Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাঘা যতীনেই ডার্বির আমেজ

কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম ইস্টবেঙ্গলের পয়া মাঠ। খেলার শেষে এ কথা বলেছেন লাল-হলুদের কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান স্বয়ং। ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের ভিড় তাঁর নজর এড়ায়নি। আর মাঠে হাজির প্রায় সকলেরই নজর ছিল হাইতির ওয়েডসনের দিকে। তা সে লাল-হলুদই হোক বা সবুজ-মেরুণ।

সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জয়ের। সাক্ষী ভাইচুং। —নিজস্ব চিত্র

সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জয়ের। সাক্ষী ভাইচুং। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১০
Share: Save:

কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম ইস্টবেঙ্গলের পয়া মাঠ। খেলার শেষে এ কথা বলেছেন লাল-হলুদের কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান স্বয়ং। ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের ভিড় তাঁর নজর এড়ায়নি। আর মাঠে হাজির প্রায় সকলেরই নজর ছিল হাইতির ওয়েডসনের দিকে। তা সে লাল-হলুদই হোক বা সবুজ-মেরুণ।

সবুজ-মেরুণ? বাঘা যতীন অ্যাথলেটিক ক্লাবের জার্সির রং হুবহু মোহনবাগানের সঙ্গে মিলে গিয়েছে। তাতে মাঠে আলাদা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। আর সেই সুযোগ নিয়ে অনেক খাঁটি মোহন-সমর্থক ঢুকে পড়েছিলেন বাঘা যতীন শিবিরে। তাঁদের যুক্তি, ঘরের মাঠে ঘরের দলকে সমর্থন করব! তর্ক, চিৎকার, গোল হলে হই চই— সব মিলিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম এ দিন ছিল জমজমাট। আর সেই মাঠে মধ্যমণি ওয়েডসন। লাল-হলুদ সমর্থকরা দেখতে চাইছিলেন, নতুন বিদেশি দলকে কতটা জোর জোগাচ্ছেন। মোহন-সমর্থকরা মেপে নিতে চাইছিলেন বিপক্ষের নতুন তারকাকে।

ওয়েডসনের পায়ে বল পড়লে তাই গ্যালারিতে চিৎকার, বেজে উঠেছে বাঁশি। তবে গত এপ্রিলে ডার্বির মতো কাঁসর-ঘণ্টা এ দিন মাঠে দেখা যায়নি। অরুণ রায়, যদু বর্মন, তমাল মৌলিকদের মতো মোহন-ভক্তরা বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারিতে আবার ডার্বি। তখন সব দেখতে পাবেন।’’ ওয়েডসনকে বিশেষ পাত্তা দিতে নারাজ ওঁরা। বললেন, ‘‘আজ দেখলেন তো ওর খেলা! লাল-হলুদ এ দিন যে দল নামিয়েছিল, তাও এমন কিছু নয়!’’

মোহন-সমর্থকদের আরও তাতিয়ে দিয়েছিল উদ্যোক্তাদের প্রচার। ম্যাচের আগে অনেকেই বলছিলেন, বাঘাযতীন ক্লাব এ ম্যাচে জিতেও যেতে পারে। কারণ, বাইরের অনেক ফুটবলার এ দিন বাঘাযতীনে খেলেছেন। সিকিম থেকে এসেছিলেন থুপদেন ভুটিয়া, গেন তামাঙ্গ, দেওয়া তামাঙ্গ, চেলসন লামারা। বাঘাযতীনের কোচ কল্যাণ দে বলেন, ‘‘এই ভাবেই ভাল দল তৈরির চেষ্টা করেছিলাম আমরা। মহামেডানের ফুটবলার উত্তম রাই, মোহনবাগান স্কোয়াডের ফুটবলার তথা কার্শিয়াঙের ফুটবলার আদর্শ তামাঙ্গকেও রাখা হয়েছিল। এক সময় জাতীয় দলের ফুটবলার রেনেডি সিংহও কিছুক্ষণের জন্য মাঠে নেমেছিলেন।’’

সুযোগ করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় ভাল ফুটবলারদের দলে রাখার কথা বলা হলেও, কার্যক্ষেত্রে তা হল না কেন? কল্যাণবাবুর দাবি, ‘‘দল তৈরির জন্য শিবির করা হয়েছিল। সেখানে ভাল ফুটবলার খুব বেশি কেউ আসেননি। তবে জয় দত্ত, দার্জিলিঙের ফুটবলার মবিন রাই, কালিম্পং থেকে দুই একজন ফুটবলার রাখা হয়েছিল।’’

বাঘাযতীনের উত্তম রাই, নাদং ভুটিয়া, থুপদেন ভুটিয়ারা যখন ইস্টবেঙ্গলের গোলে হানা দিয়েছেন, তখন গ্যালারিও তেতে উঠেছে। ওঁরা গোল না পাওয়ায় বেশি আফসোস মোহনবাগান ভক্ত ফত্তম রাউত, সৈকত বসুদের। শেষে জয় দত্ত যখন পুরস্কার নিতে মঞ্চে এলেন, তখন ওঁরা গলা ফাটালেন যেন জয় মোহনবাগানেরই কেউ।

এ সব দেখেশুনে এক দর্শকের মন্তব্য, ‘‘ফেব্রুয়ারি ডার্বির মুখবন্ধটা তা হলে আজ হয়ে গেল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kanchenjunga Stadium Derby
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE