প্রথম ইনিংসে পেসারদের দাপটে ব্যাটসম্যানরা কাবু। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের দাপটে ফেরা আর সব শেষে চায়নাম্যান বোলারের ঘূর্ণি ম্যাজিক— দেশের মাঠে গোলাপি বলে প্রথম শ্রেণির উদ্বোধনী ম্যাচে এই সব আকর্ষণীয় উপাদান ঠাসা থাকলেও উধাও রিভার্স সুইং।
ব্যাটসম্যানদের কাছে এটা খুশির খবর হলেও পেস বোলারদের কাছে মোটেই তা নয়। শুক্রবার দলীপ ট্রফিতে যুবরাজ সিংহর ইন্ডিয়া রেড সুরেশ রায়নার ইন্ডিয়া গ্রিনকে ২১৯ রানে হারানোর পর প্রশ্ন উঠছে, কোকাবুরা গোলাপি বল আদৌ ভারতের মাঠে টেস্ট খেলার পক্ষে উপযোগী কি না।
বাংলার প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অবশ্য গোলাপি বল আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রেটার নয়ডা থেকে ফোনে বলেন, ‘‘বেশ ভাল লাগল গোলাপি বলে খেলতে। প্রথম অভিজ্ঞতাটা মন্দ নয়। বলটায় বেশি সুইং হচ্ছে। তাই প্রথম ইনিংসে কেউ ভাল রান পাইনি। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে চোখ অ্যাডজাস্ট হয়ে গিয়েছিল। উইকেটে বল ব্যাটেও আসছিল। তাই স্ট্রোক নিতে অসুবিধা হচ্ছিল না।’’
সুদীপের মতো বড় রান পাওয়া আর এক ব্যাটসম্যান রবিন উথাপ্পা বলছেন, ‘‘আলো বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে বলের রঙও পাল্টে যাচ্ছে। দুপুরে গোলাপি লাগছে। বিকেলে আলো জ্বলে ওঠার সময় কমলা মনে হচ্ছে। সূর্যের আলো পুরো চলে যাওয়ার পর গোলাপি ভাবটা যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। এই ব্যাপারটা অ্যাডজাস্ট না করতে পারলেই সমস্যা হবে।’’
যুবরাজ সিংহ এ দিন অল্প কথায় ব্যাখ্যা দিলেন, ‘‘গোলাপি বল লাল বলের চেয়ে বেশি মুভ করছে। ব্যাটেও আসছে ভাল। বল সহজে পুরনোও হচ্ছে না। সব মিলিয়ে বেশ এক্সাইটিং ব্যাপার।’’
কিন্তু পেসারদের কাছে ব্যাপারটা ততটা ‘এক্সাইটিং’ নয়। যেহেতু গোলাপি বলের ‘শাইন’ (চকচকে ভাব) অনেকক্ষণ থাকে, তা রাখার জন্য বাড়তি পরিশ্রম করতে হয় না, তাই সহজেই রিভার্স সুইং পাওয়াটাও বেশ কষ্টকর হয়ে উঠছে। প্রথম ইনিংসে হাফ ডজন উইকেট পাওয়া রাজস্থান পেসার নথু সিংহ’র বক্তব্য, ‘‘বেশি সুইং করানো যাচ্ছে, এটা যেমন সুবিধার, তেমনই রিভার্স সুইং না পাওয়াটা অবশ্যই অসুবিধাজনক।’’ সুদীপ আবার বললেন, ‘‘ম্যাচের তৃতীয় দিন সন্ধেবেলা শিশিরের জন্য বল ভিজে গিয়েছিল। তাই বোলাররা ঠিকমতো গ্রিপ করতে পারছিল না।’’ আর ম্যাচে ন’উইকেট পাওয়া চায়নাম্যান বোলার কুলদীপ যাদব বলছেন, ‘‘বল ডিপ করানো যাচ্ছে ভালই। কিন্তু তেমন টার্ন পাওয়া যাচ্ছে না।’’
বোর্ডসূত্রের খবর, দলীপ ট্রফিতে কোকাবুরার যে বলে খেলা হচ্ছে, তার প্রতিটার দাম আট হাজার টাকা করে। এসজি-র লাল বলের চেয়ে চার গুণ বেশি। গোলাপি বলের জন্য বাড়তি ৩০ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিতে হচ্ছে বোর্ডকে। এ রকম কুড়ি ডজন বল আনিয়েছে বোর্ড। অর্থাৎ গোলাপি বলের খরচ ১৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। যা এক ডজন করে প্র্যাকটিসের জন্য দেওয়া হয়েছে প্রতি দলকে। বাকি বোর্ডের এই নতুন বিদেশি অতিথিদের কড়া পাহাড়ায় সিসিটিভি-র নজরে রাখা হয়েছে গ্রেটার নয়ডার স্টেডিয়ামে একটা গোপন ঘরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy