Advertisement
E-Paper

চুক্তি হবে, আয়করও দিতে হবে ঢাকার প্রিমিয়ার ডিভিশনের ক্রিকেটারদের

২০০০ সাল থেকে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা এনে তাঁদের আয়কর দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ( বিসিবি)। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ক্রিকেটাররা করের আওতায় এসেছেন প্রথম থেকেই। তবে এত দিন করের আওতাভুক্ত ছিলেন না ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে খেলা ক্রিকেটাররা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৬ ১২:৪৬

২০০০ সাল থেকে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা এনে তাঁদের আয়কর দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ( বিসিবি)। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ক্রিকেটাররা করের আওতায় এসেছেন প্রথম থেকেই। তবে এত দিন করের আওতাভুক্ত ছিলেন না ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে খেলা ক্রিকেটাররা। বার বার তাগাদা দিয়েও বিভিন্ন ক্লাব-সহ ক্রিকেটারদের অপরাগতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ওই খেলোয়াড়দের কর আদায় করতে পারেনি। এমনকী ২০১২-’১৩ মরসুমে প্লেয়ার্স ড্রাফটে বিক্রি হওয়া ক্রিকেটারদের আয়ের পরিমাণ জানাজানি হওয়ার পরও কর আদায় করতে পারেনি এনবিআর। তবে এ বার কঠোর হয়েছে বিসিবি এবং ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট পরিচালনাকারী সংগঠন ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম)। আসন্ন প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগকে সামনে রেখে গত রবিবার প্লেয়ার্স ড্রাফটে বিক্রি হওয়া সকল ক্রিকেটারকে কর দিতে হবে, এ শর্ত জুড়ে দিয়েছে বিসিবি। শুধু তাই নয়, এই প্রথম প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ক্রিকেটারদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তির জন্য চুক্তিপত্রও তৈরি করেছে সিসিডিএম। এই অবস্থানের কথা জানিয়েছেন সিসিডিএম চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোর্তজা পাপ্পা। তিনি বলেন, “এ বার প্রথম বারের মতো বিসিবি তরফ থেকে আমরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তি করছি। যাতে করে খেলোয়াড় এবং ক্লাবগুলোর উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়। আমরা আইসিসি-র একটি পূর্ণসদস্যভুক্ত দেশ। আমরা পেশাদারিত্বে বিশ্বাস করি। এ কারণে এখন থেকে আমাদের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের চুক্তি বাধ্যতামূলক। সেক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত যা আইন আছে সেগুলো মেনেই আমরা খেলোয়াড়দের চুক্তি করব।”

তিনটি ধাপে ক্রিকেটাররা দক্ষিণা পাবেন। প্রথম ধাপে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরের পর মোট টাকার ৩০ শতাংশ, প্রথম রাউন্ড শেষ হওয়ার পর ৩০ শতাংশ, বাকি ৪০ শতাংশ সুপার লিগ সম্পন্ন হওয়ার ছ’সপ্তাহের মধ্যে ক্রিকেটারদের বুঝিয়ে দিতে হবে। নয়া আইনে এ বারই প্রথম ক্লাব সমূহের কাছ থেকে মোট খেলোয়াড় মানির ৫০ শতাংশ ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি হিসেবে বিসিবিকে জমা দিতে হবে। বিপিএল’র মতো প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগেও ক্রিকেটারদের ব্যাঙ্ক গ্যারান্টার বিসিবি। প্লেয়ার্স ড্রাফট কমিশনার মাহাবুব আনাম এ বিষয়টি পরিস্কার করেছেন। তিনি বলেন। “খেলোয়াড়দের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রত্যেকটি ক্লাব বিসিবিকে সংরক্ষিত একটি চেক দিতে হবে। যাতে করে প্রেমেন্টগুলো নিশ্চিত হয়। কারণ এখানে বিসিবির দায়দায়িত্ব রয়েছে খেলোয়াড়দের উপরও।”

পাশাপাশি প্লেয়ার বাই চয়েজে এ বার লাভবান হয়েছে ক্লাবগুলো। গত মরসুমে যেখানে সাকিব, তামিমের দল লেজন্ডস অব রূপগঞ্জের বাজেট ছাড়িয়ে গিয়েছিল চার কোটি টাকা, সুপার লিগের অন্য দলগুলোর কেউ তিন কোটি টাকার নীচে দল গঠন করতে পারেনি, গত রবিবার প্লেয়ার্স ড্রাফটে সেখানে সাকিব, তামিমের দল আবাহনী লিমিটেডের বাজেট দাঁড়াচ্ছে দু’কোটি আট লাখ টাকা! সর্বশেষ ক্রিকেট মরসুমে সাকিব, তামিম, মুশফিকুর— এই তিন জনের কেউ আধ কোটি টাকার নীচে বিক্রি হননি। মাশরাফি, মাহামুদুল্লাহদের রোজগারের অঙ্ক ছিল সেখানে ৪০ লাখের কাছাকাছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফরম্যান্সে এ বার যেখানে আইকন ক্রিকেটারদের অনেকের দর ৬০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা, সেখানে আইকন ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের দক্ষিণা নির্ধারিত হয়েছে ৩০ লাখ টাকা।

এই খোলামেলা ভাবে দল-বদলের পরিবর্তে ক্রিকেটাররা ঠিকানা পেয়েছেন প্লেয়ার্স ড্রাফটে, লটারি ভাগ্যে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি নিজেও এই পদ্ধতি সমর্থন করছেন না। তিনি বলেন, “এটা কোন আদর্শ পদ্ধতি হতে পারে না। এ বার অবশ্য এই পদ্ধতিতে দলবদলের পিছনে একটা যুক্তি আছে।” প্লেয়ার্স বাই চয়েজ ফর্মুলায় ক্রিকেটারদের দলবদলের বিপক্ষে সোচ্চার অবস্থান নিয়েও লাভ হয়নি ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন প্রাইম ব্যাঙ্ক ক্রিকেট ক্লাবের। বাংলাদেশে ক্রিকেটারদের সংগঠন ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)-এর রহস্যজনক ভুমিকায় প্রাপ্য সম্মানী থেকে ক্রিকেটাররা বঞ্চিত হয়েছেন বলে মনে করছেন এই ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক এবং বিসিবি পরিচালক তানজিল চৌধুরী। তিনি বলেন, “ঢাকার প্রিমিয়ার লিগে যে দলগুলো আছে, তার মধ্যে প্রাইম ব্যাঙ্কই এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে ছিল। দুর্ভাগ্যজনক, অন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। আমাদের যে প্লেয়ার্স এসোসিয়েশন আছে, তারা কিন্তু এ ব্যাপারে কথা বলতে পারত। কিন্তু তাদের এসোসিয়েশন নীরব ছিল।”

এর পরও প্লেয়ার্স বাই চয়েজ পদ্ধতিতে দলবদল এবং চুক্তির আওতায় ক্রিকেটারদের আনতে পেরে খুশি বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, “নির্দিষ্ট ভাবে কোন দলকেই ভাল বলা যাবে না। ভাল দল গঠন করতে সবাই সমান সুযোগ পেয়েছে। এতে আমি খুশি। বোর্ড থেকে আমারা প্লেয়ার বাই চয়েজ করেছি, খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকের কথা বিবেচনা করে চুক্তি করেছি। সরকার যাতে ট্যাক্স থেকে বঞ্চিত না হয়, সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।” ১২টি দল মিলে প্লেয়ার্স ড্রাফটে দল গঠনে খরচ করবে ১৯ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ১০ শতাংশ হারে আয়কর কর্তন হলে তো প্রায় দু’কোটি টাকা জমা পড়বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে।

BCB club cricketers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy