ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে যে সময়টায় তিনটে টেস্ট ম্যাচের সিরিজ খেলার কথা ছিল ভারতের, সেই সময়ে এখন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে পাঁচটা এক দিনের ম্যাচের সিরিজ খেলবে ধোনিরা। টেস্ট সিরিজটা হলে গুরুত্বপূর্ণ অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে ভারতের প্রস্তুতিতে খুব কাজে লাগত। আমি বলব, সফর মাঝপথে ভেস্তে দিয়ে দেশে ফিরে যাওয়াটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটারদের খুবই হঠকারী সিদ্ধান্ত। একদম ছেলেমানুষের মতো কাজ করেছে ওরা। তবে এত কম সময়ের মধ্যে পাঁচটা একদিনের ম্যাচ খেলতে রাজি হওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কার কাছে আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।
ভারত আবার এই সিরিজটা এক জন নতুন ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে শুরু করছে। কারণ এই সিরিজে নির্বাচকরা মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে তিন ম্যাচ বিশ্রাম দিয়েছে। আসলে এই বিশ্রামটা ধোনির খুব দরকার ছিল। সব ধরনের ফরম্যাটে গত ক’মাস ও একটানা অক্লান্ত ক্রিকেট খেলে গিয়েছে। সে দিক থেকে দেখলে, অস্ট্রেলিয়ার মতো মারকাটারি সফর শুরুর আগে বিশ্রামটা ওর প্রাপ্যও। ভারতের স্বার্থেই চাইব ধোনি নিজে একেবারে চনমনে, তরতাজা হয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিমানে উঠুক।
ধোনির জায়গায় দলে এসেছে ঋদ্ধিমান সাহা। ঋদ্ধির জন্য আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল। ওর সামনে এটা কিন্তু সারা জীবনের একটা সুযোগ। এক দিনের ক্রিকেটে ধোনির জুতোয় পা গলানো মোটেই সহজ কাজ নয়। এই সিরিজে ঋদ্ধির কাছে ক্রিকেট মহলের প্রত্যাশা যে কারণে আকাশছোঁয়া হতে বাধ্য। তবে ও যদি আমার পরামর্শ চায়, একটাই কথা বলব অন্য সব কিছু ভুলে নিজের খেলাটা খেলে যাবে। ঋদ্ধি ঠিক কী মানসিকতা নিয়ে সিরিজটায় নামছে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওর উচিত কার বদলি খেলছে, তা নিয়ে না ভেবে এটাকে স্রেফ তিনটে একদিনের ম্যাচ হিসাবে ধরে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করা। সঙ্গে এটাও ওকে মনে রাখতে হবে যে, তিনটে ম্যাচ পরে ধোনি আবার নিজের জায়গায় ফিরে আসবে। অবশ্য নির্বাচকেরা যদি ওকে আরও বিশ্রাম দিতে না চায়। দায়িত্ব শুধু তিনটে ম্যাচের মনে রাখতে পারলে ঋদ্ধি অনেক বেশি খোলা মনে, চাপমুক্ত হয়ে খেলবে এবং তখন খেলাটা উপভোগ করতে পারবে।
বিরাট কোহলির সামনেও এটা দারুণ একটা সুযোগ। বাংলাদেশে এশিয়া কাপে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার পর নিজের ক্যাপ্টেন্সিতে আরও একবার শান দিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে ও। এমনিতে ক্রিকেট মাঠে বিরাটের মানসিকতা আর হাবভাবটা আমার বেশ পছন্দ। কিন্তু নিজের উপর এত বেশি চাপ তৈরি না করে ওকে আর একটু হাল্কা হতে শিখতে হবে। সবচেয়ে জরুরি, বুঝতে হবে যে, ক্যাপ্টেন্সি আর ব্যাটিং দু’টো একেবারে আলাদা বিষয়। দু’টোকে গুলিয়ে না ফেলাই এই সিরিজে ওর আসল পরীক্ষা। ব্যাট হাতে বিরাটের দক্ষতা নিয়ে কারও মনে কোনও রকম প্রশ্নের জায়গাই নেই। তাই ব্যাটিং আর ক্যাপ্টেন্সিকে আলাদা করাটা ও যত তাড়াতাড়ি আয়ত্ত করতে পারে, তত স্বস্তিতে খেলতে পারবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy