ভারতের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজ শুরুর আগে দুটো প্র্যাকটিস ম্যাচ পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। এই দুই ম্যাচ থেকে যে এখানকার পরিবেশ নিয়ে ভাল ধারণা পেয়েছে ওরা, সেটাই রবিবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বুঝিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড।
খাতায় কলমে নিউজিল্যান্ডের চেয়ে ভারত ভাল ওয়ান ডে দল। কিন্তু দুর্দান্ত হোমওয়ার্ক করে ম্যাচটা বার করে নিল ওরা।
কি অসাধারণ হোমওয়ার্ক ও পরিকল্পনা। টম ল্যাথামকে পাঁচে ব্যাট করতে পাঠানো হল ও স্পিন বলটা ভাল খেলে আর ভাল সুইপ মারতে পারে বলে। আর রস টেলরের অভিজ্ঞতা নিয়ে তো কোনও প্রশ্নই নেই। শুধু অভিজ্ঞতা দিয়ে ম্যাচ বার করে নিল ও। এই জুটিটাই তো শেষ করে দিল ভারতকে। যার জন্য বিরাট কোহালির অত ভাল সেঞ্চুরিটাই মাঠে মারা গেল। তাই বলে বিরাটের কৃতিত্ব অবশ্য এতটুকুও কমেনি।
আরও পড়ুন: চাইনিজ খাবার খেতে গিয়ে ‘স্টাম্পড’ সচিন
মুম্বইয়ে এ দিন গরম ও আর্দ্রতা অস্বাভাবিক বেশি ছিল। ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদিকে একটা করে ওভার করার পরে আইসব্যাগ নিতে দেখা যাচ্ছিল। ওদের দুই ব্যাটসম্যানেরও একই অবস্থা। ল্যাথাম তো ৫০ ওভার কিপিং করার পরে অসাধারণ ইনিংসটা খেলল। অথচ ওদের দেশে এখন পরিবেশ সম্পুর্ণ উল্টো। কিন্তু সে সব সামলেও যে ভাবে ওরা ম্যাচটা জিতে নিল, তা অসাধারণ। দু’জনেই খুব বুদ্ধিদীপ্ত ও দায়িত্বশীল ক্রিকেট খেলে ম্যাচ বার করে নেয়। ভারতীয় স্পিনারদের এক মুহূর্তের জন্যও মাথায় চড়তে দেয়নি।
বিরাটের ৩১তম সেঞ্চুরি দারুণ। ৪২ রান ও তোলে বাউন্ডারি থেকে। বাকি সিঙ্গলসে। একশো রানে পৌঁছনোর পরেও ওকে দেখে মনে হল সদ্য নেমেছে। কি অফুরান স্ট্যামিনা ছেলেটার। শুরুর দিকে অবশ্য ক্যাচও পড়ে ওর। তবে ভাগ্য তাদেরই সঙ্গে থাকে, যারা প্রতিভাবান হয়। গরমে আর্দ্রতায় এত তাজা কী করে থাকা যায়, তা দেখাল ভারত অধিনায়ক।
নিজের ২০০তম ওয়ান ডে ম্যাচে বিরাট কোহালির ৩১তম সেঞ্চুরিটা স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারত এই ম্যাচটা জিততে পারলে। কিন্তু সেটা হতে দিল না ল্যাথাম-টেলররা। এর জন্য বিরাট নিজেও কিছুটা দায়ী। যে বোলার একটা সেট জুটি ভাঙার জন্য আদর্শ হয়ে উঠতে পারত, সেই কেদার যাদবকে একবারও ব্যবহার করল না কেন বুঝলাম না।
তবে বিরাটের চেয়ে ল্যাথামের সেঞ্চুরিটা ছিল অনেক কার্যকরী। অনেক বেশি চাপ নিয়ে খেলেছে ল্যাথাম। ও যে কত ভাল অনসাইড প্লেয়ার সেটা আজ আবার প্রমাণ করে দিল। দুই ভারতীয় স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চহাল যে মাঝের ওভারে সাফল্য পাচ্ছিল, তা শুধুমাত্র সঠিক হোমওয়ার্ক করে নষ্ট করে দিল ল্যাথাম, টেলররা। মনে রাখবেন প্র্যাকটিস ম্যাচে দু’জনেই সেঞ্চুরি করেছে। তাই এই দু’জনকে নিয়ে বিরাটদের বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তার কোনও ছাপ দেখা গেল না।
ওয়াংখেড়ের এই উইকেটে ২৮০ রান কমই, অন্তত ২৫ থেকে ৩০ রান কম। ভারতীয় ব্যাটিংকে সেই বাঁহাতি পেসারদের বিরুদ্ধেই ফের মাথা নত করতে দেখা গেল। মহম্মদ আমির, জেসন বেহরেনডর্ফদের পরে এ বার ট্রেন্ট বোল্ট ঝড়ে শুয়ে পড়ল ভারতের ব্যাটিং। খেয়াল করার বিষয়, বোল্টকে সারা ইনিংসে মাত্র একটা স্কোয়ার কাট করতে পেরেছে ধোনি। প্রথম পাঁচ ওভারে ও সাত রান দিয়ে দু’উইকেট নেয়। ওর বল সামলাতে না পেরে ভুল ফুটওয়ার্কে খেলতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হল ধবন। রোহিতের ব্যাট ও প্যাডের মাঝখানে এতটা ফাঁক অবাক করার মতো।