Advertisement
০৪ মে ২০২৪

আবেগের আঁচে পাশাপাশি ইলিশ-চিংড়ি

লাল-হলুদ বেলুনের তোরণ পেরিয়ে ঢুকে ঘরের ভিতরে লাল-হলুদে মোড়া ছাদ। তবে মেনুতে রয়েছে সর্ষে দিয়ে গলদা চিংড়িও। চতুর্দিকে ইস্টবেঙ্গলের ছোঁয়ার মাঝে পাতে ওই চিংড়ি রাখতে হয়েছে মোহনবাগান সমর্থকদের আবদার মেটাতে।

(বাঁ দিকে) ‘মোহনবাগান স্পেশাল’ ডিশে চিংড়ির পদ। (ডান দিকে) ইলিশ হাতে উল্লাস ইস্টবেঙ্গল সমর্থকের। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

(বাঁ দিকে) ‘মোহনবাগান স্পেশাল’ ডিশে চিংড়ির পদ। (ডান দিকে) ইলিশ হাতে উল্লাস ইস্টবেঙ্গল সমর্থকের। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

অনির্বাণ রায় ও সব্যসাচী ঘোষ
শিলিগুড়ি ও মালবাজার শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২৯
Share: Save:

লাল-হলুদ বেলুনের তোরণ পেরিয়ে ঢুকে ঘরের ভিতরে লাল-হলুদে মোড়া ছাদ। তবে মেনুতে রয়েছে সর্ষে দিয়ে গলদা চিংড়িও। চতুর্দিকে ইস্টবেঙ্গলের ছোঁয়ার মাঝে পাতে ওই চিংড়ি রাখতে হয়েছে মোহনবাগান সমর্থকদের আবদার মেটাতে।

শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম ক্যান্টিনে কিন্তু শনিবার থেকেই ইলিশ-চিংড়ির সহাবস্থান। তবে ইলিশের পাল্লা খানিকটা ভারি। ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা দেবতোষ সান্যাল নিজেও ইস্টবেঙ্গলের কট্টর সমর্থক। তবে মেনুতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের চিংড়ি রাখতেও দ্বিধা করেননি। সহাবস্থানই যেন শিলিগুড়ির ডার্বির থিম।

কাঞ্চনজঙ্ঘায় আজ রবিবার বিকেল সাড়ে চারটেতে ম্যাচের কিক অফ হওয়ার কথা। শনিবার সকাল থেকেই স্টেডিয়াম চত্বর এবং লাগোয়া এলাকায় মেলার মেজাজ। ভুভুজেলা বাঁশি এসেছে ধর্মতলা থেকে। নিউ ব্যারাকপুরে সেলাই করে তৈরি হওয়া কাগজের সঙ্গে কাপড় লাগানো ফেট্টি। জার্সিও হাজির। লাল-হলুদ এবং সবুজ-মেরুন রঙের পতাকা-জার্সি-বাঁশি নিয়ে দক্ষিণবঙ্গ থেকে অন্তত দু’শো হকার এসেছেন শিলিগুড়িতে। এসেছেন হাজারেরও বেশি সমর্থক। শনিবার সকাল থেকে টিকিট বিলি শুরু হতেই হকার-সমর্থক সকলেই ভিড় করেন স্টেডিয়ামের সামনে।

দমদম থেকে আসা শেখর হালদার সুবজ-মেরুন জার্সি-পতাকা নিয়ে এসেছিলেন। বাঁশি-পতাকা কিনতে আসা এক ইস্টবেঙ্গল সমর্থক সবুজ-মেরুন জার্সির দরদাম করে কিনলেন। যা দেখে বিরাটি থেকে আসা তপন আদকের মন্তব্য, ‘‘এমন ঘটনা শিলিগুড়িতেই প্রথম দেখলাম।’’

স্টেডিয়াম ক্যান্টিনের চারপাশ ভুরভুর করছে ইলিশের গন্ধে। দেবতোষবাবুর কথায়, ‘‘জিতব আমরাই। মোহনবাগান সমর্থকরাও ধরেছিল। তাই চিংড়িও হয়েছে।’’

গুজরাত থেকে ইলিশ এসেছে ডুয়ার্সের বাজারে। কয়েকটি রিসর্টে খেলা দেখার ব্যবস্থাও করেছেন কর্তৃপক্ষ। বড় ছাল ছাড়ানো চিংড়ি ৮৫০ টাকা কেজি। একটু ছোট চিংড়ি মিলছে ৬০০ টাকায়। শিলিগুড়ি থেকে ডুয়ার্স ডার্বি জ্বরে ইলিশ-চিংড়ির নানা পদ রান্না হচ্ছে একই হেঁসেলে।

শনিবারই ত্রিপুরা হয়ে মায়ানমার থেকেও এসেছে টাটকা ইলিশ। এক একটি দেড় দুই কেজি ওজনেরও ইলিশ রয়েছে। পাইকারি বাজারে এ দিন ৬০০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।

বাগান সমর্থকদের জন্যও খুশির খবর রয়েছে। শিলিগুড়ির সেবক মোড়ে মোহনবাগানের ফুটবলাররা উঠেছেন, সেখানেই কর্তৃপক্ষ সবুজ মেরুন সমর্থকদের জন্য ‘মোহনবাগান স্পেশাল ডিস’ তৈরি করা হয়েছে। তার মধ্যে থাকছে ‘প্রন ককটেল’, ‘প্রন গারলিক ফ্রাইডরাইস’, প্রন ইন রেড সসের মতো চিংড়ির রেসিপি।

শহরে ইলিশ-চিংড়ির এই সহাবস্থানই ডার্বির মূল সুর। সেই সুর মিলিয়েই আজ সব পথ কাঞ্চনজঙ্ঘায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Derby Match
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE