Advertisement
০৭ মে ২০২৪

নবান্নে বৈঠক, দরপত্র তুলছে মোহনবাগান

আইএসএলে তিন প্রধানকে না নেওয়া হলে সরকারের খরচে বাংলায় পাল্টা ‘বেঙ্গল কাপ’ করার পরিকল্পনা। ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলকে দু’বার ফোন। মাথা নত না করে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিন প্রধানের কর্তাদের নবান্নে ডেকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৭ ০৪:৫৭
Share: Save:

আইএসএলে তিন প্রধানকে না নেওয়া হলে সরকারের খরচে বাংলায় পাল্টা ‘বেঙ্গল কাপ’ করার পরিকল্পনা। ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলকে দু’বার ফোন। মাথা নত না করে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিন প্রধানের কর্তাদের নবান্নে ডেকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া এই ত্রিফলা চাপে আইএসএলে খেলার দরজা খোলার সম্ভাবনা তৈরি হল ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের। দুই প্রধানের দাবি মেনে আইএসএলের সঙ্গে আই লিগের তিন ক্লাবকে (অন্য ক্লাব বেঙ্গালুরু) মেশানোর থমকে যাওয়া সম্ভাবনা উসকে দিলেন অবশ্য ফেডারেশন সচিব কুশল দাশ নিজেই।

মঙ্গলবার নবান্নের সভার খবর এবং মুখ্যমন্ত্রীর মনোভাব জেনে দিল্লি থেকে ফোনে কুশলবাবু বলে দিলেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আমাদের প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলকে ফোন করেছিলেন। কাল (আজ বুধবার) আমি আর প্রেসিডেন্ট দিল্লিতে আলোচনায় বসছি। আই লিগের কিছু ক্লাবকে এ বারই আইএসএলে মেশানো যায় কি না তা নিয়ে কথা হবে। সেটা হলে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, বেঙ্গালুরুকে নেওয়া হতে পারে আইএসএলে।’’ কিন্তু প্রশ্ন হল, প্রফুল্ল-কুশলরা কি চাইলেই নীতা অম্বানির কোম্পানিকে বুঝিয়ে আই লিগের ক্লাবেদের সরাসরি নিতে রাজি করাতে পারবেন? তাঁদের কি সেই ক্ষমতা আছে? এ দিনের সভায় মমতা অবশ্য বলেছেন, ‘‘শুধু দুই প্রধান নয়, আমি চাই মহমেডানও খেলুক আইএসএলে।’’ সভায় উপস্থিত মহমেডান মাঠ সচিব রাজু আমেদ তখন বলেন, ‘‘আমাদের নিলে আমরা খেলব। আমাদের সব আছে।’’

আইএসএলে খেলা নিয়ে দুই প্রধানের সঙ্গে ফেডারেশন ও আইএমজি-আরের গত তিন মাস ধরে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। চলছে প্রস্তাব, পাল্টা প্রস্তাব দেওয়া। কিন্তু রফাসূত্র মেলেনি। এর কারণ দু’টো। এক) ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি দিয়ে আইএসএল খেলতে নারাজ দুই প্রধান। দুই) যুবভারতীতে খেলা নিয়ে সমস্যা।

তবে রাতের খবর, ইস্টবেঙ্গলের মতো মোহনবাগানও আজ বুধবার আইএসএল খেলার জন্য নিলামের দরপত্র তুলছে। ক্লাবের এ দিনের কর্মসমিতির সভায় সেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। জানা গিয়েছে, দু’টো রাস্তাই খোলা রাখতে চাইছে দুই প্রধান। এক) ফ্রাঞ্চাইজি ফি মুকুব করলে দরপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে রাখা। দুই) মুখ্যমন্ত্রী এবং সদস্য-সমর্থকদের যাতে বোঝানো যে, তারা আইএসএল খেলতে চায়। কলকাতার এক বাণিজ্যিক সংস্থার কর্ণধারও দরপত্র তুলেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কি মহমেডানের হয়ে দরপত্র তুলেছেন?

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর ক্লাব কর্তাদের মনে হয়েছে, আইএসএলে খেললে মাঠ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নিয়মানুযায়ী যুবভারতীতেই শুধু খেলতে পারবে এটিকে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিনের সভায় মাঠ সমস্যার সমাধানের রাস্তাও বাতলে দিয়েছেন বলে খবর। ‘‘সব ক্লাব মিলেমিশে যুবভারতী, শিলিগুড়িতে খেলবে। আমি আলোচনা করে সব মিটিয়ে দেব,’’ বলছেন মমতা। সভায় উপস্থিত ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে তিনি নির্দেশ দেন, এটিকের মালিক সঞ্জীব গোয়েনকা ও উৎসব পারেখের সঙ্গে কথা বলতে।

এদিন দুপুরে ক্রীড়া পর্ষদ অফিসে ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা চলছিল তিন প্রধানের শীর্ষ কর্তাদের। সেখান থেকে হঠাৎ-ই মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে ডেকে পাঠান নবান্নে। তিন ক্লাবের মুখপত্র হিসাবে সভায় পুরো ব্যাপারটি বুঝিয়ে বলেন আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়। কীভাবে আই লিগকে মেরে ফেলা হবে, বাংলার ফুটবলকে মেরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে সেটা জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। মমতা বা ক্রীড়ামন্ত্রী এ দিন সভা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। ফুটবল মাঠের লোকজনদেরই এগিয়ে দেন তাঁরা। এর পর তিন প্রধানের কর্তাদের সঙ্গে নিয়ে নবান্নে দাঁড়িয়ে উৎপলবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের বলেছেন, কোনওভাবেই মাথা নত করবেন না। রাজ্য সরকার ক্লাবগুলির পাশে আছে।’’ আর তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদার ও মোহনবাগানের অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‘আমরা যেটা চাইছি সেটা মুখ্যমন্ত্রী সমর্থন করেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mohun Bagan Bid Paper ISL Football
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE