রোনাল্ডোর মতো নাকলবল ফ্রি-কিক মারতে পারেন না। মেসির মতো চার-পাঁচজন ফুটবলারকে ড্রিবল করে নাস্তানাবুদ করতে পারেন না। কিন্তু পেনাল্টি বক্সের আশেপাশে বল পেলেই যে ম্যাচের ছবি পাল্টে দিতে পারেন। পারেন বড় ম্যাচে ঠিক সময় গোল করে দলকে জেতাতেও। মহাতারকা হয়তো তিনি হয়ে ওঠেননি। কিন্তু ফুটবলবিশ্ব তাঁকে মনে রাখবে একজন কমপ্লিট স্ট্রাইকার হিসেবে। যাঁর নামের সঙ্গে গোল শব্দটা প্রায় সমার্থক হয়ে উঠেছিল। তিনি মিরোস্লাভ ক্লোজে সোমবার জানিয়ে দিলেন, জার্মানির জার্সি পরে আর মাঠে নামবেন না।
বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরে ক্লোজে বলেছিলেন, স্বপ্ন পূরণ করার তাগিদে আরও এক বছর দেশের জার্সিতে খেলতে রাজি আছেন তিনি। কিন্তু আচমকাই মত বদলে জার্মান স্ট্রাইকার জানিয়ে দিলেন, আর ১১ নম্বর পরে পেনাল্টি বক্সে দাপট দেখাতে দেখা যাবে না তাঁকে। আর দেখা যাবে না সেই বিখ্যাত ‘সমারসল্ট’ সেলিব্রেশন। বলে দিচ্ছেন, “বিশ্বকাপ জিতেই স্বপ্ন পূরণ হয়ে গিয়েছিল। আন্তর্জাতিক দলের সঙ্গে খুব ভাল সময় কাটিয়েছি। অনেক স্মরণীয় জয়ের সাক্ষী থেকেছি।” ১৬টা গোল করে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতার সিংহাসনে আপাতত আসীন তিনি। কিন্তু ব্যক্তিগত রেকর্ড নিয়ে কোনও সময় চিন্তিত ছিলেন না ক্লোজে। তাঁর লক্ষ্য ছিল সব সময় দলকে সাহায্য করা। বলেন, “ব্যক্তিগত রেকর্ডের থেকে দলকে সব সময় আগে রেখেছি। রেকর্ড নিয়ে কোনও সময় মাথাব্যথা ছিল না। ফুটবলে সতীর্থদের সাহায্য না পেলে কোনও ট্রফি জেতা সম্ভব হয় না। ধন্যবাদ জানাতে চাই সবাইকে।” সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “আমি একজন স্ট্রাইকার। আমার কাজই গোল করা।”
প্রিয় সতীর্থ অবসর নেওয়ায় আবেগের কমতি ছিল না দলেও। ক্লোজের সিদ্ধান্ত ঘোষণার ঠিক কয়েক মিনিটের মধ্যেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাকাউন্টে ক্লোজেকে শ্রদ্ধা জানাতে সবাই পোস্ট করতে থাকেন। আর্সেনাল ও জার্মান তারকা মেসুট ওজিল যেমন পোস্ট করেন, “ধন্যবাদ মিরো তোমার গোলের জন্য। তুমি লিজেন্ড হয়েই অবসর নিচ্ছ।” যাঁর গোলে ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হয় জার্মানি, সেই মারিও গোটজে আবার লেখেন, “ধন্যবাদ মিরো! তোমার পরিসংখ্যান প্রমাণ করে কত ভাল ফুটবলার তুমি। কিন্তু তার থেকেও তুমি মানুষ হিসেবে আরও বড়।” যাঁর সঙ্গে এক সময় ক্লোজে চুটিয়ে খেলেছেন সেই লুকাস পোডলস্কি আবার বলেন, “মিরো শ্রদ্ধা জানাই এত বছর দারুণ খেলার জন্য। তোমাকে সেলাম।”
জাতীয় জার্সিতে
অভিষেক ২৪ মার্চ ২০০১। আলবেনিয়ার বিরুদ্ধে।
১৩৭ ম্যাচে ৭১ গোল। যা জার্মান ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
২০১৪ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড।
টানা চারটে বিশ্বকাপে গোল।
ক্লোজে গোল করলে জার্মানি কোনও ম্যাচে হারেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy