Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

উত্তর-পূর্বে রঞ্জি খেলার হিড়িক

বিচারপতি লোঢা কমিশনের সুপারিশে ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভারতীয় বোর্ড উত্তর-পূর্বের ছ’টি রাজ্যকে দেশের প্রথম সারির প্রতিযোগিতাগুলিতে খেলার ছাড়পত্র দিয়েছে। কিন্তু অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও সিকিমের মধ্যে বেশির ভাগেরই না আছে ভাল পরিকাঠামো, না আছে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মানের যথেষ্ট ক্রিকেটার।

রাজীব ঘোষ
শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ০৪:১৭
Share: Save:

বাংলার হয়ে খেলার সুযোগ না পাওয়া বহু ক্রিকেটারের সামনে আসন্ন মরসুম থেকেই রঞ্জি ট্রফি-সহ দেশের একাধিক প্রথম সারির প্রতিযোগিতার দরজা খুলে যাচ্ছে। অনেকে সেই দরজায় কড়া নাড়া শুরুও করে দিয়েছেন। বাংলার একাধিক ক্রিকেটারকে এ বার হয়তো ঘরোয়া ক্রিকেটে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দলগুলির হয়ে খেলতে দেখা যাবে।

বিচারপতি লোঢা কমিশনের সুপারিশে ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভারতীয় বোর্ড উত্তর-পূর্বের ছ’টি রাজ্যকে দেশের প্রথম সারির প্রতিযোগিতাগুলিতে খেলার ছাড়পত্র দিয়েছে। কিন্তু অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও সিকিমের মধ্যে বেশির ভাগেরই না আছে ভাল পরিকাঠামো, না আছে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মানের যথেষ্ট ক্রিকেটার।

পরিকাঠামো তৈরি করতে বোর্ড তাদের আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। কোচ, ট্রেনার, ফিজিয়োও তারা দেবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু যোগ্য ক্রিকেটার কোথায়? তাই এই রাজ্যগুলির ক্রিকেট কর্তারা ভিন রাজ্যের ক্রিকেটারদের খোঁজ শুরু করে দিয়েছেন। হাতের কাছে যে-হেতু বাংলা, তাই এ রাজ্যের ক্রিকেটারদের চাহিদা ভাল। বাংলা দলে সুযোগ না পেলে তাঁদের হয়তো এই রাজ্যগুলির হয়েই রঞ্জি ট্রফি, বিজয় হাজারে ট্রফি ও মুস্তাক আলি ট্রফিতে খেলতে দেখা যাবে। এ বার থেকে যে-হেতু ঘরোয়া ক্রিকেটে পারিশ্রমিক তিন গুণেরও বেশি বাড়ছে, তাই এ বার হয়তো ক্রিকেটারদের মধ্যে ভিন রাজ্যে গিয়ে খেলার উৎসাহও বেশি। যদিও প্রশ্ন উঠছে, ভিন রাজ্যের ক্রিকেটারদের খেলানো হলে সেই রাজ্যগুলির ক্রিকেটের কী উন্নতি হবে? কিন্তু এ ছাড়া আর উপায়ও নেই তাদের।

বুধবার মুম্বইয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই রাজ্যগুলির কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন বোর্ড কর্তারা। তাতে বোর্ডের তরফে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়ার সঙ্গে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ীই তিন জন করে ভিনরাজ্যের পেশাদার ক্রিকেটার খেলাতে পারবে তারা। মেঘালয় ক্রিকেট সংস্থার সচিব নব ভট্টাচার্য শিলংয়ে ফিরে ফোনে বললেন, ‘‘বাংলার ক্রিকেটাররা অনেকেই উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তারা এই রাজ্যগুলির হয়ে খেলতে চায়। অন্য রাজ্যের ছেলেরাও আগ্রহী।’’

মেঘালয়ে প্রথম শ্রেণির মানের ক্রিকেটার রয়েছে বলে জানালেও নববাবু মনে করেন, ‘‘মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, অরুণাচলকে ভিনরাজ্যের ক্রিকেটার আনতেই হবে। এ সব রাজ্যের সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ বেশি। তাই ওঁরা বাংলার ক্রিকেটারদের চাইছেন। ট্রায়াল নিয়ে যোগ্যদেরই অবশ্য নেওয়া হবে।’’

সমস্যা হল, ৩০ অগস্টের মধ্যে দল গড়তে বলা হয়েছে এইসব নতুন রাজ্যকে। তাই এর মধ্যে বাংলার ১৫ জনের দল ঘোষণা না হলে সমস্যায় পড়তে পারেন তাঁরা। সম্ভাব্য তালিকার বাইরে থাকা অনেকেই ট্রায়ালে যাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এমনই এক ক্রিকেটার জানান, ‘‘আমি দু’টো রাজ্যের ট্রায়ালে যাব। আরও অনেকেই যাচ্ছে বলে শুনেছি।’’

এই অঞ্চলে মাঠের সমস্যা প্রকট হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে জানালেন উত্তর-পূর্বাঞ্চল ক্রিকেটের জন্য তৈরি বোর্ডের টাস্ক ফোর্স সদস্য বাংলার প্রাক্তন স্পিনার শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এই মরসুমে এটা সমস্যা হতে পারে। তবে আগামী মরসুমে বোর্ড সব তৈরি করে দেবে বলেছে।’’ মাঠের অভাবে সিকিমকে এ বার হোম ম্যাচ খেলতে হবে শিলিগুড়িতে। মিজোরামও অসমের মাঠে হোম ম্যাচ খেলতে চায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket Ranji North-East
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE