চার সেটে হার। শনিবার পুণেয় লিয়েন্ডার। -পিটিআই
ঠিক এই রেজাল্টটাই হবে আশঙ্কা করেছিলাম।
ডেভিস কাপে লিয়েন্ডার আর বিষ্ণু বর্ধন ডাবলসে চার সেটের লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৬-৩, ৩-৬, ৬-৭, ৩-৬ হারার পর তাই আমি অবাক হইনি।
একটা কথা পরিষ্কার বলার সময় বোধহয় চলে এসেছে। লিয়েন্ডারের দেশের জার্সি তুলে রাখার এটাই আদর্শ সময়। অনেকে বলবেন, আর একটা ম্যাচ জিতলেই যেখানে বিশ্বরেকর্ড গড়ার সুযোগ রয়েছে, লিয়েন্ডারকে কেন আর একটা চান্স দেওয়া হবে না?
আমি বলব, লিয়েন্ডার সেই সুযোগ আর হয়তো পাবে না। তাই নিজে থেকেই যদি অবসর নিয়ে নেয়, তা হলে লিয়েন্ডারের পক্ষেই সেটা সম্মানের হবে।
শনিবারের ম্যাচটার কথাই ধরা যাক। ম্যাচটা দেখে যা বুঝলাম, তেতাল্লিশের লিয়েন্ডারের সার্ভিসের গতি আগের মতো আর নেই। নেই পার্টনারকে টানার সেই ক্ষমতাও। দু’বছর আগেও যেটা ছিল। তাও বিষ্ণু খুব ভাল খেলেছে। কিন্তু প্রস্তুতি বলেও তো একটা কথা রয়েছে। এটা ডেভিস কাপ ম্যাচ। নিউজিল্যান্ডের সিটাক-ভেনাসরা র্যাঙ্কিংয়ে লিয়েন্ডারদের থেকে এগিয়ে ছিল। অভিজ্ঞতাতেও। এ রকম প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে নামার আগে সাকেত মিনেনি হঠাৎ চোট পেয়ে গেল। সেটা একটা ধাক্কা, মানছি। কিন্তু তার মানে কি বিষ্ণুকে টাই শুরু হওয়ার দু’দিন আগে ফোন করে জানতে চাওয়া হবে, তুমি খেলতে পারবে কি না!
আরও একটা ব্যাপার আছে। এর পরের টাইয়েই তো মহেশ ভূপতির নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন হওয়ার কথা। আর কোচের চেয়ারে আসতে পারে সোমদেব দেববর্মন। মহেশ ক্যাপ্টেন হলে নিশ্চয়ই নিজের টিম খেলাতে চাইবে। অবশ্যই সেখানে লিয়েন্ডারের আগে আসবে রোহন বোপান্নার নাম। তা ছাড়া পারফরম্যান্সের ব্যাপারটাও তো দেখতে হবে। লিয়েন্ডারের (৬৪) থেকে এখন ডাবলস র্যাঙ্কিংয়ে বোপান্না (২৮), দ্বিবীজ শরন (৬০), পূরব রাজা (৬৩) সবাই এগিয়ে। কতদিন তরুণ সতীর্থদের ঠেকিয়ে রাখবে লিয়েন্ডার!
মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে এসে বিষ্ণু যে ভাবে নিজেকে উজাড় করে দিল, তা দেখে গর্ব হচ্ছে। দেশের জন্য ডেভিস কাপে নামাটাই বিশাল ব্যাপার। চাপের মুখে কেউ ভেঙে পড়ে, কেউ লড়াই করে। সবাই এক রকম নয়। এই ছেলেটা সিংহহৃদয়। হারলেও বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছে তো। অন্য কেউ তো পারেনি।
লিয়েন্ডার পেজ
আমি তো বলব এখনই এআইটিএ-র উচিত লিয়েন্ডারের জায়গায় তরুণ কাউকে সুযোগ দেওয়ার। এ দিন লিয়েন্ডাররা যে রকম হারল, সে রকম তরুণ প্লেয়াররাও হারতে পারে। কিন্তু হারলেও ওদের অভিজ্ঞতাটা তো হবে। যেটা একটা প্লেয়ারের বড় অস্ত্র। যেটা আখেরে ভারতেই কাজে লাগবে।
লিয়েন্ডার দেশকে অনেক দিয়েছে, অনেক। সাতাশ বছর ধরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করাটা চাট্টিখানি কথা নয়। ওর সমসাময়িক সব প্লেয়ারই অবসর নিয়ে ফেলেছে। অনেকে কোচিংয়ে চলে এসেছে। লিয়েন্ডার যদি দেশকে সাহায্য করতেই চায়, তরুণ প্রতিভা তুলে আনার কাজটা করুক না। কে বলতে পারে ওর হাত ধরেই হয়তো উঠে আসবে আর একটা তরুণ লি।
ঠিক সাতাশ বছর আগের মতো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy