Advertisement
০৪ জুন ২০২৪

মনোজ-রামন জুটির দাপটে ইডেন শাসন

বুধবার সারা দিন ব্যাট করে ৩০৬ রান তুলল বাংলা। তার মধ্যে তরুণ ওপেনার অভিষেক রামনের অবদানই ১৭৬।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:৫৮
Share: Save:

রুবিক’স কিউবে রঙ মিলে গেলেও ইডেনের পিচ-ধাঁধার সমাধান যে কবে হবে কে জানে?

এই সবুজ, তো এই ফ্যাটফ্যাটে ছাইরঙা। কখনও মনে হয় গ্রিনটপে বল বুলেট-গতিতে ছুটবে, আবার দু’দিন পরেই দেখা যাচ্ছে, পাটা উইকেটের মতোই যেন। যেখানে বোলাররা শুরুতে শাসন করলেও শেষ পর্যন্ত ব্যাটসম্যানদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে পারবেন কি না, সেই প্রশ্নটা থাকছেই। তাই ইডেন উইকেটের কঠিন প্রশ্নপত্র সরিয়ে রেখে বাংলা হিমাচলের বিরুদ্ধে আপাতত রান তোলায় ব্যস্ত।

বুধবার সারা দিন ব্যাট করে ৩০৬ রান তুলল বাংলা। তার মধ্যে তরুণ ওপেনার অভিষেক রামনের অবদানই ১৭৬। অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি দিনের শেষে ৭৮ রানে অপরাজিত। এই দু’জনের ১৬৩ রানের পার্টনারশিপেই ৪৪-২ থেকে চাঙ্গা হয়ে ওঠে বাংলা।

এই রানে বঙ্গ শিবির হতাশ নয় বলেই খবর পাওয়া গেল। তবে এই হতাশ না হওয়ার মধ্যে মহম্মদ শামি, অশোক ডিন্ডাদের আগ্রাসী বোলিংয়ের আশাও লুকিয়ে রয়েছে। প্রায় ছ’ঘণ্টা এই ক্রিজে কাটানোর পরে বঙ্গ ওপেনার অভিষেক রামনের মন্তব্য, ‘‘উইকেট থেকে সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের বোলাররা ঠিক জায়গায় বল রাখতে পারলে ওরা (হিমাচল) বিপদে পড়তে পারে।’’

হিমাচল প্রদেশের নির্বিষ বোলিং সত্ত্বেও বাংলার সারা দিনে পাঁচ উইকেট খোয়ানোয় যতটা না উইকেটের প্রভাব দেখতে পাওয়া গেল, তার চেয়েও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠল ব্যাটসম্যানদের ভুল শট বাছাই। দু’ঘণ্টার উপর ক্রিজে থাকার পরেও কৌশিক ঘোষ যে শটে মিড অফে ক্যাচ দিলেন, তা যেমন অবাক করার মতো। সারা ইনিংসে নিখুঁত ভাবে স্টাম্পের বাইরের বল ছেড়ে দিয়ে খেলার পরেও অভিষেক রামনের সেই বলেই ব্যাট ছুঁইয়ে স্লিপে ক্যাচ দেওয়াও কম বিস্ময়ের নয়।

আর একটা অবাক করার মতো ঘটনা বাংলার একাদশে মিডিয়াম পেসার মুকেশ কুমারের উপস্থিতি। কণিষ্ক শেঠ, বি অমিতদের বাদ দিয়ে মুকেশ কেন? অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির ব্যাখ্যা, ‘‘গত চার দিন ধরে নেটে খুব ভাল বল করছিল মুকেশ। (মাত্র তিন দিন আগে অনুর্ধ্ব ২৩-এর হয়ে আর একটি চার দিনের ম্যাচ শেষ করে আসা) কণিষ্ককে যে কন্ডিশনে চাওয়া হয়েছিল, সেই কন্ডিশনে ও নেই। তা ছাড়া মুকেশের বল এই পরিবেশে বেশি ধারালো হয়ে উঠতে পারে, নড়াচড়াও হয়তো করবে বেশি। সেটাও একটা কারণ।’’ মনোজদের এই হঠাৎ বদলানো পরিকল্পনা কাজে আসে কি না, সেটাই এখন দেখার।

সকালের প্রথম ঘণ্টায় ফর্মে না থাকা পেসার ঋষি ধবনের বল ভাল ‘ক্যারি’ হলে কী হবে, তাঁদের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি গুরবিন্দর সিংহকে যে ভাবে বারবার আক্রমণ করলেন বাংলার ব্যাটসম্যানরা, তাতে ইডেনে এ দিন আরও একটা সেঞ্চুরি হতে চলেছিল। অফ স্পিনার গুরবিন্দর রান দেওয়ার সেঞ্চুরি থেকে মাত্র আট রান দূরে। লাগাতার মার খাওয়া সত্ত্বেও তাঁকে ১৭ ওভার বল করানো হল। ব্যাটসম্যানদের ভুলের জেরে পাওয়া উইকেটগুলো ছাড়া হিমাচল বোলাররা সারা দিনে ক’টা বলে অভিষেকদের ‘বিট’ করিয়েছেন, তা হাতে গুনতে দু-তিন সেকেন্ডও লাগার কথা নয়। ক’টা বল ব্যাটসম্যানদের পায়ে লাগাতে পেরেছেন তাঁরা, এটাও প্রশ্ন।

দিনের শেষে যে প্রশ্নটা থেকে গেল, তা হল, এই দুঃসহ বোলিং নিয়ে কী করে এক ডজন পয়েন্ট ঘরে তুলল হিমাচল?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE