নায়ক: শুধু বল নয়, ব্যাট হাতে কামাল জাডেজার। ছবি: পিটিআই
টি-টোয়েন্টি ও ওয়ান ডে তে বরাবর তিনি খুব ধারাবাহিক।
এ বার ক্রিকেটের সবচেয়ে ঐতিহ্যশালী ফর্ম্যাটেও নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। তিনি— বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট বোলার রবীন্দ্র জাডেজা।
চতুর্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬৩ করেছেন। বল হাতেও জাডেজার গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেটের সৌজন্যে মাত্র ১৩৭ রানে অল আউট হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। স্বপ্নের পারফরম্যান্সের পরে ভারতকে সিরিজ জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড় করিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। তৃতীয় দিনের শেষে জাডেজা বলছেন, টেস্টেও নিজেকে প্রমাণ করতে পেরে সন্তুষ্ট তিনি। ‘‘ওয়ান ডে তে আমি ভাল খেলে এসেছি। কিন্তু এ বছর টেস্টেও ভাল পারফরম্যান্স করতে পেরে খুশি আমি। আমার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে। আমি সন্তুষ্ট যে ক্রিকেটের প্রতিটা ফর্ম্যাটেই ভাল খেলতে পারছি,’’ বলছেন জাডেজা।
শুধু বাইশ গজেই নয়, ভারত-অস্ট্রেলিয়ার স্লেজিং যুদ্ধেও জাডেজাকে দেখা গিয়েছে ভাল মতো নেমে পড়তে। সোমবার যেমন দেখা গেল ম্যাথু ওয়েড বনাম জাডেজার লড়াই। জাডেজা ব্যাট করার সময় দেখা গিয়েছে ওয়েড বার বার তাঁকে স্লেজ করছেন। ঠিক কী হয়েছিল? জাডেজা বলছেন, ‘‘আমি শুধু ওয়েডকে একটা কথাই বলি। ম্যাচটা হারার পরে তো তুমি ফাঁকা থাকবে। তখন আমরা একসঙ্গে ডিনার করতে যাব।’’ জাডেজার এই জবাবে ওয়েডের কী মনোভাব হয়েছিল জানা না গেলেও, সাংবাদিকরা হেসে গড়িয়ে পড়েন।
এই টেস্ট সিরিজে এখনও পর্যন্ত দুটো হাফসেঞ্চুরি করে ও ২৫টা উইকেট তুলে সিরিজের সেরা হওয়ার মুখে জাডেজা। স্বপ্নের ফর্মের কারণ কী? জাডেজা বলছেন, ‘‘আমি যেন এখন অটো-মোডে আছি। সব কিছুই ঠিকঠাক হয়ে যাচ্ছে।’’
জাডেজার ৬৩ রানের ইনিংস ভারতকে ৩২ রানের লিড নিতে সাহায্য করে। চাপের মুখেও এত গুরুত্বপূর্ণ একটা ইনিংস খেলতে পারায় খুশি জাডেজা। ‘‘সকালের দিকে পরিস্থিতিটা খুব কঠিন হয়ে উঠেছিল। উইকেটে বাউন্স ছিল। তার ওপর অস্ট্রেলিয়ান পেসাররা ১৪০-এর ওপর গতিতে বল করছিল। এটাই টেস্ট খেলার আসল চ্যালেঞ্জ,’’ বলছেন জাডেজা।
কোনও ব্যক্তিগত পুরস্কারের থেকেও জাডেজার কাছে বেশি দামি দলকে জেতানো। ‘‘আমার ভাল লাগে যখন কেউ বলে যে কোনও পরিস্থিতিতেই আমি ভাল পারফর্ম করতে পারি। খুব খাটছি। কোনও ব্যক্তিত পুরস্কারের থেকেও আমার কাছে দলের জয়টা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ,’’ বলছেন জাডেজা। ৩২ রানের লিডটাও এ রকম ম্যাচের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটাই মনে করছেন ভারতের অলরাউন্ডার। ‘‘মাঝে মাঝে ৩২ রানের লিডও কাজে আসে। কারণ এটা এমন একটা উইকেট যেখানে বাউন্স আছে। বল সুইং করেছে। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ৩০ রানেই তিন উইকেট হারিয়েছিল। এর থেকেই বলা যায় ৩২ রানের লিডটাও আমাদের কাজে এসেছে,’’ বলছেন জাডেজা। সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘কোনও সময় মনে হয়নি আমরা চাপে আছি। চাপ ছাড়া বল করেছি আমরা। পুরো বিন্দাস মেজাজে ছিলাম।’’
ঋদ্ধিমানের সঙ্গে জাডেজার পার্টনারশিপ অস্ট্রেলিয়ার স্কোরের সামনে ভারতকে পৌঁছতে সাহায্য করে। ‘‘আমি ঋদ্ধির সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম যে করে হোক ৩০০-র কাছাকাছি পৌঁছতে হবে। আমার আর ঋদ্ধির পরে সে রকম ব্যাটসম্যান কেউ ছিল না। তাই ঠিক করেছিলাম ভারতকে ৩০০ রানে পৌঁছে দিয়ে বড় শট নেব,’’ বলছেন জাডেজা।
ভারতীয় স্পিনাররা ফের ছন্দে থাকলেও অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা পারল না কেন? জাডেজার মনে হচ্ছে, ‘‘অস্ট্রেলিয়াও ভালই বল করেছে। ঠিক জায়গায় বলটা ফেলছিল। কিন্তু ভাল বল হলেও ব্যাটের কানাটা মিস করে যাচ্ছিল।’’ জাডেজা আরও বলছেন, ‘‘ডেভিড ওয়ার্নারের উইকেটটা খুব জরুরি ছিল। ওয়ার্নারের উইকেটের সময় যেমন বলটা ওর ব্যাটের কানায় লাগল।’’
উমেশ আর কুলদীপ যাদবকে শর্ট বল করেন অস্ট্রেলিয়ান পেসাররা। জাডেজা মনে করছেন উইকেট না তুলতে পারার হতাশা থেকেই কাজটা করেছে অস্ট্রেলিয়া। ‘‘অস্ট্রেলিয়া আমাদের শেষের দুই ব্যাটসম্যানকে বাউন্সার দিচ্ছিল, কিন্তু তখন আমরা ভাল জায়গায় ছিলাম। তাই আমাদের কিছু এসে যায়নি,’’ বলছেন জাডেজা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy