Advertisement
E-Paper

ডার্বি হলেও লিগ জেতা আটকাত না ইস্টবেঙ্গলের

ডার্বিতে ওয়াকওভার পেয়ে টানা সাত বার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ইতিহাস তৈরির পরও অনেক লাল-হলুদ সদস্য-সমর্থক দেখলাম আক্ষেপ করছেন। এটা ভেবে যে, মোহনবাগানকে হারানোর সুযোগটা পাওয়া গেল না।

ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩২
চ্যাম্পিয়নদের বিজয়োৎসব শুরু।

চ্যাম্পিয়নদের বিজয়োৎসব শুরু।

ডার্বিতে ওয়াকওভার পেয়ে টানা সাত বার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ইতিহাস তৈরির পরও অনেক লাল-হলুদ সদস্য-সমর্থক দেখলাম আক্ষেপ করছেন। এটা ভেবে যে, মোহনবাগানকে হারানোর সুযোগটা পাওয়া গেল না।

আমি কিন্তু ওদের দলে নই। মেহতাব-ডং-অর্ণবরা যে ইতিহাসটা গড়ল সেটা কেউ কখনও ভাঙতে পারবে কি না তা নিয়েই সবার সঙ্গে আলোচনা করছি। কেউ যদি বোকা বোকা অজুহাত দিয়ে বড় ম্যাচ না খেলে পালিয়ে যায়, নিজেদের ফুটবলারদের ইচ্ছাকে মর্যাদা না দেয়, তা হলে ইস্টবেঙ্গল কী করবে? ওদের কি জোর করে মাঠে নামাবে? বরং আমি বলব ডার্বিটা হলেও কিন্তু মোহনবাগান জিতত না। সেটা মনে হয় ওঁদের কর্তারাও জানতেন।

এক ম্যাচ বাকি থাকা অবস্থায় অপরাজিত থেকে লিগ চ্যাম্পিয়ন। এটা কিন্তু বিরাট ব্যাপার। কারণ এ বারের কলকাতা লিগে সাদার্ন, টালিগঞ্জ অগ্রগামী, ইউনাইটেডের মতো টিমগুলোর সঙ্গে ইস্ট-মোহনের শক্তির পার্থক্য ছিল উনিশ-বিশ। মহমেডানও তো দেখলাম বেশ শক্তিশালী। এই সব টিমের বিরুদ্ধে সব ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। কেন সেই খেতাব জয়কে খাটো করে দেখব? কেন আক্ষেপ করব? এ বার ইস্টবেঙ্গল দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছে এটা বলছি না। আগের ছয় বারের মধ্যে এমন দু’তিন বছর আছে যেখানে এর চেয়ে অনেক ভাল পারফরম্যান্স ছিল ওদের। তবুও বলছি ডার্বিতে বাগান খেলতে নামলে হেরে যেতই।

ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান দু’টো টিমেই আমি খেলেছি। জানি ডার্বির আগে কোন ড্রেসিংরুমের চেহারাটা কেমন থাকে। লাল-হলুদ জার্সির সামনে পড়লে বাগানে একটা ঠকঠকানি শুরু হয়। সেটা ইস্টবেঙ্গলে এসে কখনও পাইনি। অন্য দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে ভয় থাকলেও, বাগানের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে কেমন যেন তেতে যায় ইস্টবেঙ্গল। এটা ঠিক, এ রকম মানসিকতা নিয়ে ডার্বিতে নেমেও অনেক ম্যাচ হেরেছে লাল-হলুদ জার্সি। আমি বলছি মানসিকতার পার্থক্যের কথা। মেহতাবরা যতই খারাপ খেলুক না কেন, বিদেমিদের সামনে পড়লে জেতার জন্য জান কবুল করতই।

যে অজুহাতে বাগান খেলল না সেটা হাস্যকর। আমাদের ফুটবল জীবনে ডার্বির আগে তো সল্টলেক স্টেডিয়ামে অনুশীলনই করতে দেওয়া হত না। নিজেদের মাঠে প্র্যাক্টিস করে ওখানে খেলতে যেতাম বড় ম্যাচ। সেটা আমার সময়ের বাগানের ফুটবলাররাও জানে। এই তো কয়েক দিন আগে কাগজে পড়লাম বিমান থেকে নেমে সে দিনই সুনীল ছেত্রীদের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলল পুয়োর্তোরিকো টিমটা। তাই কল্যাণীতে এক দিন অনুশীলন করতে পারলাম না বলে ডার্বি খেলব না, এই অজুহাত ধোপে টেঁকে না। ইস্টবেঙ্গলও যদি ও রকম হঠকারী সিদ্ধান্ত নিত, আমি একই কথা বলতাম।

কলকাতা লিগ এমনিতেই অনেক ছোট হয়ে গেছে। ডার্বি এমন একটা ম্যাচ যা দেখার জন্য মুখিয়ে থাকে সদস্য-সমর্থকরা। যে কোনও ফুটবলারের স্বপ্ন থাকে ডার্বি খেলার। বাগান কর্তাদের জন্য ওদের ফুটবলাররা সেই সুযোগটা পেল না। ভয়ে হয়তো ওরা প্রকাশ্যে কিছু বলছে না। কিন্তু আফসোস তো আছেই। সেই রেশটা পড়ল বৃহস্পতিবার টালিগঞ্জ ম্যাচে। নামার আগেই যদি কেউ জেনে যায় চির প্রতিদ্বন্দ্বী চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছে, তা হলে খেলার মোটিভেশন থাকবে কী করে? হারতে তো হবেই।

এটা ঘটনা যে ডার্বির ভয়ঙ্কর চাপটা এ বার নিতে হয়নি ইস্টবেঙ্গলকে। ওই ম্যাচ না খেলেই পয়েন্ট পেয়ে যাওয়ায় মেহতাবদের উপর খেতাব জেতার চাপটা অনেক কমে গিয়েছিল। এটাই টার্নিং পয়েন্ট হয়ে গেল এ বারের লিগের। তবুও বলব, নতুন ইতিহাস তৈরি হল। তৈরি হল কলকাতা লিগের নতুন মাইলস্টোনও। অপেক্ষায় থাকব কবে এটা ভাঙে।

Eastbengal CFL Champion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy