Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বিরাট-মূর্তি ইকো পার্কে

এই বিরাট রক্তমাংসের নন। ছয় ফুট নয় ইঞ্চির মূর্তি। যা এঁটেল মাটি আর ফাইবার দিয়ে নিপুণ হাতে তৈরি করে ফেলেছেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী মিন্টু পাল।

প্রতিকৃতি: কুমোরটুলিতে অধিনায়ক কোহালির মূর্তি গড়ায় মগ্ন মৃৎশিল্পী মিন্টু পাল। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

প্রতিকৃতি: কুমোরটুলিতে অধিনায়ক কোহালির মূর্তি গড়ায় মগ্ন মৃৎশিল্পী মিন্টু পাল। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৯ ০৪:৪৪
Share: Save:

উত্তর কলকাতায় ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি, ট্রাউজার পরে প্রস্তুত বিরাট কোহালি! ৫ জুন সাউদাম্পটনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম ম্যাচের আগেই তিনি হাজির হচ্ছেন ইকো পার্কে!

এই বিরাট রক্তমাংসের নন। ছয় ফুট নয় ইঞ্চির মূর্তি। যা এঁটেল মাটি আর ফাইবার দিয়ে নিপুণ হাতে তৈরি করে ফেলেছেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী মিন্টু পাল। যে বিরাট-মূর্তির বাঁ হাতে ধরা হেলমেট। ডান হাতে ব্যাট। ঠিক যে ভাবে শতরানের পরে ক্রিজে উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করেন ভারত অধিনায়ক। বাদ যায়নি বিরাটের পেশিবহুল হাত ও সেই হাতের ট্যাটুও।

২৪ ঘণ্টা পরেই ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়ে যাবে বিশ্বকাপ। ইতিমধ্যেই ক্রিকেট ভাইরাসে আক্রান্ত শহর। এই আবহেই কুমোরটুলিতে নিজের স্টুডিয়োতে ভারত অধিনায়কের মূর্তি গড়ে ফেলেছেন মিন্টুবাবু। ৯৯ শতাংশ কাজ সারা হয়ে গিয়েছে। বুধবারই এই বিরাট-মূর্তি চলে যাচ্ছে ইকো পার্কে।

মঙ্গলবার বিকেলে মিন্টুবাবুর স্টুডিয়োতে হাজির হতে দেখা গেল তিনি শেষ মুহূর্তের কাজ সারতে ব্যস্ত। আসল বিরাট যখন কার্ডিফের মাঠে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাট করছেন, তখন মিন্টুবাবু যত্ন সহকারে ভারতীয় দলের জার্সি-ট্রাউজার-সহ অন্য সরঞ্জাম পরাচ্ছেন বিরাটের মূর্তিতে। কাজ করতে করতেই বললেন, ‘‘বাড়িতে আমি ও আমার দুই মেয়ে রিমা ও রিয়া বিরাট কোহালির ভক্ত। ছেলেটার মনঃসংযোগ ও জেতার জন্য আগ্রাসী মেজাজটা দারুণ লাগে।’’

মিন্টুবাবু এর আগে মোহনবাগানের ১৯১১ সালের অমর একাদশের মূর্তি গড়ে বিখ্যাত হয়েছিলেন। ক্রীড়াপ্রেমী এই মৃৎশিল্পী অতীতে খবরের শিরোনামে এসেছেন, নেমার, পেলে ও মারাদোনার মূর্তি তৈরি করে।

এ বার বিশ্বকাপের ভরা বাজারে ভারত অধিনায়কের মূর্তি তৈরির কারণ কী? বছর কয়েক আগে দেশপ্রিয় পার্কের সেই বিখ্যাত ৮৮ ফুট দূর্গা মূর্তির কারিগর মিন্টুবাবু বলেন, ‘‘বিরাট কোহালি এই বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান। ক্লায়েন্ট তাই বিরাটের মূর্তিই চেয়েছে। প্রস্তাব আসতেই বসে গিয়েছি নির্মাণে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘দু’সপ্তাহ আগে প্রথম ফোন আসে একটি সংস্থার কাছ থেকে। তারাই এই মূর্তি বানাতে বলেন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। ’’

১৫ দিনে কী ভাবে তৈরি করেছেন ফাইবারের এই বিরাট মূর্তি তার ফিরিস্তিও দিলেন মিন্টুবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমে বিরাটের ছবি জোগাড় করে মুখ আঁকতে হয়েছে। এর পরে কাঠামো তৈরি করে ক্লে-ওয়ার্ক। যেখানে এঁটেল মাটি দিয়ে বিরাটের মুখমণ্ডল বানিয়ে ছবির সঙ্গে মেলানোর কাজ। তার পরে ফাইবার দিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ এগিয়েছে।’’

ভারত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল বা ফাইনালে গেলে বিরাটের এই মূর্তি দেখে আরও অর্ডার যদি আসে? প্রশ্ন শুনে হাসেন মিন্টুবাবু। বলেন, ‘‘হাত তৈরি করে ফেলেছি। ভারত ফাইনালে গেলে তখন বিরাটের ঝটিকা রান তোলার মতোই এক দিনেই এ রকম মূর্তি বানিয়ে দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE