উদ্দীপিত করেছিলেন, তার পরে রোহো নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন যে, তিনিও গোল পাবেন। তবে তারও আগে প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়ে গিয়েছিলেন রোহো। যখন নিজেদের পেনাল্টি বক্সে একটি বল তাঁর হাতে লাগে। ভিডিয়ো প্রযুক্তির (ভার) সাহায্য নিয়ে অবশ্য রেফারি পেনাল্টি দেননি। এর পরে ৮৬ মিনিটের মাথায় দুরন্ত ভলিতে গোল করে আর্জেন্টিনাকে পরের রাউন্ডে তুলে দেন রোহো। ‘‘জানতাম, ঠিক গোল পাব,’’ বলেছেন তিনি।

শেষ ষোলোয় ওঠার উৎসব পিৎজা খেয়ে সেরেছেন রোহো। বলেছেন, ‘‘এখন আমাদের আর একটা কাপ অভিযান শুরু হল। আগের চেয়ে আমরা অনেক শক্তিশালী।’’ চার বছর আগের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলে ছিলেন রোহো। অল্পের জন্য কাপ হারানোর যন্ত্রণা টের পেয়েছেন। এ বার তাই হয়তো আরও বেশি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দেখাচ্ছে এই ডিফেন্ডারকে। নাইজিরিয়াকে হারানোর পরে ড্রেসিংরুম থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বার্তা পোস্ট করেন তিনি। লেখেন, ‘‘আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তা হলে কোনও গুলি আমাদের ছুঁতে পারবে না।’’

সেন্ট পিটার্সবার্গের নায়কের দেশের হয়ে অভিষেক ঘটেছিল ২০১১ সালে। ব্রাজিলে খেলেন প্রথম বিশ্বকাপ। সেখানেই জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক গোল। সেটাও এসেছিল এই নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধেই। তবে স্বাভাবিক ভাবে এ রকম টেনশনের ম্যাচ ছিল না সেটা।

মেসির গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরেও সমতা ফেরায় নাইজিরিয়া। তখন মনে হচ্ছিল, বিদায় বুঝি নিশ্চিত আর্জেন্টিনার। ম্যাচের পরে মেসি স্বীকার করেছেন, ‘‘এ রকম চাপের মধ্যে আগে কখনও পড়েছি বলে মনে হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE