Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
বিশ্বকাপ নয়, মনোজ-দিন্দার মাথায় দেওধর ফাইনাল

রাজ্য প্রথা তুলে আজ নতুন পূর্বাঞ্চল

পূর্বাঞ্চল সংসারে এ বার নাকি একটা আলাদা বৈশিষ্ট যোগ করেছেন দু’জন মিলে। মনোজ তিওয়ারি এবং শিবসুন্দর দাস। প্রথম জন অধিনায়ক। দ্বিতীয় জন, টিমের ব্যাটিং কোচ। বৈশিষ্টটা শুনলে নতুন মনে হবে না। ক্রিকেটে সেটা প্রচলিত ব্যাপার, নাম টিম কনসেপ্ট। তবে কনসেপ্টটা প্রয়োগে আলাদা। আগে নাকি সংসারে এতটা পূর্বাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল ব্যাপার থাকত না, যা এখন থাকছে। যেমন, টিম হোটেলে কারও ঘরের দরজা বন্ধ থাকছে না। প্র্যাকটিস বা টিম মিটিং সেরে রুমে ফিরলেও দরজা খুলে রাখতে হবে। সতীর্থরা আসতে পারেন, তাই।

মনোজ, রায়ডু। নায়কের মুকুট কার মাথায়?

মনোজ, রায়ডু। নায়কের মুকুট কার মাথায়?

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৫৯
Share: Save:

পূর্বাঞ্চল সংসারে এ বার নাকি একটা আলাদা বৈশিষ্ট যোগ করেছেন দু’জন মিলে। মনোজ তিওয়ারি এবং শিবসুন্দর দাস। প্রথম জন অধিনায়ক। দ্বিতীয় জন, টিমের ব্যাটিং কোচ।

বৈশিষ্টটা শুনলে নতুন মনে হবে না। ক্রিকেটে সেটা প্রচলিত ব্যাপার, নাম টিম কনসেপ্ট। তবে কনসেপ্টটা প্রয়োগে আলাদা। আগে নাকি সংসারে এতটা পূর্বাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল ব্যাপার থাকত না, যা এখন থাকছে।

যেমন, টিম হোটেলে কারও ঘরের দরজা বন্ধ থাকছে না। প্র্যাকটিস বা টিম মিটিং সেরে রুমে ফিরলেও দরজা খুলে রাখতে হবে। সতীর্থরা আসতে পারেন, তাই। টিম বাসে শ্রীবত্‌স গোস্বামীর পাশে মনোজ তিওয়ারি বা অশোক দিন্দা বসবেন, এমন নয়। অধিকাংশ সময়ই বঙ্গ ক্রিকেটারের পাশে নাকি থাকছেন ভিনরাজ্যের কেউ। টিমটা ফাঁক পেলে একসঙ্গে বেরিয়ে পড়ছে। মেরিন ড্রাইভ যাচ্ছে। হোটেল রুম ভাগাভাগি হচ্ছে রাজ্যের প্রভেদ তুলে দিয়ে। সৌরাশিস লাহিড়ী যেমন থাকছেন ওড়িশার বিপ্লব সামন্তরায়ের সঙ্গে। কেউ কেউ বলছেন, পূর্বাঞ্চল সংসারে এতটা একাত্মতা অতীতে খুব একটা দেখা যায়নি। টিমটার মননে নাকি ঢুকিয়ে ফেলা হচ্ছে, আগে তুমি পূর্বাঞ্চলের। তার পর বাংলার, ওড়িশা বা অসমের।

যা টিমের কাছে সুখবর তো বটেই, দেওধর ফাইনালের আগে পূর্বাঞ্চলের কাছে অন্যতম জয়মন্ত্রও।

মুম্বই থেকে ফোনে ‘বেঙ্গল এক্সপ্রেস’ দিন্দা শুনে বললেন, “এটা সুবিধে নিশ্চয়ই। কিন্তু শুধু একাত্মতা দিয়ে ম্যাচ জেতা যাবে না। ভাল পারফর্ম করতে হবে। সেটা আমরা কাল করব।” পশ্চিমাঞ্চলের বিরুদ্ধে বুধবারের ওয়াংখেড়ে ফাইনালের আগাম হুঙ্কার। পশ্চিম এবং পূর্ব দেওধর ফাইনালের দুই যুযুধানের শক্তি কাগজে-কলমে অনেকটাই আলাদা। পশ্চিমের টিমলিস্টে ইউসুফ পাঠান, অম্বাতি রায়ডু, সূর্যকুমার যাদব, অক্ষর পটেল, ধবল কুলকার্নি কে নেই? পূর্বের সেখানে নামমাহাত্ম্যে দু’জন। মনোজ এবং দিন্দা। কিন্তু তার পরেও দু’টো টিমকে সমানে-সমানে রাখতে হচ্ছে, কারণ ফাইনালের পরের দিনই বিশ্বকাপের প্রাথমিক দল নির্বাচন। যেটা মনে পড়লে দুই বঙ্গ ক্রিকেটারের বাড়তি অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ স্বাভাবিক। আর দ্বিতীয়ত, মনোজের আগুনে ফর্ম। উত্তরাঞ্চলকে যিনি একাই শেষ করেছেন দেড়শো করে।

মনোজ বা দিন্দা কেউই বিশ্বকাপ প্রসঙ্গটা স্বীকার করতে চাইলেন না। ফোনে মনোজ বলছিলেন, “জানি বিশ্বকাপ দল নির্বাচনের আগে এটাই শেষ ম্যাচ। কিন্তু ওটা নিয়ে ভাবছি না। যত পারব রান তুলব। আমার টিম খুব ভাল অবস্থায় আছে। আমি তাই আত্মবিশ্বাসী। পশ্চিমাঞ্চল খুব ভাল টিম। ওরা আগের ম্যাচে ৩১৪ তুলে জিতেছে।” তিনি আরও বললেন, “২০০৮-’০৯ মরসুমে ক্যাপ্টেন থাকার সময় পশ্চিমের কাছেই হেরেছিলাম। কিন্তু এ বার আমার যা টিম, জেতা উচিত।” দিন্দাও বিশ্বকাপ দল নির্বাচন প্রসঙ্গে বেশ রক্ষণাত্মক। পরিষ্কার বলে দিলেন, রান আপ শুরু করার সময় মাঠে নির্বাচকরা আছেন, সেটা মাথায় থাকবে। ভাল পারফর্ম করার ইচ্ছে থাকবে। কিন্তু বিশ্বকাপের প্রাথমিক টিমে জায়গা হবে কি না, মাথায় থাকবে না।

বুঝেশুনেই বোধহয়, পশ্চিমের ক্রিকেটাররাও প্রতিপক্ষের প্রশংসা করতে শুরু করেছেন। বেশি করে মনোজের। রায়ডু যেমন মনোজকে ‘ব্রিলিয়ান্ট ব্যাটসম্যান’ বলে এ দিন চলে গেলেন। পশ্চিমাঞ্চল যে পিচে ৩১৪ তুলে জিতেছিল, সেই পিচেই ফাইনাল হবে। অর্থাত্‌, ব্যাটসম্যানদের মৃগয়া হওয়ার সম্ভাবনা। পূর্বাঞ্চলের অনেকে ধরেই নিচ্ছেন রান উঠবে প্রচুর। যাদের বোলাররা চাপে পড়েও চাপ সামলাতে পারবে, ম্যাচ তাদের। পশ্চিমের তো আবার ইউসুফ-রায়ডু-সূর্য। সামলানো যাবে?

দিন্দা শুধু বললেন, “উল্টো দিকে নামীদামি ব্যাটসম্যান থাকলে অশোক দিন্দা কিন্তু একশোর মধ্যে নব্বই বারই জিতেছে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE