Advertisement
E-Paper

চ্যালেঞ্জের ঘনঘটা নিয়ে অভিযানে নামছেন মর্গ্যান

নিজের কোচিং জীবনের কঠিনতম ইনিংস কি শনিবারই শুরু করতে চললেন তিনি? আই লিগ শুরু করতে যাওয়ার আগের দিন সকালে সেন্ট্রাল পার্কের মাঠের এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকা ছ’ফুট দুই-কে দেখলে তা অবশ্য বোঝার জো নেই।

প্রীতম সাহা

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০৪:০১
অস্ত্রে শান। আই লিগের আগের দিন বুকেনিয়া-ওয়েডসনের সঙ্গে লাল-হলুদ কোচ। শুক্রবার। ছবি: উৎপল সরকার।

অস্ত্রে শান। আই লিগের আগের দিন বুকেনিয়া-ওয়েডসনের সঙ্গে লাল-হলুদ কোচ। শুক্রবার। ছবি: উৎপল সরকার।

নিজের কোচিং জীবনের কঠিনতম ইনিংস কি শনিবারই শুরু করতে চললেন তিনি?

আই লিগ শুরু করতে যাওয়ার আগের দিন সকালে সেন্ট্রাল পার্কের মাঠের এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকা ছ’ফুট দুই-কে দেখলে তা অবশ্য বোঝার জো নেই।

দারুণ চনমনে। ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। এমনকী ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের কথা শুনলেও মনে হবে, তিনি তৈরি। লাল-হলুদ কোচ তৈরি নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য।

‘‘আবার প্রথম থেকে শুরু করব। এই ক’দিন আমরা যে প্র্যাকটিস করেছি, সেটা আদৌ সঠিক হয়েছে কি না, তা জানা যাবে শনিবার থেকে। আমাদের পরীক্ষা শুরু কালই।’’

কে বলবে, এ বছর ইস্টবেঙ্গলের সাহেব কোচকে একটা নয়, একাধিক পরীক্ষা দিতে হবে! কারণ, এ বারের আই লিগটা যে আলাদা। অন্তত তাঁর জন্য তো বটেই।

আই লিগে মর্গ্যান নতুন নন। ময়দানেও। তবে এ বার তাঁর দিকে বাড়তি নজর থাকবে সবার। লাল-হলুদে তাঁর প্রথম ইনিংসে মর্গ্যান যে টিম নিয়ে ফেড কাপ, সুপার কাপ জিতেছিলেন, দু’বার আই লিগ রানার্স হয়েছিলেন, সেটা কর্তারাই তৈরি করে তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। এ বার সেখানে পরিস্থিতি একেবারে আলাদা। টিমটা মর্গ্যানের। ফুটবলাররা সব পারথবাসী ব্রিটিশ কোচেরই পছন্দের। শুধু তাই নয়, যে চার জন বিদেশিকে এবার লাল-হলুদ জার্সিতে দেখা যাবে, তাঁরা সবাই নতুন। ময়দান তো কোন ছার, ভারতেই তাঁরা কখনও খেলেননি। শনিবার আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে অবশ্য তিন’জন বিদেশিকে পাওয়া যাচ্ছে— দুই স্ট্রাইকার ওয়েডসন-প্লাজা এবং ডিফেন্ডার বুকেনিয়া। তবে সবাইকে প্রথম দলে রাখা হবে কি না, তা নিয়েই ধন্দে খোদ মর্গ্যান। এ দিন বললেন, ‘‘প্লাজা-বুকেনিয়া ফিট থাকলেও এখনও ক্লান্ত। স্কোয়াডে থাকবে। শুরুতেই নামাব কি না, সেটা ম্যাচের দিন ঠিক করব।’’

এমনিতে গত চার-পাঁচ বছর ধরে বাজারের অন্যতম সেরা ‘মাছ’ই কিনছেন লাল-হলুদ কর্তারা। কিন্তু তাতেও আই লিগে তেরো বছরের ট্রফি-খরা কাটেনি। সারা বছর দৌড়ে লাস্ট ল্যাপে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়েছে দল। এ বারের টিমেও গোলা-বারুদের অভাব নেই। রোমিও ফার্নান্ডেজ, হাওকিপ, রওলিন বর্জেস তরুণ স্বদেশীয় প্রতিভারা আছেন। তবু একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ম্যারাথন লিগে যেটা সাফল্যের বড় চাবিকাঠি, সেই ধারাবাহিকতাটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারবে তো মর্গ্যানের দল? সবচেয়ে বড় সমস্যা, ফুটবলারদের ফিটনেস। গত অনেক বছর ধরে যা ভুগিয়ে চলেছে ইস্টবেঙ্গলকে। সদ্য আইএসএল ফেরত ফুটবলারদের চোট। যেমন আগের বছর ডিকা, লোবোর ছিল। এ বছর অর্ণব-মেহতাব। তার উপর লিগের শেষের দিকে ফিটনেসে খামতি। কোথাও যেন এই ফিটনেস-যুদ্ধেই হেরে যায় লাল-হলুদ বাহিনী!

মুশকিল হল, ওই জায়গাটায় এ বারও কোনও রকম সুরক্ষা বলয় আপাতত নেই। মর্গ্যান শুরুতে একজন ফিজিও এনেছিলেন। কিন্তু প্র্যাকটিস শুরুর দশ দিনের মাথায় তিনি পালিয়ে গেলেন। মজার ব্যাপার, এই বিপর্যয়ের দায়ও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন লাল-হলুদ কোচ। এমনকী আগ বাড়িয়ে বলেও রেখেছেন, ‘‘দলের ফিজিও নেই তো কী? আমি আছি তো। আমিই ওই কাজটা করব।’’ এখন টিম তাঁর। ফুটবলাররাও তাঁর। ফিজিও? সেটাও তিনি। সব মিলিয়ে চ্যালেঞ্জের ঘনঘটা নিয়ে আই লিগ অভিযানে নামছেন মর্গ্যান।

এত ঝুঁকি একা সামলাতে পারবেন তো? ময়দান যে কতটা নিষ্ঠুর সেটা তাঁর অজানা নয় নিশ্চয়ই। এ বারও অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে লাল-হলুদ কোচ হয়েছেন তিনি। আর এ বারই তাঁর কোচিং জীবনের সবচয়ে বড় পরীক্ষা।

গোদের ওপর বিষফোঁড়া প্রথম ম্যাচেই যে টিমের সঙ্গে ম্যাচ, তাদের কোচের নাম খালিদ জামিল। যাঁর বিরুদ্ধে খুব মধুর একটা স্মৃতি নয় লাল-হলুদের সাহেব কোচের।

মর্গ্যান বলছেন আমি তৈরি। পর্দার আড়ালে তৈরি কর্তা-সমর্থকেরাও। ব্যর্থতা মানেই চিরতরে ‘ঘচাং ফু’!

শনিবার আই লিগ

ইস্টবেঙ্গল: আইজল এফসি (বারাসত, ৪-৩০)

বেঙ্গালুরু এফসি : লাজং এফসি (বেঙ্গালুরু, ৭-০০)।

Trevor James Morgan East Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy