ফাইনালে মদরিচ কি পারবেন ক্রোয়েশিয়াকে জেতাতে? ছবি: এএফপি।
সার্বিয়ার বিদ্রোহীদের হাতে ঠাকুরদা খুন। বাড়ি পুড়ে যাওয়া। ছয় বছর বয়সে শরণার্থী হিসেবে অন্যত্র চলে আসতে বাধ্য হওয়া। হোটেলের ঘরে দিনের পর দিন থাকা। বাইরে হিংসার আবহেই হোটেলে ফুটবল সাধনায় হাতেখড়ি। লুকা মদরিচের শৈশব মোটেই আর পাঁচজনের মতো ছিল না। সেই তিনিই ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়ক হিসেবে নামবেন রবিবারের ফাইনালে। যা রূপকথার মতোই!
১৯৮৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর জাদারে জন্ম হয়েছিল মদরিচের। যা তখন ছিল যুগোস্লাভিয়ায়। ক্রোয়েশিয়া সেই সময় পরাধীন। ছয় বছর বয়সে বাড়ির সামনে সার্বিয়ার বিদ্রোহীরা খুন করে তাঁর ঠাকুর্দাকে। পুড়ে যাওয়া বাড়ি ছেড়ে সমুদ্রের ধারে জাদারের নিকটবর্তী শহরে উঠে যেতে বাধ্য হয় মদরিচের পরিবার। সেখানে দিনের পর দিন হোটেলে থাকতে বাধ্য হন তাঁরা। যা ফুটবলের সঙ্গে সখ্যতা বাড়ায় তাঁর।
বাইরে গুলি-গোলা ও গ্রেনেড বর্ষণের মধ্যেই হোটেল ফুটবল নিয়ে চলতে থাকে সাধনা। যা আবার পছন্দ হত না হোটেলের কর্মীদের। সেই কোলেভারে হোটেলের মুখপাত্র একবার বলেছিলেন, “বোমায় হোটেলের যত কাচ ভেঙেছিল, তার চেয়ে বেশি ভেঙেছিল মদরিচের শট। হোটেলের হলঘরে দিনভর ফুটবল খেলতে থাকত ও।”
সোনার বল পাওয়ার লড়াইয়ে আছেন মদরিচ। ছবি: এএফপি।
মদরিচ মনে করেন সেই সময়ের স্বাধীনতার যুদ্ধ মানসিক ভাবে শক্তপোক্ত করে তুলেছে ক্রোটদের। তাঁর কথায়, “আমরা যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলাম, তা মোটেই সহজ ছিল না। যুদ্ধ আমাদের শক্তিশালী করে তুলেছিল। আমরা সহজে ভেঙে যাওয়ার লোক নই। আমাদের হারানো বেশ কঠিন। সেটা ফুটিয়ে তোলার সংকল্প কাজ করে আমাদের মধ্যে। আমরা যে সফল হতে পারি, এটা দেখাতে চাই সবাইকে।”
রাশিয়া বিশ্বকাপে ফুটে উঠেছে ক্রোয়েশিয়ার সেই সংগ্রামী চেতনাই। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল, কোয়ার্টার ফাইনালের পর সেমিফাইনাল, তিনটি নকআউট ম্যাচই গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে। তার মধ্যে সেমিফাইনাল ছাড়া বাকি দুই ম্যাচই টাইব্রেকারে জিতেছেন মদরিচরা। যা তাঁদের লড়াকু মানসিকতাই তুলে ধরছে।
আরও পড়ুন: অঘটনময় বিশ্বকাপের সেমিতে ক্রোয়েশিয়ার জয়ের পাঁচ কারণ
আরও পড়ুন: দরকারে এক পায়েও ফাইনালে নামবেন রাকিতিচ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy