Advertisement
E-Paper

ফরোয়ার্ডদের দ্বৈরথ দেখার অপেক্ষায় রয়েছি

ভারতীয় ফুটবলের এই বড় ম্যাচে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল দুই দলের হয়েই খেলেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই জানি, ডার্বির কোনও ভবিষ্যদ্বাণী হয় না। যাবতীয় অঙ্ককে ভুল প্রমাণিত করে কোন দল যে কখন ম্যাচটা বার করে নেবে তা আগাম বোঝা দুঃসাধ্য। 

শ্যাম থাপা

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৫

গত দু’তিন দিন ধরে ক্লাবে, শপিং মলে যেখানেই গিয়েছি, রবিবারের ডার্বিকে ঘিরে দু’টো প্রশ্ন শুনতে হয়েছে পরিচিত ফুটবলপ্রেমীদের কাছ থেকে।

প্রশ্ন এক: ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস কি আই লিগে জোড়া ডার্বি জিতিয়ে খেতাবের স্বপ্ন জিইয়ে রাখতে পারবে?

প্রশ্ন দুই: সবুজ-মেরুন শিবিরে প্রথম কোচ হয়ে এসে খালিদ জামিল কি পারবে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে মোহনবাগান সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে?

ভারতীয় ফুটবলের এই বড় ম্যাচে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল দুই দলের হয়েই খেলেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই জানি, ডার্বির কোনও ভবিষ্যদ্বাণী হয় না। যাবতীয় অঙ্ককে ভুল প্রমাণিত করে কোন দল যে কখন ম্যাচটা বার করে নেবে তা আগাম বোঝা দুঃসাধ্য।

দুঃখের কথা হচ্ছে, আই লিগে মোহনবাগান বা ইস্টবেঙ্গল প্রথম তিনে নেই। ১২ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে ইস্টবেঙ্গল। ১৩ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে মোহনবাগান। আই লিগে ৪০ দিন আগে শেষ ডার্বিতে আজহারউদ্দিন মল্লিকের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলকে জিতিয়েছিল জবি জাস্টিন, লালডানমাউইয়া-রা।

এ বার ম্যাচ জেতার জন্য তাগিদ বেশি থাকতে পারে মোহনবাগানে। তার একটা বড় কারণ যদি হয় আগের ডার্বি না জেতার আক্ষেপ মেটানো, দ্বিতীয় কারণ অবশ্যই খালিদ জামিল। গত মরসুমের শেষে ইস্টবেঙ্গল কোচের পদ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল ওকে। তাই পুরনো দলের বিরুদ্ধে কিছু করে দেখানোর মানসিকতা কাজ করবে খালিদের মধ্যে। ওর রণনীতি হল, রক্ষণ পোক্ত করে আক্রমণে যাওয়া। সবুজ-মেরুন শিবিরে কোচ হয়েই খালিদ রক্ষণে অনেকটা আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে।

আই লিগের দৌড়ে দু’দলই অনেকটা পিছিয়ে। অঙ্কের হিসাবে ইস্টবেঙ্গল সামান্য ভাল জায়গায়। ডার্বিতে লিগ টেবলের পরিস্থিতি যদি মোহনবাগানকে খোলা মনে খেলতে সাহায্য করে, অবাক হব না।

বড় ম্যাচে দুই প্রধানের জার্সি গায়েই গোল করেছি। রবিবারের ম্যাচে আমার কাছে আকর্ষণ দুই দলের তারকাখচিত ফরোয়ার্ড লাইন-আপ।

মোহনবাগানে সনি নর্দে-দিপান্দা ডিকা-হেনরি কিসেক্কার ত্রিভূজ। অন্য দিকে ইস্টবেঙ্গলের ত্রয়ী— জবি জাস্টিন, খাইমে সান্তোস কোলাদো ও টোনি দোভালে।

রবিবার খেলবে সনি। যে এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা গেমমেকার। সনির জন্যই দু’দলের ফরোয়ার্ডদের দ্বৈরথে আমি কিছুটা এগিয়ে রাখছি মোহনবাগানকে। সনির সুস্থ হয়ে ডার্বিতে খেলাটা খালিদের পক্ষে একটা বড় সুবিধা। গত ডার্বিতে চোটের জন্য খেলতে পারেনি সনি। তাই এই ডার্বিতে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে মরিয়া থাকবে ও। জিততে গেলে খালিদ দলের দুই বিদেশি স্ট্রাইকার হেনরি কিসেক্কা ও দিপান্দা ডিকাকে সামনে রেখেই দল সাজাতে হবে। সনিকে রাখুক মাঝমাঠে। এই তিন বিদেশি এক সঙ্গে খেললে হুড়মুড়িয়ে আক্রমণে আসতে পারবে না ইস্টবেঙ্গল। সনিও যেন জনি আকোস্তাদের রক্ষণের সামনে যত বেশি সম্ভব পাস খেলে ডিকা-হেনরিদের সঙ্গে। এতে বিভ্রান্ত হতে পারে জনি আকোস্তাদের রক্ষণ। অন্য দিকে, গত ডার্বিতে খাইমে সান্তোস কোলাদোকে আটকাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে এক সময় লাল কার্ড দেখেছিল মোহনবাগান স্টপার কিংসলে। সেটাই ছিল কোলাদোর প্রথম ম্যাচ। এ বার কিন্তু কয়েক ম্যাচ খেলে কোলাদো ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে নিয়েছে। তাই এ বার লাল-হলুদ শিবিরের এই স্পেনীয় ফুটবলার আরও বিধ্বংসী হবে বলেই আমার ধারণা। দেখার ইচ্ছে রইল, এই চ্যালেঞ্জ কিংসলেরা কী ভাবে সামলায়।

সনিদের আক্রমণ ভাগও ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের সামনে পায়ে বল বেশি রাখতে চাইবে। ওদের লক্ষ্য থাকবে, আলেসান্দ্রোর স্টপার বোরখা গোমেস পেরেস যেন বক্সের আশেপাশে ফাউল করেন। কারণ, ডিকা বা সনি এই জায়গায় সেট-পিস থেকে গোল করতে সিদ্ধহস্ত। জনি আকোস্তাদের এই ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না। রক্ষণকে সহায়তা করতে তাই কাশিম আইদারাকে মাঝমাঠ থেকে আসতে হবে বল কাড়তে। ডার্বি জিততে গেলে আলেসান্দ্রো খেলুক চার ব্যাকের সামনে লালরিনডিকা রালতে ও কাশিমকে রেখে। আক্রমণে দুই প্রান্তে রাখুক লালডানমাউইয়া ও কোলাদোকে। মাঝখানে টোনি দোভালে। তার আগে জবি জাস্টিন। দুই প্রান্ত থেকে বল উড়ে এলে গোলকিপার ও রক্ষণের মাঝে তৈরি হওয়া ফাঁকা জায়গা সমস্যায় ফেলে মোহনবাগান রক্ষণকে। জিততে গেলে ওই জায়গাটাকেই নিশানা বানাক জবিরা।

তবে দু’দলের এত বিশ্লেষণের পরেও ফের বলছি, ডার্বির ভবিয্যদ্বাণী হয় না। ডার্বি জেতায় মানসিকতা। যে দল মানসিকতায় এগিয়ে, জিতবে তারাই। দুই কোচই চাইবে, জিততে না পারলেও ম্যাচটা যেন হারতে না হয়। ম্যাচটা তাই ড্র হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল।

Football I league 2018-19 East Bengal Mohun Bagan Derby
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy