চড়ছে উত্তাপ। না ভোট বাজারে নির্বাচনী উত্তাপের কথা বলা হচ্ছে না। এ হল ডার্বি উত্তাপ। আইলিগের ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বিতে লাল-হলুদের ‘হোম গ্রাউন্ড’ হওয়ার কথা কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের। এখন ওই মাঠের পরিচর্যা চলছে জোর কদমে। নতুন চেয়ার পাতার কাজ চলছে গ্যালারির ভিভিআইপি ব্লকে। ঢেলে সাজা হচ্ছে ফুটবলারদের ড্রেসিংরুম। এর মধ্যেই সনি, কাতসুমিদের সঙ্গে মেন্ডি, র্যান্টি মার্টিন্সদের দ্বৈরথ দেখতে টিকিটের জন্য শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তাদের কাছে ঘন ঘন ফোন আসছে মালদহ, জলপাইগুড়ি-সহ নানা জায়গা থেকে। কেউ চাইছেন পাঁচশো, আবার কারও দাবি হাজার টিকিটের। এতে ফাঁপড়ে পড়েছেন ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তারা। কারণ ডার্বির আয়োজক ইস্টবেঙ্গল হওয়ায় টিকিটের বিষয়টি তাঁদের হাতে নেই বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
প্রস্তুতি দেখতে আগামী ১৭ মার্চ শিলিগুড়িতে আসছেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, এবং অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের প্রতিনিধিরা। ২ এপ্রিলের ম্যাচ কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে হওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে তার পরেই। ম্যাচের মোট টিকিটের অর্ধেক নেবে মোহনবাগান। বাকি ইস্টবেঙ্গল তথা আয়োজক দল। ইতিমধ্যেই ইস্টবেঙ্গলের কর্মকর্তাদের কাছে শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপ রতন ঘোষ টিকিটের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের ভাগ্য কতটা শিকে ছিঁড়বে তা নিয়ে ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তারা অন্ধকারেই। টিকিটের জন্য আরও বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে ভোটের বাজার গরম হওয়ায়। শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপবাবু তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতিও। ভোটের বাজারে চেনা-পরিচিতদের টিকিট না-দিতে পারলে রোষের শিকার হবেন ভেবে কালঘাম ছুটছে তাঁর। কিছু উৎসাহী টিকিট কিনে নিতেও রাজি। কিন্তু সেটাও না দিতে পারলে বিপত্তি ঘটবে। অরূপবাবু নিজেই বলেন, ‘‘টিকিট না পেলে সমস্যা তো হবেই।’’
আইলিগের ওই ম্যাচের আয়োজনে শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ এবং স্টেডিয়াম কমিটি সমস্ত রকম সাহায্য করছে ইস্টবেঙ্গলকে। পুলিশকে ইতিমধ্যেই ইস্টবেঙ্গলের তরফে চিঠিও পাঠানো হয়েছে ম্যাচের দিন প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নিতে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফে অরূণাভ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘১৭ মার্চ মাঠ এবং অন্যান্য প্রস্তুতির বিষয়টি দেখার পরই ওই মাঠে খেলার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। তার পরেই টিকিটের বিষয়টি নিয়ে ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।’’ ওই দিনই ফের টিকিটের বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চান অরূপবাবু। তিনি জানান, কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ৩০ হাজার দর্শক বসতে পারেন। এই ধরনের বড় ম্যাচের আয়োজনে যাতে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি না হয় সে জন্য ২৫ হাজার দর্শকের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। ক্রীড়া পরিষদের তরফে ইস্টবেঙ্গলের কর্মকর্তাদের কাছে সাড়ে বারো হাজার টিকিট চাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে কোনও আশ্বাস না মেলায় প্রয়োজনে মোহনবাগান দলের কাছেও টিকিট চাওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা।
ক্রীড়া পরিষদ এবং স্টেডিয়াম কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ভিভিআইপি গ্যালারিতে বসার চেয়ার রয়েছে ৫৩০টি। তার দু’দিকের প্রতিটি ভিআইপি গ্যালারিতে আড়াই হাজার করে পাঁচ হাজার দর্শকাসন রয়েছে। মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের তরফে ভিভিআইপি আসনের টিকিট ৩০০ টাকা, ভিআইপি গ্যালারির টিকিট ২০০ টাকা এবং সাধারণ গ্যালারির টিকিট ১০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ইস্টবেঙ্গল দলের কর্মকর্তারা দাম চূড়ান্ত করবেন বলে জানা গিয়েছে।
মালদহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ শান্তনু সাহা বলেন, ‘‘টিকিটের জন্য জেলার বাসিন্দারা অনেকেই যোগাযোগ করছেন। সে কারণেই শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সচিবের কাছে এক হাজার টিকিটের চাহিদার কথা জানিয়েছি।’’ জলপাইগুড়িতে ইস্টবেঙ্গল ফ্যানস ক্লাব বা শিলিগুড়ির মোহনবাগান ফ্যানস ক্লাবের কর্মকর্তারা অবশ্য দলের কাছ থেকেই টিকিট পাবেন বলে জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy