পারথ থেকেই আজ শুরু হয়ে যাচ্ছে দেশের মাটিতে ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ প্রস্তুতি। অনেকের মনে হতে পারে, বিশ্বকাপ যখন উপমহাদেশে, সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ খেলার মানে কী! কিন্তু ভারত যদি ওখানে ভাল খেলে, তা হলে সেই কুশন বিশ্বকাপে বিরাট মানসিক শক্তি হয়ে উঠবে।
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে দ্রুত পিচ হল পারথে। যদিও আগের মতো অতটা দ্রুত এখন নেই। তবে বল ক্যারি করবে আর স্ট্রোকপ্লেয়াররা ব্যাট করে আনন্দ পাবে। উইকেটে সঠিক বাউন্স থাকায় ব্যাটসম্যানরা এখানে শটের আসল দাম পায়। অস্ট্রেলিয়ার দু’জন প্রধান বোলার নেই সিরিজে। মিচেল জনসন আর মিচেল স্টার্ক। ওদের হ্যাজলউড-ফকনারের সঙ্গে নতুন ফাস্ট বোলারদের মাঠে ছাড়তে হবে। যারা অস্ট্রেলিয়ান পেস বোলিংয়ের ঐতিহ্য বহন করার যোগ্য কি না সেটা দেখতে আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করব।
অস্ট্রেলিয়ান স্কোয়াডে যে কোনও স্পিনার নেই, সেটা আশ্চর্য কিছু নয়। অনেক বিদেশি অধিনায়কের বিশ্বাস, ভারতীয়দের বিরুদ্ধে পেসার খেলানোটাই সেরা রাস্তা। যাতে একই সঙ্গে রান আটকানো আর উইকেট তোলার সুযোগ থাকে। স্পিন করতে পারে এমন এক জনই ওদের দলে আছে— ম্যাক্সওয়েল। অতীতে অন্য দিক থেকে যখন জোরে বোলাররা ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রেখেছে, তখন ও উইকেট তুলেছে।
ওদের ব্যাটিং স্টিভ স্মিথ-কেন্দ্রিক। ওয়ার্নার-ফিঞ্চের ওপেনিং জুটি আক্রমণাত্মক খেলে থাকে। স্মিথ এবং বেইলি মাঝের ওভারে ইনিংসকে গতি দেয়। আর আছে ‘ম্যাড ম্যাক্স’! নিজের দিনে যে বিপক্ষকে একাই উড়িয়ে দেয়। এক কথায়, নিজেদের পরিবেশে খুবই ব্যালান্সড ব্যাটিং লাইন আপ। আর আট নম্বরে ফকনার নামা মানে ব্যাটিং গভীরতাও যথেষ্ট।
এ রকম প্রতিপক্ষ ব্যাটিংকে একটা টিম হিসেবে বল করতে হবে ভারতীয়দের। স্পিনারদের সঙ্গে সঙ্গে পেসারদেরও বড় ভূমিকা নেওয়া দরকার। আমাদের জোরে বোলারদের বিশেষ করে মনে রাখতে হবে, এক বছর আগে একই দেশে বিশ্বকাপে ভারতকে যে একটা খুব ভাল বোলিং টিম দেখিয়েছিল তার কারণ ফাস্ট বোলাররা কার্যকরী ছিল। এ বার উমেশ যাদব অন্য দিকে শামিকে পাবে না। কিন্তু সেটা আবার তরুণ পেসারদের সামনে দারুণ সুযোগও। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ান পরিবেশে।
অস্ট্রেলীয়দের হামাগুড়ি খাওয়াতে ভারতকে অবশ্য অশ্বিন আর রবীন্দ্র জাডেজার দিকেও তাকাতে হবে। অশ্বিন সেরা ফর্মে আছে। অস্ট্রেলিয়ান পিচ তবু ওর পরীক্ষা নেবে। অস্ট্রেলীয়রা সাধারণত বাঁ-হাতি স্পিনার বেশি খেলার সুযোগ পায় না। তাই জাডেজা একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে। ভারতের দরকার শুরুর ওভারগুলোয় উমেশ আর ইশান্তের আগুন ছোটানো। তবে আমি বারিন্দর স্রানকে দেখার অপেক্ষায় থাকব। দু’টো প্রস্তুতি ম্যাচ ওর বেশ ভাল গিয়েছে। তবে আসল জায়গা তো বড় মঞ্চ! গুরকিরত মান, অক্ষর পটেলের মতো তরুণ অলরাউন্ডারও আছে দলে। সুতরাং ক্যাপ্টেনের কাছে প্রথম এগারো বাছার বিকল্পও আছে।
সবশেষে ভারতীয় ব্যাটিং প্রসঙ্গ। রোহিত-ধবন দুর্দান্ত ওপেনিং জুটি। তার পর থাকছে বিরাট, রাহানে। যারা বিদেশের মাঠে নিজেদের ক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। রায়না ওয়ান ডে সিরিজে না থাকায় মণীশ পাণ্ডের সামনে ভাল সুযোগ। তবে ধোনি নিজেকে চারে রাখবে, না কি লোয়ার অর্ডারে নামবে, সেটা দেখার। অনেক দিন পরে ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবে। যদিও ধোনিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত ক্যাপ্টেন ঘোষণা করা হয়েছে, তা-ও অস্ট্রেলিয়া সফরটা ওর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটে নিজের দলকে সঠিক রাস্তায় ফিরিয়ে আনতে হবে ধোনিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy