সুনীল। তুর্কমেনিস্তানে গোল পেলেন না।
তুর্কমেনিস্তান-২ (গুয়াঙ্ক, আমানভ)
ভারত-১ (জেজে)
চার ম্যাচ পরেও প্রাক বিশ্বকাপে গ্রুপের লাস্ট বয় হয়েই থাকল ভারত। ঝুলিতে এক পয়েন্টও নেই!
বৃহস্পতিবার অ্যাওয়ে ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের কাছে হারের পর সুনীল ছেত্রীদের পরের রাউন্ডে পৌঁছনো আশা সরকারি ভাবে শেষ হয়ে গেল।
দ্বিতীয় রাউন্ডে টানা চার ম্যাচে হারল স্টিভন কনস্ট্যানটাইনের ভারত। ভারতীয় ফুটবলের এ হেন লজ্জাজনক পরিস্থিতির জন্য ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন সুনীলদের ব্রিটিশ কোচকেই। এমনকী ভারতীয় ফুটবল মহলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, কনস্ট্যানটাইন মোটা অঙ্কের বেতন নিলেও দায়সারা ভাবে নিজের কাজ করছেন। অভিযোগ, ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি নিয়ে সাহেব কোচের এতটুকু মাথাব্যথা নেই!
এর পাশাপাশি আবার প্রশ্ন উঠেছে, যে কোচ মাঠে নামার আগেই বলে দেন, ‘‘তুর্কমেনিস্তানের মতো টিমের বিরুদ্ধেও জয় পাওয়া কঠিন ব্যাপার,’’ সেই কোচের দল জেতার মোটিভেশন পাবে কোথ্বেকে? প্রশ্ন উঠেছে, হয়তো নিজের টিমের দুরবস্থার কথা ভাল করে জানেন বলেই আগে থেকে অজুহাত তৈরি করে রেখেছিলেন কনস্ট্যানটাইন। শুধু জাতীয় দলের কোচই নন, ফেডারেশনের দিকেও আঙ্গুল তুলছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ। তাঁদের দাবি, আইএসএলের মতো মশলা টুর্নামেন্টকে এই মুহূর্তে প্রাক বিশ্বকাপের থেকেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এআইএফএফে। সে জন্য তুর্কমেনিস্তান এবং ওমানের বিরুদ্ধে পরপর দু’টো ম্যাচ খেলতে যাওয়ার আগে জাতীয় দলের কোনও শিবিরই হয়নি। মাত্র দু’দিনের অনুশীলনে এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন অর্ণব-প্রীতমরা।
যে-হেতু ফেডারেশনের স্পনসর যারা, তারাই আইএসএলের মূল সংগঠক, সে জন্য এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ ফেডারেশন কর্তাদের। এমনকী মাত্র আড়াই মাসের টুর্নামেন্টের জন্য অনেক বেশি টাকা পাচ্ছেন বলে ফুটবলাররাও আইএসএল খেলার জন্য এই মুহূর্তে বেশি আগ্রহী। সব মিলিয়ে আরও একটা অসম্মানের হারের বোঝা ঘাড়ে নিয়েই এর পরে ওমানে খেলতে যাবে স্টিভনের ভারত।
এ দিন ম্যাচের একেবারে শুরুতে গুয়াঙ্কের গোলে পিছিয়ে পড়ে ভারত। তবে বিরতির আগেই দুরন্ত গোল করে সমতা ফেরান জেজে। দ্বিতীয়ার্ধে আমানভের গোলে ফের ২-১ করে তুর্কমেনিস্তান। ম্যাচের শেষের দিকে ভারত অবশ্য গোল শোধের একটা সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন রবিন সিংহ।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তুর্কমেনিস্তান বারো ধাপ এগিয়ে রয়েছে ভারতের থেকে। ঘরের মাঠে তারা ইরানের মতো টিমকে আটকে দিয়েছে। তবু একটা আশা ছিল, নিজেদের আত্মসম্মানের জন্য অন্তত এক পয়েন্টের জন্য লড়বেন অর্ণব-সন্দেশ-রবিনরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য খালি হাতেই ফিরতে হল ভারতকে। প্রাক বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে নেপালের মতো তুলনামূলক দুর্বল টিমকে হারিয়ে কনস্ট্যানটাইন বলেছিলেন, ‘‘দ্বিতীয় রাউন্ডে আরও ভাল পারফরম্যান্স করবে ভারত।’’ ভাল পারফরম্যান্সের নমুনা চার ম্যাচেই হাতেনাতে পাওয়া গিয়েছে।
আসলে ভারতের চেয়ে তুলনামূলক শক্তিশালী টিমগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে জেতার জন্য যে মানসিক জোর প্রয়োজন, সেটাই গড়ে তুলতে পারেননি সুনীলদের ব্রিটিশ কোচ। তা হলে আর তাঁকে এত টাকা দিয়ে পুষে লাভ কী? কোনও পয়েন্ট পাওয়াই তো ভুলে গিয়েছে স্টিভনের আমলে ভারতের জাতীয় ফুটবল দল!
ভারত: গুরপ্রীত, প্রীতম, সন্দেশ, অর্ণব, নারায়ণ (লালচুয়ান), ফ্রান্সিস (জাইরু), লিংডো, শেহনাজ (রোউইলসন), রবিন, জেজে, সুনীল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy