চর্চায়: ওয়েস্ট ইন্ডিজে শুক্রবার প্রথম ম্যাচে রান নেই যুবির। ফাইল চিত্র
পোর্ট অব স্পেনের বৃষ্টির মধ্যেও চলছে তাঁকে নিয়ে চর্চা। তিনি মানে যুবরাজ সিংহ। ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যিনি তিনশো ওয়ান ডে ম্যাচ খেলার মাইলস্টোন পেরিয়েছিলেন। আজ, রবিবার ভারতের জন্য ঐতিহাসিক পোর্ট অব স্পেনের মাঠেই দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচ। সেখানে বৃষ্টি নিয়ে ভয় থাকার মধ্যেই নজরে যুবরাজের ফর্ম।
শুক্রবার প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির জন্য ভেস্তে যায় ভারত ৩৯.২ ওভার ব্যাট করার পর। শিখর ধবনের ৮৭ এবং অজিঙ্ক রাহানের ৬২ রানের দৌলতে ভারতীয় দল ১৯৯-৩ তুলেছিল। কিন্তু তার মধ্যেই একমাত্র ব্যর্থ ব্যাটসম্যান ছিলেন যুবরাজ। মাত্র ৪ রান করে তাঁর ফিরে যাওয়া অধিনায়ক কোহালিকে নিদ্রাহীন রাত উপহার দিতে পারে।
অধিনায়ক হিসেবে কোহালি বলেই দিয়েছেন, তাঁর মূল দল মোটামুটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। যার অর্থ খুব স্পষ্ট— ২০১৯ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে তিনি ধোনি, যুবরাজদের মতো সিনিয়রদের উপরেই আস্থা রাখছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে যেমন অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন, তেমনই দু’বছর পরে ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপের জন্যও একই নীতি নিতে চান। খুব খারাপ না খেললে ধোনি বা যুবিকে তিনি বাদ দিয়ে দল গড়তে চাইবেন না।
ঘটনা হচ্ছে, অধিনায়কের এই নীতিকে ধরে রাখতে গেলে ধোনি বা যুবিকে ভাল ফর্মও দেখাতে হবে। এই মুহূর্তে ধোনিকে নিয়ে আওয়াজ অতটা জোরাল হয়ে পরেনি। তবে যুবিকে নিয়ে প্রশ্ন ক্রমশ বেড়ে চলেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছিলেন যুবি। তাঁর ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরি ভারতকে ম্যাচ জিততে সাহায্য করেছিল। কিন্তু তার পর থেকে খুব একটা কিছু করেননি তিনি। বরং ফাইনালে চাপের মুখে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর এবং ধোনির ব্যর্থতা নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেই প্রথম ম্যাচের পর যুবরাজের ওয়ান ডে স্কোর যথাক্রমে এ রকম: ৭ (বনাম শ্রীলঙ্কা), ২৩ নট আউট (বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা), ২২ (বনাম পাকিস্তান) এবং ৪ (বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শুক্রবারের এক দিনের ম্যাচে)। ব্যাটসম্যান যুবরাজ এখনও ঝলক দেখাতে পারেন কিন্তু সেটা দেখা যায় কালেভদ্রে। আগের মতো ফিল্ডিংয়ে চনমনে নন, বরং অনেক ক্ষেত্রেই তাঁকে কোথায় দাঁড় করানো হবে তা নিয়ে সমস্যায় পড়েন অধিনায়ক। বোলিংয়ের সেই হাতও নেই যে, কোহালি তাঁকে দিয়ে চার-পাঁচ ওভার পার্টটাইম বোলিং করাবেন। সেই কারণে যুবির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। তা সে যতই অধিনায়ক কোহালির সমর্থন থাকুক তাঁর সঙ্গে।
যুবরাজের চাপ বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন অধিনায়ক এবং ভারতের যুব দলের বর্তমান কোচ রাহুল দ্রাবিড়। তিনি বলেন, টিম ম্যানেজমেন্টের ভেবে দেখা উচিত, ২০১৯ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে যুবরাজ এবং ধোনিকে নিয়ে তারা কী করতে চলেছে। রাহুলের উক্তির পরেও ত্রিনিদাদে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কোহালি বলেন, তিনি খুব বেশি বদল চাইছেন না। তা শুনে মনে হবে, যুবি এবং ধোনি তাঁর ভাবনাতেই রয়েছেন।
তবে কত দিন সেই ভাবনা আগলে রাখতে পারেন কোহালি, সেটাই দেখার। রান না পেতে থাকলে যুবরাজদের নিয়ে প্রশ্ন বাড়তে থাকবে। কোহালিকেও একটা সময় কঠিন সিদ্ধান্তের জায়গায় আসতেই হবে। যুবরাজের বয়স ৩৫। দু’বছর পরে বিশ্বকাপের সময় তিনি হবেন ৩৭। সত্যিই কি তিনি সেই সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো জায়গায় থাকবেন? সেই ফিটনেস বা ফর্ম কোনওটাই কি তিনি দেখাতে পারছেন? বরং কারও কারও মনে হচ্ছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে হার্দিক পাণ্ড্যর দুরন্ত ব্যাটিং চোখ খুলে দেওয়া উচিত নির্বাচকদের। তরুণ রক্তই যে এখন দলে আনার সময় হয়েছে, সেটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে হার্দিকের ভয়ডরহীন ব্যাটিং দেখে।
যা পরিস্থিতি, ওয়েস্ট ইন্ডিজেই ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যেতে পারে যুবরাজের। আজ যদি তিনি রান করতে পারেন, কিছুটা চাপ হাল্কা হবে। যদি না পারেন, পরের ম্যাচেই তাঁকে বসিয়ে ঋষভ পন্থের মতো তরুণকে সুযোগ দেওয়ার দাবি উঠবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy