চিরকালীন: লর্ডসের ব্যালকনিতে বিশ্বকাপ হাতে কপিল। ফাইল চিত্র
এই ভারতীয় দলটার দক্ষতা আছে ইংল্যান্ডের মাটি থেকে বিশ্বকাপ জিতে ফেরার। আমি আশা করব, পুরো প্রতিযোগিতায় ভারতের ১৫ জন ক্রিকেটারই ফিট এবং সুস্থ থাকবে। যাতে টিম ম্যানেজমেন্টকে কোনও অবস্থাতেই চোট বা অসুস্থতা নিয়ে কোনও সমস্যায় পড়তে না হয়। বিশ্বকাপের প্রতিটা ম্যাচের আগে ১৫ জন ক্রিকেটারকেই যেন ফিট অবস্থায় পাওয়া যায়।
আর একটা ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে ভারতকে। সেটা হল, কোনও এক জনের উপরে যেন নির্ভরশীল হয়ে না পড়ে দল। ওদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, ভারতের পুরো দলই যেন কোনও না কোনও ভাবে অবদান রাখে প্রতিটা ম্যাচে। আর ভারত একটা দলগত পারফরম্যান্স উপহার দেয়। ব্যক্তির আগে দলকে রাখতে হবে। দলগত লড়াই লড়তে পারলেই ভারত নিজের পুরো ক্ষমতা অনুযায়ী খেলতে পারবে।
ভারতের একটা জিনিস খুব ভাল লাগছে। যে ভাবে ভারতীয় বোলিং বিভাগ প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করে চলেছে, সেটা কিন্তু সত্যিই চমকপ্রদ। আর সে কারণেই বিপক্ষ দলগুলো সমীহ করছে ভারতীয় বোলারদের। আমার মনে হয়, হার্দিক পাণ্ড্যকে দিয়ে অধিনায়ক অনায়াসে প্রতি ম্যাচে ১০টি ওভার বল করাতে পারে। ওর উইকেট নেওয়ার দক্ষতাটা মাথায় রাখতে হবে। পাশাপাশি হার্দিক যদি ব্যাট হাতে ওর স্বাভাবিক খেলাটা খেলে, তা হলে কিন্তু বিশ্বকাপ অভিযানে ও ভারতের বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।
আমাকে অনেকেই বলেছে, ইংল্যান্ডে এর আগে বেশি খেলেনি কুলদীপ যাদব আর যুজবেন্দ্র চহাল। ওদের এই অনভিজ্ঞতা কি সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে? এই প্রশ্নে আমার একটাই জবাব। প্রতিটা দলেই কোনও না কোনও ক্রিকেটার আছে, যাদের ইংল্যান্ডে খেলার সে রকম অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু গত দু’বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দাপিয়ে বেড়িয়েছে। কুলদীপ, চহালকে বিশ্বাস করতে হবে, বিশ্বকাপে ওরা ভাল করতে পারবে।
এ বার ভারতের ব্যাটিংয়ের কথায় আসি। দুই ওপেনার দীর্ঘদিন ধরে ভাল করে আসছে। আশা করব, রোহিত শর্মা এবং শিখর ধওয়ন বিশ্বকাপেও ওদের ছন্দটা ধরে রাখতে পারবে। তিন নম্বরে নামা বিরাট কোহালি ওর অনিন্দ্যসুন্দর ব্যাটিং দেখাতে তৈরি আছে। পাশাপাশি ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের তৈরি থাকতে হবে পরিবেশ, পরিস্থিতি এবং প্রতিপক্ষ অনুযায়ী নিজেদের খেলার ধরন পাল্টাতে। ওদের সবাইকে তৈরি থাকতে হবে ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী যে কোনও জায়গায় ব্যাট করার জন্য।
আরও একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। যে উইকেটে জমে যাবে, তাকেই শেষ ওভার পর্যন্ত খেলতে হবে। না হলে নতুন ব্যাটসম্যানকে নেমে একই সঙ্গে ধাতস্ত হতে হবে আবার দ্রুত গতিতে রানও তুলতে হবে। সেটা কিন্তু ঝুঁকির হয়ে যাবে। ভারতের উপরের দিককার ব্যাটসম্যানরা সবাই জানে, তাদের কী করতে হবে। প্রত্যেক ক্রিকেটারকে দলের স্বার্থ মাথায় রেখে খেলতে হবে।
বিশ্বকাপের দলগুলোর শক্তি-দুর্বলতার কথা মাথায় রেখে তিন সেমিফাইনালিস্টকে বেছে নেওয়াই যায়। ভারত তো থাকবেই। ইংল্যান্ডকেও রাখতে হবে। একে তো ওদের ঘরের মাঠে খেলা। তার উপরে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে ইংল্যান্ড ওদের ওয়ান ডে দলের খোলনলচে পাল্টে ফেলেছে। আর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দারুণ খেলে চলেছে। আমার তিন নম্বর পছন্দ হল অস্ট্রেলিয়া। চার নম্বর জায়গাটার জন্য কিন্তু অনেক দলই আছে যারা লড়াই করবে। সেই ১৯৯২ সালের পরে আবার বিশ্বকাপের লিগ পর্বে সব দল সবার সঙ্গে খেলবে। ইংল্যান্ডে খেলা বলে এটা একেবারে আদর্শ ফর্ম্যাট। ওখানে যে কোনও মুহূর্তে আবহাওয়া পাল্টে যায়। বৃষ্টি এসে ম্যাচ ভেস্তে দিতে পারে। অতীতে এমন অনেক উদাহরণ আছে যেখানে এই ভাবে ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ার কারণে একটা, দুটো ভাল দলকে ছিটকে যেতে হয়েছে। আবার কখনও দেখা গিয়েছে, তথাকথিত ছোট দলের কাছে একটা ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হয়ে গিয়েছে কোনও বড় দলের। এ বার কিন্তু এ রকম ঘটনা ঘটলেও দলগুলোর সামনে সুযোগ থাকবে ফিরে আসার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy