Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
রাজনীতির হিংসা ফুটবল মাঠে

ভেস্তে গেল ইউরোর লড়াই

অশান্তির আশঙ্কা ছিলই। তাই বেলগ্রেডে সার্বিয়া আর আলবেনিয়ার ইউরো কোয়ালিফায়ারে অ্যাওয়ে সমর্থকদের স্টেডিয়ামে উপস্থিতির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল উয়েফা। তাতেও ঝামেলা এড়ানো গেল কোথায়!

আলবেনিয়ার পতাকা টেনে নামাচ্ছেন সার্বিয়ার ডিফেন্ডার স্তেফান মিত্রোভিচ। ম্যাচে অশান্তির সূত্রপাত এর পরই।

আলবেনিয়ার পতাকা টেনে নামাচ্ছেন সার্বিয়ার ডিফেন্ডার স্তেফান মিত্রোভিচ। ম্যাচে অশান্তির সূত্রপাত এর পরই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:২৯
Share: Save:

অশান্তির আশঙ্কা ছিলই। তাই বেলগ্রেডে সার্বিয়া আর আলবেনিয়ার ইউরো কোয়ালিফায়ারে অ্যাওয়ে সমর্থকদের স্টেডিয়ামে উপস্থিতির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল উয়েফা। তাতেও ঝামেলা এড়ানো গেল কোথায়!

দু’দেশের ফুটবলার, কর্মকর্তাদের মধ্যে হাতাহাতি, প্লেয়ারদের লক্ষ করে দর্শকদের চেয়ার, বোতল ছোড়া, মাঠের মধ্যে ঢুকে সমর্থকদের সটান বিপক্ষের প্লেয়ারকে লাথি, ঘুষি, গ্যালারিতে পুলিশের সঙ্গে দশর্কদের সংঘর্ষ কিছুই বাদ গেল না। অশান্তিতে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটাই ভেস্তে যায়। গোটা ঘটনার তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছে উয়েফা। কিন্তু কী ভাবে হল এই ঘটনা?

ম্যাচ শুরু হওয়ার পর প্রথমে অবশ্য পার্টিজান স্টেডিয়ামের পরিবেশ শান্তই ছিল। প্রধমার্ধের শেষের দিকে ড্রোনের সাহায্যে একটি আলবেনিয়ান পতাকা মাঠে ঢুকে পড়া নিয়েই সমস্যা। ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল রিমোটের সাহায্যে। কসোভো অঞ্চল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক বিবাদ রয়েছে দু’দেশের। কসোভোয় সংখ্যাগুরু আলবেনিয়ানরা স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে আসলেও সার্বিয়া সেটা স্বীকার করে না। এই নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়েছে। পার্টিজান স্টেডিয়ামের মাঠের চলে আসা পতাকাটিতে কসোভোর স্বাধীনতার দাবিকে সমর্থন করে স্থানীয়দের উপর ক্ষমতা দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছিল। যা দেখেই স্টেডিয়ামে অশান্তি ছড়ায়।

সার্বিয়ার এক ডিফেন্ডার প্রথমে পতাকাটি টেনে নামানোর চেষ্টা করেন। আলবেনিয়ার ফুটবলাররা পতাকা বাঁচাতে সার্বিয়ার ডিফেন্ডারকে বাধা দেন। শুরু হয় তকাতর্কি। যা হাতাহাতিতে গড়ায়। দু’পক্ষের প্লেয়ার আর কর্মকতারাও যাতে জড়িয়ে পড়েন। কড়া নিরাপত্তা এড়িয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই মাঠে বেশ কিছু সার্বিয়ান সমর্থকও ঢুকে পড়ে আলবেনিয়ার ফুটবলারদের ঘুষি, লাথি মারতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর আলবেনিয়ার ফুটবলাররা প্রাণ বাঁচাতে টানেলের দিকে দৌড়তে শুরু করেন। গ্যালারি থেকে তাঁদের লক্ষ্য করে তখন বোতল, চেয়ার ছোড়া হচ্ছে। সার্বিয়ার ক’য়েকজন প্লেয়ার অবশ্য তখন আলবেনিয়ার প্লেয়ারদের হামলার হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। দর্শকদের শান্ত হওয়ার অনুরোধও করেন তাঁদের মধ্যে কয়েকজন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। চেলসির সার্বিয়ান ডিফেন্ডার ব্রানিসলাস ইভানোভিচ বলেন, “আমরা আলবেনিয়ার প্লেয়ারদের টানেলের দিকে যাওয়ার প্রত্যেকটা মুহূর্তে বাঁচানোর চেষ্টা করে গিয়েছি।” সার্বিয়া পরে দাবি করে তিন বার তারা ম্যাচ চালু রাখার সুযোগ দিয়েছিল আলবেনিয়ার প্লেয়ারদের কিন্তু তা মানা হয়নি। তাই ৩-০ এই ম্যাচের ফল তাঁদের পক্ষে ঘোষণা করা হোক। আলবেনিয়ার আবার দাবি ওই সময় শারীরিক আর মানসিক দিক থেকে ম্যাচে নামার মতো অবস্থা ছিল না টিমের। গোটা ঘটনার পিছনে আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ভাইয়ের পরিকল্পনা রয়েছে এই অভিযোগে তাঁকে স্টেডিয়ামের ভিআইপি বক্স থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে উয়েফার এক প্রতিনিধি জানান, “যা হয়েছে সবাই দেখেছেন। কার দোষ সে নিয়ে মন্তব্য করব না। আমরা উয়েফাকে রিপোর্ট দেব। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার এ বার উয়েফাই নেবে।”

ছবি: এএফপি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE