Advertisement
E-Paper

থেমে না থাকার শপথ নিয়ে এগিয়ে চলেছেন দেবজিৎ

সুব্রত পালের সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধের আগে তীব্র হুঙ্কার? থিয়েরি অঁরির প্রশংসায় অভিভূত হয়ে উদ্বেলিত প্রতিক্রিয়া? আইএসএল-দুনিয়ায় হইচই ফেলে তৃপ্তির ‘ক্লাউড নাইনে’ বিচরণ?

সোহম দে

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩২

সুব্রত পালের সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধের আগে তীব্র হুঙ্কার?

থিয়েরি অঁরির প্রশংসায় অভিভূত হয়ে উদ্বেলিত প্রতিক্রিয়া?

আইএসএল-দুনিয়ায় হইচই ফেলে তৃপ্তির ‘ক্লাউড নাইনে’ বিচরণ?

দেবজিৎ মজুমদারের কাছ থেকে যদি এ সব আশা করেন, ঠকতে হবে।

রাতারাতি তারকা হয়ে গিয়েছেন। তাঁর বিচ্ছুরণে টিম এখনও মজে। দিল্লি ডায়নামোসের বিরুদ্ধে বঙ্গসন্তানের গোলকিপিং এখনও ভুলতে পারেনি কলকাতা। জোসে মলিনা বলে দিয়েছেন, এত ভাল কিপার খুব কমই আছে। অঁরি পর্যন্ত বঙ্গসন্তানের কিপিং দেখে বলেছেন, তিনি মুগ্ধ। কিন্তু তাঁর নাম তো দেবজিৎ মজুমদার। তারা নয়, মেঘে ঢাকা তারা হয়ে থাকতে যিনি ভালবাসেন!

প্রথমে কথাই বলতে চাইছিলেন না। টিম হোটেলে ঢুকে সটান ঘরে চলে যাচ্ছিলেন। অনেক জোরাজুরির পর কথা বললেন ঠিকই, কিন্তু তাতে যত না নতুন এটিকে তারকাকে পাওয়া গেল, তার চেয়ে বেশি পাওয়া গেল ফুটবলের এক পরিশ্রমী ছাত্রকে। যে কথা নয়, পারফরম্যান্সে বিশ্বাসী। যে তৃপ্ত নয়, নতুন লক্ষ্যে ঝাঁপাতে উদ্যমী।

সুব্রত পালের টিমের বিরুদ্ধে ম্যাচ শুক্রবার। প্রশ্নটা করাও হয়েছিল। কিন্তু সুব্রত বনাম দেবজিৎ যুদ্ধেঢুকলেনই না এটিকে কিপার। উল্টে যেন একটু থতমত খেয়ে গেলেন। বললেন, ‘‘ফুটবল একের বিরুদ্ধে একের খেলা নয়। এগারো বনাম এগারো জনের খেলা। ফুটবলে প্রতিটা প্লেয়ারই গুরুত্বপূর্ণ।’’

হিউম এখনও এটিকের ধারাবাহিক পরিত্রাতা হয়ে উঠতে পারেননি। কিন্তু দেবজিৎ পেরেছেন। তা-ও ন্যূনতম প্রচারে না থেকে। একটার পর একটা সেরা পারফরম্যান্স তুলে আনছেন মাঠে। টিমকে নিশ্চিত হারের মুখ থেকে বাঁচাচ্ছেন। কিন্তু তার পরেও কোন ম্যাচটা এখনও পর্যন্ত সেরা, বলতে পারছেন না। উত্তর দিচ্ছেন, ‘‘আমি এখনও সন্তুষ্ট নই কোনও পারফরম্যান্সে। কারণ সন্তুষ্ট হওয়া মানেই তো সব শেষ। আরও ভাল খেলতে হবে। আরও ভাল করার চেষ্টা করতে হবে।’’ আর অঁরির প্রশংসা? শুনলে ভাল লাগছে। কিন্তু সেটাকেই চূড়ান্ত প্রাপ্তি ধরছেন না বঙ্গসন্তান। প্রাক্তন জাতীয় গোলকিপার সন্দীপ নন্দীর অন্ধ ভক্ত বরং বলছেন, ‘‘প্রশংসা কার না ভাল লাগে? তা-ও আবার অঁরির মতো কারও। কিন্তু আমাকে তো থেমে থাকলে চলবে না।’’

যে ‘থেমে থাকলে চলবে না’ মনোভাবকে তাঁর উত্থানের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ। যেমন এশিয়ার সেরা একাদশে থাকা অতনু ভট্টাচার্য। দেবজিতের কেরিয়ারের শুরু থেকে দেখেছেন। ফোনে বলছিলেন, ‘‘দেবজিৎ যখন আমার অফিস টিমে ছিল তখন থেকেই দেখেছি ওকে। ইস্টবেঙ্গলেও ওর গোলকিপিং কোচ ছিলাম। ওর লড়াকু মানসিকতা আছে। উচ্চতা কম কিন্তু তাতেও ক্ষিপ্র। আউটিংও ভাল।’’ মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেনের আবার মনে হচ্ছে, দেবজিতের ইউএসপি পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাস। ‘‘দেবজিতের উচ্চতা একটা সীমাবদ্ধতা ঠিকই। কিন্তু খাটনি আর আত্মবিশ্বাসে সেটা ও ঢেকে দেয়। অন দ্য লাইন খুবই ভাল,’’ বলছিলেন দেবজিতের ক্লাব কোচ সঞ্জয়। ভারতের অন্যতম সেরা গোলকিপার ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ও বললেন, ‘‘দেবজিতের ডিস্ট্রিবিউশন আর গ্রিপিংটা দারুণ। ও ভবিষ্যতে আরও উন্নতি করবে।’’

পাওয়া গেল আর একজনকেও। এক সময়ের দেবজিতের সতীর্থ, বর্তমানে ইউরোপের ক্লাবে খেলা গুরপ্রীত সিংহ ফেসবুক চ্যাটে বললেন, আইএসএল সে ভাবে দেখেন না। কিন্তু দেবজিৎ কী জিনিস জানেন। দেবজিতের নিজস্ব একটা গোলকিপিং স্টাইল আছে। যা অসম্ভব ভাল লাগে গুরপ্রীতের।

এত কিছু জানেন না দেবজিৎ। বলা হয়নি। কিন্তু জানলে?

নিশ্চিত আর একবার থতমত খেয়ে যেতেন!

Debjit Majumder ISL 2016
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy