উসেইন বোল্ট না মাইকেল গ্যাটলিন? বিশ্ব মিটের সবচেয়ে বড় যুদ্ধের প্রথম রাউন্ডের মহড়ায় আপাতত এগিয়ে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রের তারকা স্প্রিন্টারই। সাত নম্বর হিট জিততে বোল্ট সময় নিলেন ৯.৯৬। গ্যাটলিন সেখানে ষষ্ঠ হিট জেতেন ৯.৮৩ সেকেন্ডে। এটাই এ দিনের হিটের সেরা সময়। দু’জনেই সেমিফাইনালে উঠলেন বটে। তবে ২৯তম জন্মদিনের উৎসব কাটানোর পরদিনটা জামাইকান তারকার উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ থাকছে।
বিশ্ব মিটে নামতে সাত বছর পর বার্ডস নেস্ট স্টেডিয়ামে ফেরা উসেইন বোল্টের। যে স্টেডিয়ামে তিন-তিনটে অলিম্পিক সোনা, ১০০ মিটারে বিশ্বরেকর্ড জামাইকান মহাতারকাকে এক লহমায় ‘স্প্রিন্ট সম্রাটের’ আসনে বসিয়েছিল। পরের বছরই বার্লিনে তিনটে সোনা আর দুটো বিশ্বরেকর্ডে বোল্ট বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর শাসনকালটা খুব ছোট হবে না। সেটাই হয়েছে। তবে সাত বছর পর এ বার বোল্টের একপেশে সাম্রাজ্যে গ্যাটলিনের থাবা বসানোর সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তায় ঘুম আসছে না বোল্ট ভক্তদের।
যার প্রথম কারণ যদি জামাইকান সুপারস্টারের কোমরের চোট হয় তা হলে দ্বিতীয়টা গ্যাটলিনের দুর্ধর্ষ ফর্ম। চলতি মরসুমে ১০০ মিটারে সেরা সময়ও যুক্তরাষ্ট্রের ৩৩ বছরের স্প্রিন্টারেরই দখলে ৯.৭৪। তার উপর বেজিংয়ে ২৭টি রেসে অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিয়ে নামছেন তিনি। বোল্ট সেখানে চোটের জন্য ছ’সপ্তাহ ট্র্যাকের বাইরে ছিটকে গিয়েছিলেন। ১০ সেকেন্ডের কম সময়ে এ মরসুমে দৌড়েছেন মোটে দু’বার। তাও গত মাসে ডায়মন্ড লিগে।
তবে এ দিনের হিটের পর যথারীতি আত্মবিশ্বাসের কোনও অভাব ছিল না বোল্টের কথায়। ‘‘যে রকম চেয়েছিলাম, ঠিক সে রকম দৌড়তে পারিনি। প্রথম রেসে খুব বেশি আশাও করিনি। দ্রুত দৌড়নোর লক্ষ্য ছিল না। যতটা সম্ভব এনার্জি বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। দারুণ ছন্দে আছি।’’
আত্মবিশ্বাসী গ্যাটলিনও। দু’বার ডোপিংয়ের জন্য যাঁর উপর নিষেধাজ্ঞার শাস্তি চেপেছিল। তবে সে সব কাটিয়ে এই ফিরে আসাটাই মার্কিন অ্যাথলিটের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে বোল্টের হিটে তাঁর চেয়ে কম সময়ে দৌড়নো দেখে বাড়তি কোনও উচ্ছ্বাস দেখা গেল না গ্যাটলিনের। বললেন, ‘‘প্রথম দিকটা বেশ ভাল দৌড়েছি। ছন্দটা ছিল। বোল্ট তো ২০১২ অলিম্পিকেও এটাই করেছিল। প্রথম রাউন্ডে ধীরেসুস্থে দৌড়েছিল। সেমিফাইনালে গতি আরও বাড়াল। আর ফাইনালে স্রেফ গুঁড়িয়ে দিয়েছিল বাকিদের।’’
রবিবার এক স্টেডিয়ামে তাই দ্বিতীয়বার বিদুৎ পড়ে কি না সেটাই দেখার।
এ দিকে, বোল্ট-গ্যাটলিন লড়াই নিয়ে উত্তাপের মধ্যেই শনিবার ১০ হাজার মিটারে সোনা জিতে রেকর্ড গড়লেন ব্রিটেনের মো ফারহা। এই নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টানা ছ’টি পদক জিতলেন ব্রিটিশ তারকা অ্যাথলিট। ছাপিয়ে গেলেন ইথিওপিয়ার কিংবদন্তি কেনেনিসা েবকেলেকে। ২০১১ দায়েগু বিশ্ব মিটে ১০ হাজার মিটারে হারের পর থেকে লন্ডন অলিম্পিক ও ২০১৩ মস্কো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পাঁচ হাজার ও দশ হাজার দুটিই দখল করেছেন ফারহা। ১০ হাজার মিটারে তাজ রক্ষা করার পর এ বার তাঁর সামনে আগামী শনিবার পাঁচ হাজার মিটার জিতে টানা সাতটি বিশ্ব খেতাব জয়ের বিরল সুযোগ। ফারহা এ দিন বলেছেন, ‘‘এ বছরটা খুব সহজ যাচ্ছে না। তার মধ্যে ফিনিশিং লাইনটা টপকে খেতাব ধরে রাখার অনুভূতিটা দারুণ।’’ পাশাপশি পাঁচ হাজার মিটারেও জেতার ব্যাপারে বলেন, ‘‘এখন ভাল করে স্নান করে, ধকলটা কাটিয়ে পরের রেসের কথা ভাবব।’’