Advertisement
E-Paper

ঐতিহাসিক জয়ে পাকিস্তানকে আরও চাপে ফেলে দিল বাংলাদেশ

বাংলাদেশকে টেস্ট স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য এক সময় অনেক কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল তখনকার আইসিসি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়াকে। জীবদ্দশাতেই ডালমিয়া দেখে গিয়েছেন সেই কটাক্ষগুলো কী ভাবে মালা হয়ে তাঁর দিকে ধেয়ে এসেছে। পাঁচ মাস আগে মারা না গেলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের আরও একটা ঐতিহাসিক দিন দেখা সম্ভব ছিল তাঁর পক্ষে। যখন মীরপুর মাঠে গত বারের এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে তারা ২৩ রানে হারিয়ে দিল।

গৌতম ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৪:২২
মীরপুরে মারমুখী সাব্বির রহমান। রবিবার। ছবি: এএফপি

মীরপুরে মারমুখী সাব্বির রহমান। রবিবার। ছবি: এএফপি

বাংলাদেশকে টেস্ট স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য এক সময় অনেক কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল তখনকার আইসিসি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়াকে।

জীবদ্দশাতেই ডালমিয়া দেখে গিয়েছেন সেই কটাক্ষগুলো কী ভাবে মালা হয়ে তাঁর দিকে ধেয়ে এসেছে। পাঁচ মাস আগে মারা না গেলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের আরও একটা ঐতিহাসিক দিন দেখা সম্ভব ছিল তাঁর পক্ষে। যখন মীরপুর মাঠে গত বারের এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে তারা ২৩ রানে হারিয়ে দিল। ঐতিহাসিক জয় তো নিশ্চয়ই। তারও আগে ফর্ম বিচারে বিরাট অঘটন। উইম্বলডনের শীর্ষ বাছাইয়ের সেকেন্ড রাউন্ডে হেরে যাওয়ার মতো ঘটনা!

ওয়ান ডে-তে মাশরফি মর্তুজার টিমের যে খ্যাতি তার পঞ্চাশ শতাংশও টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে নেই। সে দিনও বাংলাদেশ বোর্ড প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন টিভিতে বলছিলেন, ‘‘আমরা কিছু হার্ড হিটার মিডল অর্ডারে অবিরাম খুঁজছি। ওটা না পেলে আমাদের টি-টোয়েন্টি টিমটা তেমন ভাল দাঁড়াচ্ছে না। কে জানত পাঁচ দিনের মধ্যেই সেই দানা বাঁধিয়ে দেওয়ার কাজটা করে দেবেন সাব্বির রহমান। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘বিরাট কোহলি’ হয়েই এ দিন দেখা দিয়েছিলেন সাব্বির। মাত্র ২ রানে ২ উইকেট চলে যাওয়ার পর ৫৪ বলে তাঁর ৮০ দেখে যদি অকৃত্রিম ক্রিকেটভক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে ফোন করেন, আশ্চর্য হওয়ার নেই। এই একটা ম্যাচ জয় আর এই ইনিংস বাংলাদেশের এক রাত্তিরে মান বাড়িয়ে দিয়েছে।

সাব্বিরকে দারুণ সহায়তা করলেন সাকিব-আল-হাসান। ব্যাটিং অর্ডারে কোচ হাতুরাসিংঘে তাঁকে কেন এত নীচে নামিয়ে দিয়েছেন, কে জানে। সাকিবের (৩২) বড় ম্যাচ সেন্সই আলাদা। সাব্বিরের সঙ্গে এই ৮২ রানের পার্টনারশিপটা সাকিব ছাড়া হয় না। শ্রীলঙ্কা আজ মালিঙ্গাকে খেলাতে পারেনি। কিন্তু তাঁর ভয়েই হয়তো বাংলাদেশ কালকের দ্রুতগামী পিচ এই ম্যাচের জন্য বাছেনি।

এমন পিচে ১৪৭ রান পুঁজি নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে হারানো সহজ ক্যাচ নয়। কিন্তু দুর্দান্ত স্পিরিট দেখাল বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার প্রথম ম্যাচের মতো আজও সহজ স্লিপ ক্যাচ ছাড়লেন। তার পর আউটফিল্ডে শরীর ছুড়ে যে ক্যাচটা নিলেন, তা সুপারম্যানই নিতে পারে। অদ্যাবধি এশিয়া কাপের সেরা ম্যাচ।

পেস-নির্ভর বোলিং আর ওই দর্শক সমর্থন! শ্রীলঙ্কা যত না ক্রিকেটে হারল তার চেয়ে বেশি বোধহয় স্নায়ুচাপে গেল। একটা সময় তারা তরতরিয়ে এগোচ্ছে দ্বিতীয় উইকেট পার্টনারশিপে। মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ৭৬ তুলে ফেলেছে। মাশরফি স্লিপ সরিয়ে নিয়েছেন। দর্শক নিস্পন্দ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাতেও অফুরান স্পিরিট দেখাল গোটা বাংলাদেশ টিম। ৭৬-১ থেকে শ্রীলঙ্কাকে তারা শেষ পর্যন্ত ১২৫-ও পেরোতে দিল না।

তিন ম্যাচের দু’টোতে জিতে তারা এখন ভারতের সমান পয়েন্ট— ২। পাকিস্তানের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। রোববারে তাদের জয়টা ইতিহাস তো নিশ্চয়ই কিন্তু তার চেয়েও বড় যেন তাদের এখনকার ক্রিকেটের দৃপ্ত ভঙ্গিটা।

আমরা শুধু আজকের ইতিহাসের জন্য খেলছি না। আরও দেব। ভরিয়ে দেব।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ২০ ওভারে ১৪৭-৭ (সাব্বির ৮০, সাকিব ৩২)।
শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে ১২৪-৮ (আল-আমিন ৩-৩৪, সাকিব ২-২১)।

asiacup bangladesh pakistan srilanka india MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy