সম্মানিত: বর্ষসেরার পুরস্কার হাতে আমনা। নিজস্ব চিত্র
ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে প্রদীপ জ্বালিয়ে সকালে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক যখন ৯৯ তম প্রতিষ্ঠা দিবসের সূচনা করছেন তখন আকাশের মুখ ভার।
সন্ধেয় ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে ক্লাবের সম্মানজ্ঞাপন অনুষ্ঠান যখন শুরু হচ্ছে তখন আবার আকাশ ঝলমলে। গায়ক, মন্ত্রী, খেলোয়াড়, গুণীজনদের নিয়ে যেন চাঁদের হাট বসেছে সেখানে। যে সমাবেশের রং লাল-হলুদ। যেখানে ঝরে পড়ছিল আবেগ, সম্মান, শ্রদ্ধা, সৌজন্য, প্রত্যাশা, নস্ট্যালজিয়ার টুকরো টুকরো বিন্দু। এ ভাবেই বুধবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল শতবর্ষ থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে থাকা ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠা দিবস।
যা দেখে ক্লাবের বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তাও বলে দিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কোনও ভুল করিনি আমরা।’’ তার আগেই অবশ্য আসিয়ান কাপ জয়ী দলের সদ্য অকালপ্রয়াত ফুটবলার কুলথুঙ্গনের স্মৃতিতে নীরবতা পালন করে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন সকলে। এর কিছু পরেই পুষ্পস্তবক নিয়ে হাজির প্রতিবেশী চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব মোহনবাগান। যাঁদের কর্তাদের মঞ্চে তুলে এনে ইস্টবেঙ্গল সভাপতি বলে দিলেন, ‘‘আমাদের প্রতিবেশী, দাদা, প্রতিদ্বন্দ্বী, প্রেরণা মোহনবাগানের জন্যও হাততালি দিন। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান না থাকলে বাংলা ফুটবলের বৃত্তটাই সম্পূর্ণ হবে না।’’ হাততালিতে ফেটে পড়ল অনুশীলন কেন্দ্র। আর বর্ষসেরার ট্রফি হাতে মহম্মদ আল আমনা যেই বললেন, ‘‘এই সম্মান ভাল খেলার তাগিদ বাড়াল। পুরস্কারটা স্ত্রীকেই উৎসর্গ করছি।’’ তখন দ্বিগুণ হল শব্দব্রহ্ম।
‘ভারতগৌরব’ সম্মানপ্রাপক গুরবক্স সিংহ ছিলেন না। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তাঁর হয়ে স্মারক এবং দু’লক্ষ টাকার আর্থিক পুরস্কার নেন পুত্র গগনদীপ সিংহ। এক যুগেরও বেশি সময় ক্লাবে আই লিগ ঢোকেনি। সেই ট্রফিটাই ফুটবলারদের কাছে চেয়ে বসলেন লাল-হলুদ শিবিরের জীবনকৃতি পুরস্কার (প্রয়াত ব্যোমকেশ বসু স্মারক সম্মান ও এক লক্ষ টাকা) প্রাপক সুনীল (লাল্টু) ভট্টাচার্য। ইস্টবেঙ্গলের ১৯৭১ সালের অধিনায়ক বলে গেলেন, ‘‘ক্লাব প্রাক্তনদের ভোলে না। আই লিগ এ বার আনতেই হবে। ছেলেদের সেই আশীর্বাদই দিয়ে গেলাম। আবেগ ও বাণিজ্যকরণের মেলবন্ধনে ক্লাব ঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। ব্যোমকেশ বসুর নামাঙ্কিত সম্মান পেয়ে আমি গর্বিত।’’
আর এক জীবনকৃত পুরস্কার (রমেশ সেন স্মারক সম্মান ও এক লক্ষ টাকা) প্রাপক প্রাক্তন ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্তও আবেগমথিত। বললেন, ‘‘জীবনের অধিকাংশ পুরস্কার পেয়েছি এই ক্লাব থেকেই। ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষের প্রাক্কালে এটা আমার শ্রেষ্ঠ সম্মান। প্রাণের ক্লাব সাফল্য পেলে হৃদয়টা জুড়িয়ে যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy