চর্চায়: পাক অধিনায়ক ও কোচ। যে জুটি নিয়েই আলোচনা। ফাইল চিত্র
এশিয়া কাপের সুপার ফোর থেকে পাকিস্তানের বিদায়ের পরে এখন কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে তাদের কোচ মিকি আর্থার এবং অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদকে। পাক প্রচারমাধ্যমের একাংশের বক্তব্য, এই জুটি পাক ক্রিকেটকে ক্রমশ পিছনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার রাতে বাংলাদেশের কাছে হেরে এ বারের মতো এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিয়েছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার টিম হোটেলে গিয়ে দেখা গেল, যারা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজে দলে থাকবেন না, তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন। এই ভাবে হারের ধাক্কায় দারুণ ভাবে বিপর্যস্ত পাক শিবির। ওয়াসিম আক্রমের মতো প্রাক্তনরা তো পরিষ্কার বলে দিচ্ছেন, পাকিস্তানের ক্রিকেটারেরা ভয় পেয়ে মাঠে নামছেন। এর পাশাপাশি খলনায়ক হিসেবে উঠে আসছে আর্থার আর সরফরাজের নাম।
বলা হচ্ছে, কোচ আর্থার স্রেফ নিজের খেয়ালখুশি মতো দল চালাচ্ছেন। এও জানা গেল, জুনেইদ খান থেকে শুরু করে মহম্মদ হাফিজ— এই সব সিনিয়রের দলের বাইরে চলে যাওয়ার পিছনে পাকিস্তান কোচেরই হাত আছে। তিনি চাইছিলেন না বলেই জুনেইদকে এশিয়া কাপের আগের ম্যাচগুলোয় খেলানো হয়নি। আর এ সব ক্ষেত্রে অধিনায়ক সরফরাজ নিছকই পুতুল মাত্র।
এশিয়া কাপে ভারতের কাছে দুটো ম্যাচে বিশ্রী হার। তার ওপর বাংলাদেশের কাছে হেরে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায়। স্বভাবতই তোপের মুখে পড়েছেন সরফরাজ। বুধবার রাতে আবু ধাবিতে সাংবাদিক বৈঠকে এসে কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হল তাঁকে। পাক অধিনায়ককে প্রশ্ন শুনতে হল, আপনি না পারছেন ব্যাটে রান করতে, না পারছেন দলকে অনুপ্রাণিত করতে। এ বার কি তা হলে কিছু দিনের মতো বিশ্রামে যাবেন? প্রশ্নটা শুনেই খেপে গেলেন শান্ত স্বভাবের সরফরাজ। রাগত সুরে বলে উঠলেন, ‘‘আমি ব্যাট করতে পারিনি, কিপিং করতে পারিনি, নেতৃত্ব দিতে পারিনি। ঠিক কথা। আমার জন্যই দল হেরেছে। আপনার উত্তর পেয়ে গেলেন তো?’’ এর পরেই যোগ করেন, ‘‘তবে আমি দলে থাকব কি না, তা নির্ভর করবে নির্বাচকদের উপর। নিজেকে তো আমি বাদ দিতে পারি না।’’
আপাতত বেঁচে গিয়েছেন সরফররাজ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই দুবাইয়েই দুটো টেস্ট খেলবে পাকিস্তান। সে দলের নেতৃত্বে রয়েছেন সরফরাজ। কিন্তু টেস্ট দলে সুযোগ পাননি মহম্মদ আমির। যাঁকে ওয়ান ডে দলে টেনে টেনে খেলানো হচ্ছিল বলে পাক প্রচারমাধ্যমের একাংশের অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত আমিরকে বাদই দিয়ে দেওয়া হল।
অধিনায়কত্বের চাপ আপনার খেলায় কি প্রভাব ফেলেছে? সরফরাজের জবাব, ‘‘দেখুন, পাকিস্তানের অধিনায়ক হলে চাপ তো থাকবেই। আমি যদি বলি, এশিয়া কাপের মধ্যে ছ’দিন আমি ঘুমোতে পারিনি, তা হলে কি কেউ বিশ্বাস করবে? কিন্তু সেটাই ঘটনা। জীবনটা এ রকমই।’’
কিন্তু জুনেইদ কেন এত দিন দলের বাইরে থাকলেন? এই সিদ্ধান্ত কি আপনার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে? সরফরাজ তাড়াতাড়ি জবাব দিলেন, ‘‘না, না, সে সব কিছু নয়। কাউকে ইচ্ছে করে বাইরে রাখা হচ্ছে না। জুনেইদ ভাই দেখিয়ে দিল, যে ও খেলার জন্য তৈরি। সে রকমই হাফিজ ভাই আছে। আরও কেউ কেউ আছে। নিশ্চয়ই সবাই সুযোগ পাবে।’’
সরফরাজ যতই সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করুন না কেন, অনেকেই মনে করেন, কোচ আর্থারের কথাতেই সায় দিয়ে চলেছেন তিনি। নিজের মতামত কোনও ভাবেই খাটাতে পারছেন না। পাক অধিনায়ককে প্রশ্ন করা হয়, সামনে তো বিশ্বকাপ। নির্বাচকেরা নাকি বেশ কিছু ক্রিকেটার বেছে নিয়ে একটা ‘পুল’ বানিয়েছেন। তা হলে এ বার কি সেই তালিকায় কোনও পরিবর্তন হবে? সরফরাজের মন্তব্য, ‘‘আমি আগেও বলেছি, বিশ্বকাপ এখন অনেক দূরে। এর মধ্যে অনেক ক্রিকেটার আসবে, অনেক ক্রিকেটার যাবে। এশিয়া কাপের এই ব্যর্থতা আমাদের ধাক্কা দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু আতঙ্কিত হয়ে পড়লে চলবে না।’’
সরফরাজ বলছেন, আতঙ্কিত হলে চলবে না। কিন্তু গোটা পাকিস্তান যে আতঙ্কিত!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy