Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আজ ‘জুয়া’ খেলতে নামছেন বিন্দ্রা

রিওতে যে ইভেন্ট থেকে সবথেকে বেশি পদক আশা করছে ভারত, দু’দিন অলিম্পিক্স চলার পর সেই শ্যুটিং-এ শুধুই হতাশা। এ রকম গুমোট আবহে সোমবার তাঁর খেলোয়াড়জীবনের শেষ ক’টা গুলি ছুড়তে নামছেন অভিনব বিন্দ্রা। দশ মিটার এয়ার রাইফেলে নামছেন তিনি। যাতে সোনা জিতেছিলেন আট বছর আগে বেজিং গেমসে। এখনও পর্যন্ত অলিম্পিক্সে ভারতের একমাত্র ব্যক্তিগত সোনার পদক সেটাই।

রতন চক্রবর্তী
রিও দে জেনেইরো শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০৪:১৩
Share: Save:

রিওতে যে ইভেন্ট থেকে সবথেকে বেশি পদক আশা করছে ভারত, দু’দিন অলিম্পিক্স চলার পর সেই শ্যুটিং-এ শুধুই হতাশা।

এ রকম গুমোট আবহে সোমবার তাঁর খেলোয়াড়জীবনের শেষ ক’টা গুলি ছুড়তে নামছেন অভিনব বিন্দ্রা। দশ মিটার এয়ার রাইফেলে নামছেন তিনি। যাতে সোনা জিতেছিলেন আট বছর আগে বেজিং গেমসে। এখনও পর্যন্ত অলিম্পিক্সে ভারতের একমাত্র ব্যক্তিগত সোনার পদক সেটাই। অভিনবের সঙ্গে একই দিনে নামছেন দেশের আর এক অলিম্পিক্স পজকজয়ী শ্যুটার গগন নারাঙ্গও।

দিলখোলা গগন কয়েক দিন আগে এসেছিলেন এখানে গেমসের মিডিয়া সেন্টারে। বলেছিলেন, ‘‘শ্যুটিংয়ে পদক পাওয়া নির্ভর করে সেই দিনটায় আপনি কতটা প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন, কতটা মানসিক দিক থেকে সেরা কন্ডিশনে আছেন, এ সবের উপর।’’ রবিবার সকালে হাতের কাছে পাওয়া গেল রিওর উদ্বোধনী মার্চপাস্টে ভারতের পতাকা বাহক অভিনব বিন্দ্রাকে। শ্যুটিং সেন্টারে এসেছিলেন অভিনব। সম্ভবত যুদ্ধের আগের দিন দেখতে এসেছিলেন তাঁর শেষ রণক্ষেত্রটা। দেশ-বিদেশের শ্যুটাররা আসছেন, হাত মিলিয়ে যাচ্ছেন বিন্দ্রার সঙ্গে। ভারতীয় দলের জুনিয়ররা এসে টিপস নিচ্ছেন তাঁর কাছে। তিনি শান্ত। মার্চপাস্টে যে রকম উচ্ছ্বাসহীন দেখা গিয়েছিল তাঁকে, এখানেও সে রকম।

কোনও দিনই ‘মিডিয়া ফ্রেন্ডলি’ নন। কথা বলতে প্রবল অনীহা। জীবনের শেষ অলিম্পিক্সে প্রচারের আলোর বাইরে থাকবেন পনেরো দিন আগেই সবাইকে জানিয়ে দিয়েছিলেন। কোনও দিন বিতর্কে জড়াননি দেশের সবচেয়ে হাইপ্রোফাইল ক্রীড়াবিদদের অন্যতম অভিনব। আপামর জনগণের জানার বাইরে যে খেলাটা ছিল, সোনা জিতে সেই খেলার কথা ভারতের ঘরে ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবুও কী নম্র। জীবনের শেষ অলিম্পিক্সে নামছেন? লক্ষ্য কী?

কিছুক্ষণ চুপচাপ। তার পর আইটি-র সফল ব্যক্তির মতো মুখ করে হাসলেন। ‘‘অলিম্পিক্সে যারা নামে তারাই কিছু করতে চায়।’’ নিরীহ উত্তর দিয়ে তাকালেন এই প্রতিবেদকের বুকে লাগানো অলিম্পক্স কার্ডের দিকে। তার পর বললেন, ‘‘মিডিয়ার সঙ্গে আমি কথা বলছি না। প্লিজ।’’ তা সত্ত্বেও পিছনে লেগে থাকতেই হল। একজন এসে তাঁকে প্রশ্ন করলেন, ‘‘আর তো শ্যুট করবে না? এখানে কিছু করো।’’ সম্ভবত অভিনবের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। অভিনব এ বারও হাসলেন। ‘‘আমাদের ইভেন্টটা জুয়া খেলার মতো। দিনটা যার, সে-ই জিতবে। তবু ধৈর্য রাখছি। দেখা যাক।’’

দু-একটার বেশি কথা না বললেও অভিনব কিন্তু তাঁর লক্ষ্যে স্থির। গত দেড় মাস মিউনিখে ট্রেনিং করেছেন। পরিবারের সঙ্গেই কথা বলেছেন সপ্তাহে এক বার। জানালেন অভিনবের এক ঘনিষ্ট শ্যুটার-ই। বেজিং অলিম্পিক্সে সোনা জেতার পর বাজারে চালু হয়েছিল তাঁর ব্রেন ম্যাপিং-এর কথা। সেই অভিনব এ বার মিউনিখে অনুশীলনে সাহায্য নিয়েছেন ইলেকট্রিক ম্যাগনেটিক সিস্টেমের। যাতে গুলি ছোড়ার মুহূর্তে নিজের ‘নার্ভাস সিস্টেম’ ঠিক রাখা যায়। শ্যুটিংকে বিদায় জানানোর মাহেন্দ্রক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখতে কী আকুতি অভিনবের!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rio Olympics Abhinav Bindra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE