চর্চায়: কমিউনিটি শিল্ড জয়ের পরে পেপ গুয়ার্দিওলা। রবিবার। ছবি: এপি।
বার্সেলোনা, বায়ার্ন মিউনিখের পরে ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে তাঁর অসাধারণ সাফল্যের রহস্য আসলে ব্যর্থ হওয়ার ভয়। জানালেন পেপ গুয়ার্দিওলা। ৪৭ বছরের এই কাতালান কোচের সামনে এখন স্যর আলেক্স ফার্গুসনের রেকর্ড স্পর্শ করার সুযোগ। এ বারও তাঁর ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হলেই টানা দু’বার চ্যাম্পিয়ন হবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে দু’বার ইপিএল জেতানো ফার্গুসনের নজির ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি। যদিও ফার্গুসন ম্যান ইউকে টানা তিন বারও চ্যাম্পিয়ন করেছেন অতীতে। রেকর্ড বই বলছে পেপের পক্ষে কোনও কিছুই করে দেখানো অসম্ভব নয়। তাঁর কোচিংয়ে বার্সেলোনা টানা তিন বার লা লিগা জিতেছে। একই ঘটনা ঘটেছে বুন্দেশলিগায় তাঁর কোচিংয়ে থাকা বায়ার্নের ক্ষেত্রে। ম্যান সিটিও কি সেই পথেই যাচ্ছে না? গুয়ার্দিওলা এমন প্রশ্নে শুধু বলেছেন, ‘‘আমি তৈরি। পুরোপুরি তৈরি। ফুটবলারদেরও উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’’
কিন্তু কেন তিনি বার বার সফল হন? পেপের জবাব, ‘‘ম্যাচ হারার ভয়ই আমাকে আরও ক্ষুধার্ত করে। হারের ওই বিশ্রী অনুভূতিটা আমার একেবারেই পছন্দ নয়। আমি একা কেন। কোনও কোচই হারতে ভালবাসে না। তবে আমার বোধহয় সেই অনুভূতিটা বেশি প্রবল। টিম হারলে নিজেকে দোষী মনে হয়। খুব খারাপ লাগাটা তো আছেই। সেটা হলে ব্যক্তিগত জীবনটাও বিষিয়ে যায়। ফুটবলাররাও বন্ধু থাকে না। তাই যে কোনও ভাবে হার এড়ানোই আমার লক্ষ্য থাকে। তাই অন্যদের চেয়েও আমি বেশি ক্ষুধার্ত।’’
এমনিতে গুয়ার্দিওলাকে যতটা সহজ সরল দেখতে লাগে আদৌ তিনি তেমন নন। তবে দারুণ স্পষ্টবাদী। সততা তাঁর জীবনের অন্যতম অঙ্গ। ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যমের সামনে এসেও যা বার বার পরিষ্কার করে দেন। তাঁর চরিত্রের এমন সব বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে আগামী দিনে মুক্তি পেতে চলা তথ্যচিত্রে। যার বিষয়বস্তু ম্যান সিটির গত মরসুমের সাফল্য এবং সেখানে পেপের ভূমিকা।
এ হেন তথ্যচিত্রেরই একটি অংশ ফাঁস হওয়ায় খানিকটা হলেও জানা যাচ্ছে, সেখানে লিয়োনেল মেসির প্রাক্তন গুরুর ভাবনাগুলো কেমন এবং তা কোন খাতে বয়। ফাঁস হওয়া তথ্যচিত্রের একটা জায়গায় যেমন দেখা গিয়েছে, পেপ তাঁর ফুটবলারদের বলছেন, ‘‘কখনও কখনও তোমরা কেন ভাল খেলো জানো? আমাকে ঘৃণা করো বলে।’’
তথ্যচিত্রের এই অংশ নিয়ে পেপকে প্রশ্ন করা হয় সাংবাদিক সম্মেলনে। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ড্রেসিংরুমে মাথা গরম করে ফেলে মাঝে মাঝে আপনি এ সব বলে ফেলতে পারেন। পরে মাথা ঠান্ডা করে ভাবতে বসলে, অন্য ভাবে তার বিশ্লেষণ করা যায়। আমিও সেটাই করি।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘কখনও কখনও কোনও ফুটবলারকে কাছে টেনে নিতে হয়। ওদের সেরা পারফম্যান্সের সময় আরও বেশি করে সঙ্গ দিতে হয়। আসলে এটা নির্ভর করে সেই ফুটবলারের মানসিক গঠনের উপর। কেউ কেউ আবার এ সব পছন্দ করে না। আসলে সবাই এক নয়। তাই মেলামেশাগুলোও নানা ভাবে আমাকে করতে হয়।’’ পেপ মনে করেন, ফুটবলারের সঙ্গে এক জন ম্যানেজারের সম্পর্কটাই শেষ কথা নয়। ‘‘কেউ কেউ আমি বেশি চেঁচালে রেগে যায়। বা আমার সিদ্ধান্ত অপছন্দ হলে। আর তার পরেই দেখি সে দারুণ খেলে দিচ্ছে। আমার কাছে সেটা তো ভালই ব্যাপার।’’
পেপকে প্রশ্ন করা হয়, কেন রাহিম স্টার্লিং ম্যান সিটির সঙ্গে নতুন চুক্তিতে সই করলেন না? ম্যান সিটি ম্যানেজার ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দিতে চান না। চুক্তি, এজেন্টের ভুমিকা ইত্যাদি প্রসঙ্গ সরিয়ে রেখে তাঁর কথা, ‘‘আমি ওকে চাই। যে দিন থেকে এখানে দায়িত্ব নিয়েছি সে দিন থেকেই চাই। শুধু আমি না, ডিরেক্টরদের থেকে শুরু করে ফুটবলাররাও ওকে পছন্দ করে। এটাই রাহিম সম্পর্কে আমার একমাত্র বক্তব্য।’’ পেপ মুখ খুলেছেন লেরয় সানে প্রসঙ্গেও, ‘‘জার্মানির দলে সুযোগ না পেয়ে ও খুবই হতাশ হয়ে পড়েছিল। আসলে ওকে বুঝতে হবে জীবনটা বেশ জটিল। দু’মাস আগের দুঃখ আর ক্ষোভটার জবাব ওকে মাঠেই দিতে হবে। তা হলেই সানে ভাল খেলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy