Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

রফিকের সমারসল্টে উধাও সেনা ভীতি

গোল খুঁজতে এ বার কি পোকেমন লাগবে? এই বলে হাফটাইমে বারাসত স্টেডিয়ামে মহম্মদ রফিকদের নিয়ে হাসি-মস্করা করছিলেন যাদবপুর থেকে খেলা দেখতে আসা জনা কয়েক আইটি-র চাকুরে লাল-হলুদ সমর্থক।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৫৪
Share: Save:

ইস্টবেঙ্গল-২ : আর্মি একাদশ-১

(রফিক, জিতেন) (অলউইন)

গোল খুঁজতে এ বার কি পোকেমন লাগবে?

এই বলে হাফটাইমে বারাসত স্টেডিয়ামে মহম্মদ রফিকদের নিয়ে হাসি-মস্করা করছিলেন যাদবপুর থেকে খেলা দেখতে আসা জনা কয়েক আইটি-র চাকুরে লাল-হলুদ সমর্থক।

সেই আর্মি একাদশ। গত বার কলকাতা লিগে এই সেনাদের বিরুদ্ধেই তো দু’গোলে পিছিয়ে থেকেও নিজেদের জলকাদার মাঠে স্মরণীয় জয় ইস্টবেঙ্গলের। আর শুক্রবার তাই বিরতিতে ম্যাচ গোল শূন্য থাকায় লাল-হলুদ গ্যালারির প্রশ্ন— এ বারও কী অপেক্ষা করছে রে বাবা!

একটু আগেই করমর্দনের দূরত্বে গোল মিস করা মহম্মদ রফিক ঠিক তখনই মাথা নিচু করে ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন। পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় যাঁকে অবিভক্ত ভারতের সেরা ফুটবলার বলে থাকেন সেই সামাদ সাহেবের নাম-ই নাকি শোনেননি সোদপুরের ছেলে রফিক। তাই জানেন না সামাদের সেই প্রবাদবাক্যে দাঁড়ানো কথা—‘এক শট মে এক হি গোল হোতা হ্যায়। দো নেহি।’ তাই গোলের একেবারে সামনে থেকেও বাড়তি জোরে শট মারতে গিয়ে নষ্ট করেছিলেন অব্যর্থ সুযোগ।

রফিক অবশ্য জানেন ইথিওপিয়ার ফিকরু তেফেরাকে। হাফটাইমের পরেই ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দিয়ে দিলেন তাই পরের পর সমারসল্ট। একদা এটিকে-তে তাঁর সতীর্থের মতো। আর বাড়ি ফেরার আগে বলে গেলেন, ‘‘অনেক দিন ভেবেছি কবে গোল করে ফিকরুর মতো সমারসল্ট দেব। আজ হয়ে গেল।’’ রফিকের কিছু পরেই জিতেনের গোল। উধাও লাল-হলুদের আর্মি-জুজু।

সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন দলের দশ ফুটবলার-পুষ্ট, গত বারের লিগ রানার্স সেনা দলকে হারিয়ে দশ ম্যাচের কলকাতা লিগে তৃতীয় জয় মর্গ্যানের দলের। তা হলে কি হেক্সার পর হেপ্টা লিগ ইস্টবেঙ্গল তাঁবুর দিকে গুটিগুটি এগোচ্ছে? প্রশ্নে লাল-হলুদের সাহেব কোচের গনগনে উত্তর, ‘‘তিন পয়েন্ট নিয়ে ফিরছি। এটাই বড় কথা। তিন-চার গোল দিয়ে হাফটাইমেই স্বস্তিতে ড্রেসিংরুমে ফিরতে পারতাম। কিন্তু আমরাই ওদের ম্যাচে ফিরতে দিয়েছিলাম। ডিফেন্সে এত মনঃসংযোগের অভাব হলে চলবে কী করে?’’

প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের লেফট উইংয়ে অবিনাশ সচল ছিলেন। কিন্তু ক্রস ঠিক মতো বক্সে ফেলা হচ্ছিল না। তাই গোলের মুখ খুলতে পারছিল না ইস্টবেঙ্গল। সেনা দল এই সময় ৪-৫-১ খেলে গোলের মুখ একে তো বন্ধ করেই রেখেছিল, তার উপর লাল-হলুদ ফরোয়ার্ডদের মিস। দ্বিতীয়ার্ধে ডান-বাম দুই উইংয়েই আক্রমণের ঝড় তুলতেই জোড়া গোল রফিক-জিতেনদের।

তবু যে অশনি সঙ্কেত থেকে যাচ্ছে! কয়েক মিনিট বাকি থাকতে যে বল ফিস্ট করতে হবে তা চাপড় মেরে নিজেদের বক্সের ভেতরই ফেললেন ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার ব্যারেটো। সেকেন্ড বলও ক্লিয়ার করতে দেখা গেল না মেহতাবকে। যার থেকে গোল হজম লাল-হলুদের। যার পরে কোচের গজগজানি। যা শুনে বাড়ি ফেরার পথে লাল-হলুদ ল়জেন্স মুখে মর্গ্যানের বিদেশি ডিফেন্ডার ক্যালাম বলে গেলেন, ‘‘সেন্টারটা আমাদের বক্সে উড়ে এল কী ভাবে?’’ তবু রক্ষে আর্মির সেরা ফুটবলার অর্জুন টুডু এ দিন নিজের ছন্দের ধারেকাছে ছিলেন না। চোট-কার্ডের জন্যও প্রথম টিমের কয়েক জনকে পায়নি সেনারা। ফলে মর্গ্যানের রক্ষণকে খুব বেশি কড়া পরীক্ষার সামনে পড়তে হয়নি।

ইস্টবেঙ্গল: লুইস, রাহুল, অর্ণব, ক্যালাম, নারায়ণ (রবার্ট), মেহতাব (বিকাশ), লালরিন্দিকা, রফিক, অবিনাশ, আদিলেজা (ডং), জিতেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata League. East Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE