Advertisement
E-Paper

ছয় মন্ত্রে এখন ছুটছে মনোজের টিম বাংলা

যত দিন যাচ্ছে, বঙ্গ ক্রিকেটমহলে ধারণাটা আরও স্পষ্ট হচ্ছে। নির্ণায়ক স্কোরকার্ডই হোক বা টিমের বহিরঙ্গ— ব্যাপারটা অনেকেই ধরতে পারছেন। মহারাষ্ট্র ম্যাচের প্রথম দিনটাকেই উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:৫০

যত দিন যাচ্ছে, বঙ্গ ক্রিকেটমহলে ধারণাটা আরও স্পষ্ট হচ্ছে। নির্ণায়ক স্কোরকার্ডই হোক বা টিমের বহিরঙ্গ— ব্যাপারটা অনেকেই ধরতে পারছেন। মহারাষ্ট্র ম্যাচের প্রথম দিনটাকেই উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক। পুণেতে টস হেরে গোটা দিন ব্যাট করে মনোজ তিওয়ারির বাংলা ২৩৯-৩ তুলল। একজনও সেঞ্চুরি করলেন না। কিন্তু পঞ্চাশ-ষাট নিয়ম মেনে করে গেলেন। অভিমন্যু ঈশ্বরণ ৬৫। সায়নশেখর মণ্ডল ৫৮। সুদীপ চট্টোপাধ্যায় ৫১ ব্যাটিং। মনোজ তিওয়ারি ৩০। গোটা দিনের বাংলার রান ব্যাঙ্কে প্রত্যেকে কিছু না কিছু জমা করে গেলেন।

এবং এখানেই নতুনত্ব।

এত দিন বঙ্গ ব্যাটিংয়ে বড় স্কোর মানে থাকত, মনোজ তিওয়ারি বা লক্ষ্মীরতন শুক্লর একটা বড় ইনিংস। সাম্প্রতিকে সুদীপ ও অভিমন্যুর নামটাও যোগ হয়েছিল। ব্যাটিংয়ে ভাল কিছুর সংজ্ঞা ছিল— কারও না কারও একটা বড় ইনিংস থাকবে। যাকে ঘিরে বাকি ইনিংস আবর্তিত হবে। কিন্তু সাইরাজ-সংসারে সেটা যেন পাল্টে গিয়েছে। ব্যক্তি-নির্ভরতা কাটিয়ে এটা এখন অনেকটাই টিম, এক জন না পারলে আর এক জন। সে না পারলে অন্য কেউ। কারও উপর পারফর্ম করার অসীম চাপ তৈরি হচ্ছে না। কেন? কোন মন্ত্রে?

বাংলা শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, নতুনত্ব এক-আধটা নয়। বেশ কয়েকটা।

সাইরাজ-সংস্কৃতি: ঠিক করে বললে প্র্যাকটিস সংস্কৃতি। বলা হল, পূর্বতন বঙ্গ কোচেদের কেউ কেউ অফিসে সই করার জন্য নাকি অর্ধেক সময় প্র্যাকটিস শুরুর আগেই শেষ করে দিতেন! যা পাল্টেছে। টিমের জন্য কোনও নির্দিষ্ট প্র্যাকটিস শিডিউল নাকি থাকছে না। যে দিন যতক্ষণ প্রয়োজনীয় মনে হচ্ছে, সে দিন ততক্ষণ। অতীতে ফিল্ডিং প্র্যাকটিসটাও প্রায় উঠে গিয়েছিল। বাংলার নতুন কোচ দু’টোই ফিরিয়ে এনেছেন। টিম ম্যানেজমেন্টের একজন পুণে থেকে ফোনে বলছিলেন, ‘‘পারস (মামরে) যে সংস্কৃতিটা এনেছিল টিমে, সাইরাজ সেটা ফিরিয়ে এনেছে। অসাধারণ ডিসিপ্লিন।’’

নাম নয়, প্রতিভা: উদাহরণ মুকেশ কুমার, আমির গনি। সৌরভ সরকার, সৌরাশিস লাহিড়ীর মতো সিনিয়রকে বসিয়ে এ বার জুনিয়রদের খেলানোর সাহস দেখিয়েছে বাংলা। যে থিওরি কাজও দিয়েছে। মুকেশ তো ক্লাব ক্রিকেটও সে ভাবে খেলেননি। অথচ হরিয়ানার বিরুদ্ধে কাঁপিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন।

পর্যাপ্ত সুযোগ: যেমন শ্রীবৎস গোস্বামী। চলতি রঞ্জি মরসুমে বিরাট কিছু না করলেও তাঁর উপর আস্থা হারায়নি নতুন টিম ম্যানেজমেন্ট। সায়নশেখর মণ্ডল আর এক জন। যাঁর উপর পুরনো বাংলা ভরসাই দেখাতে পারেনি। এই বাংলা দেখাচ্ছে। সায়ন ওপেনিংয়ে সেট করে গিয়েছেন। রান পাচ্ছেন। ভাল বলও করছেন।

সাপোর্ট স্টাফে সংস্কার: বলা ভাল, তাঁদের ক্রিয়াধর্মের সংস্কার। অতীতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যেত, কোচ একজন। ব্যাটিং থেকে ফিল্ডিং— সবই তিনি সামলাচ্ছেন। এখন তিন জন আছে। এবং তিন জনের কেউই একে অন্যের কাজে নাক গলাচ্ছেন না। লক্ষ্য একই থাকছে— টিমের পারফরম্যান্সে উন্নতি। যেখানে এক-একজন পৌঁছচ্ছেন এক-একটা রাস্তা ধরে।

কোচ ও অধিনায়ক: শোনা গেল বঙ্গ কোচ বাহুতুলে নাকি ‘আমিই বস’ এমন ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাস রাখেন না। যে কোনও সিদ্ধান্ত সবার সঙ্গে কথা বলে নিয়ে থাকেন। অধিনায়ক মনোজও টিমের প্রতি দায়বদ্ধতায় একশোয় একশো। এতটাই যে, সাপোর্ট স্টাফের মিটিংয়েও থাকতে দেখা যাচ্ছে বঙ্গ অধিনায়ককে!

ভরসার হাত: যার নাম সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। টিমের যে কোনও প্রয়োজনে যাঁর কাছে গেলে সুফল পাওয়া যাচ্ছে।

সাফল্যের নেপথ্যে মোটামুটি এই, যা কাজও দিচ্ছে। পাঁচ ম্যাচে বাংলা এখন ১৬, মহারাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিদেনপক্ষে যা ১৯ হওয়া উচিত। পুণের পাটা উইকেটে অতি নাটকীয় কিছু না ঘটলে সরাসরি জয়ের আশা সে ভাবে করা হচ্ছে না। বরং পরবর্তী দু’টো ম্যাচের একটা থেকে (ওড়িশা ও অসম) ছ’পয়েন্টের স্বপ্ন আছে। বলা হল, রঞ্জির নকআউটে পৌঁছতে ম্যাজিক ফিগার নাকি এ বার ২৮ পয়েন্টের আশেপাশে। টিম বাংলার রথ এ ভাবে চললে, যা খুবই সম্ভব।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলা ২৩৯-৩ (অভিমন্যু ৬৫, সুদীপ ৫১ ব্যাটিং)।

Ranji Trophy Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy