Advertisement
০২ মে ২০২৪

ক্যাবিনেটে অধরা ট্রফি তোলার শপথ স্মিথের

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের ট্রফি ক্যাবিনেট যে কোনও দলের কাছে ঈর্শনীয়। কিন্তু এই ক্যাবিনেটে এখনও একটা শূন্যতা রয়ে গিয়েছে। ক্রিকেট বিশ্বে রাজত্ব করা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত অধরা থেকেছে একটা ট্রফি— টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। কলকাতায় পা দেওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে যে শূন্যতা ভরাট করার শপথ নিয়ে নিলেন স্টিভন স্মিথ।

প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৬ ০৩:২০
Share: Save:

পাঁচ বার ওয়ান ডে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন।

টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরের সিংহাসনে বহু বছর একাধিপত্য।

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের ট্রফি ক্যাবিনেট যে কোনও দলের কাছে ঈর্শনীয়। কিন্তু এই ক্যাবিনেটে এখনও একটা শূন্যতা রয়ে গিয়েছে। ক্রিকেট বিশ্বে রাজত্ব করা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত অধরা থেকেছে একটা ট্রফি— টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। কলকাতায় পা দেওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে যে শূন্যতা ভরাট করার শপথ নিয়ে নিলেন স্টিভন স্মিথ। বলে দিলেন, এত দিন যা হয়েছে, হয়েছে। এ বার ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ফর্ম্যাটকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে তাঁর দেশ। শুনিয়ে রাখলেন, এই টুর্নামেন্ট ঘিরে প্রচুর প্ল্যানিং করে এসেছেন তিনি এবং তাঁর টিম ম্যানেজমেন্ট।

‘‘অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসে বহু টিম বহু ট্রফি জিতেছে। একমাত্র এই ট্রফিটা বারবার হাত ফসকে গিয়েছে। সে জন্যই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা আমরা আরও বেশি করে জিততে চাই। আর আমাদের দেশের ক্রিকেট-দর্শনই হল, যে টুর্নামেন্টে নামছি সেটা জিতে ছাড়়ব,’’ এ দিন সকালে টিম হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলনে বলছিলেন তরুণ অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। সঙ্গে কার্যত হুঙ্কার, ‘‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে আমরা প্রচুর প্ল্যান করেছি। এর আগে আমাদের ক্রিকেটাররা টানা টেস্ট আর ওয়ান ডে খেলতে খেলতে টি-টোয়েন্টিতে সে ভাবে সময় দিতে পারত না। কিন্তু আমার এই টিম কাপ জিততে মুখিয়ে আছে।’’

উপমহাদেশের উইকেট বিদেশি টিমের কাছে সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে, ভালই জানেন স্মিথ। তবে সঙ্গে এটাও জানেন, তাঁর টিমে আইপিএল খেলা ক্রিকেটার পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। যাঁরা ভারতের পিচ সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। ডেভিড ওয়ার্নার, জেমস ফকনার, অ্যারন ফিঞ্চ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, শেন ওয়াটসন এবং তিনি নিজে— টিমের ‘কোর’ ভারতে খেলে অভিজ্ঞ। ‘‘মনে রাখবেন, দলের অনেকেই আইপিএল খেলে অভ্যস্ত। ভারতের পিচ, ভারতের মাঠের দর্শক, কোনও কিছুই আমাদের অজানা নয়। সেই অভিজ্ঞতাটা এ বার দারুণ কাজে লাগবে,’’ বললেন স্মিথ।

তাঁর টিমে হালফিলে প্রচুর বদল হয়েছে। সিনিয়ররা অবসর নিয়েছেন, দলে এসেছেন অ্যাশটন আগার, অ্যান্ড্রু টাই, অ্যাডাম জাম্পা, জন হেস্টিংসের মতো নতুন মুখ। বিশেষ করে স্পিন বিভাগ রয়েছে দুই তরুণের দায়িত্বে। বাইশ বছরের অ্যাশটন এবং তেইশের জাম্পাকে টিমের দুর্বলতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রসঙ্গটা অবশ্য ব্যাগি গ্রিনের ঔদ্ধত্যে উড়িয়ে দিলেন স্মিথ। বলে দিলেন, ‘‘টিম হিসেবে আমরা নিজেদের বেশ ভালই গুছিয়ে নিয়েছি। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ওদের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারানোটা টিমকে তাতাচ্ছে। স্পিনার প্রসঙ্গে বলব, ওরা মোটেই আমাদের দুর্বলতা নয়। বরং বড় ম্যাচে নিজেদের প্রমাণ করেছে ওরা। ভুলে যাবেন না, দরকারে আমিও বলটা করে দিতে পারি।’’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে অস্ট্রেলিয়ার সেরা পারফরম্যান্স ২০১০-এ। যখন ফাইনালে উঠেও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারতে হয়েছিল তাদের। তবে ওপেন মিডিয়া সেশনে দলের তিন অস্ত্রের কথায় পরিষ্কার, টি-টোয়েন্টিতেও অস্ট্রেলীয় যুগ শুরু করতে মরিয়া গোটা দল। দলের অলরাউন্ডার ও জিওফ মার্শের পুত্র মিচেল যেমন স্মিথের অধিনায়কত্বে নতুন যুগের সম্ভাবনা দেখছেন। বলছিলেন, ‘‘আমাদের টিম সংস্কৃতি এখন দারুণ। বিশেষ করে স্টিভ স্মিথের নেতৃত্বে। আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে আমি প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী।’’

মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা যে বিশ্বকাপ ফেভারিট, মেনে নিতে অসুবিধে নেই মিচেলের। পাশাপাশি এটাও শুনিয়ে রাখলেন যে, ফেভারিট হওয়ার চাপটা টিম ইন্ডিয়ার বাড়তি লাগেজ। শুনিয়ে রাখলেন দক্ষিণ আফ্রিকায় এমনিতে যা উইকেট হয়, তার চেয়ে অনেক স্লো পিচে বল করে এসেছেন তিনি। তাই ভারতীয় উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে খুব একটা অসুবিধে হবে না।

অস্ট্রেলীয় পেসের আর এক ফলা জশ হ্যাজলউড নিজের উন্নতির যাবতীয় কৃতিত্ব দিচ্ছেন দলের বোলিং কোচ ক্রেগ ম্যাকডারমটকে। তাঁর কথায়, ‘‘বোলিংকে আমি নেতৃত্ব দেব, এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। জানি, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির অভিজ্ঞতা আমার সে ভাবে নেই। কিন্তু টিমের বাকিদের থেকে অনেক কিছু শিখছি। দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনটে টি-টোয়েন্টি আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তা ছাড়া গত দু’বছর ক্রেগের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’’

আর এক পেসার জন হেস্টিংস আবার এখন থেকেই প্ল্যান করছেন, ভারতের ব্যাটিংয়ের শিরদাঁড়া ঠিক কী ভাবে অকেজো করবেন। বলছিলেন, ‘‘বিরাট কোহালিরা দুর্দান্ত। মাঠের যে কোনও জায়গা দিয়ে শট মারতে পারে। বোলার হিসেবে আমার চ্যালেঞ্জ হল ওদের স্বচ্ছন্দে শট খেলতে না দেওয়া। বিরাটদের ক্রিজের মুভমেন্ট দুর্দান্ত। সেটা যাতে না করতে পারে দেখতে হবে।’’

হেস্টিংসের মেন্টরের তালিকায় ম্যাকডারমট তো রয়েছেনই, রয়েছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিও! তিরিশ বছরের পেসারের ব্যাখ্যা, ‘‘ক্রেগের কাছে অনেক কিছু শিখেছি। তার পর আইপিএলে সিএসকে টিমমেটদের কাছ থেকেও শিখেছি। ধোনি, ব্রেন্ডন ম্যাকালাম, ডোয়েন ব্র্যাভোদের মতো দুর্দান্ত ক্রিকেটারের সঙ্গে বসে আড্ডা মেরেছি। শেখার জন্য কিন্তু এই আড্ডাগুলো দারুণ!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

t-20 world cup australia wt20
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE