আইপিএল প্রস্তুতি। ইডেনে ইউসুফ পাঠান। বুধবার। -শঙ্কর নাগ দাস
বুধবার বিকেলে প্র্যাকটিসে যাওয়ার আগে টিম হোটেলে বসে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকারে যা বললেন কেকেআরের ইউসুফ পাঠান...
প্রশ্ন: ব্রেথওয়েটের চার ছক্কায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া দেখেছেন নিশ্চয়ই?
ইউসুফ: অবশ্যই দেখেছি। দারুণ লেগেছে। খুব উপভোগ করেছি।
প্র: শেষ ওভারে এ রকম পরিস্থিতিতে ব্যাটসম্যানের কী অবস্থা হয়?
ইউসুফ: এ রকম পরিস্থিতিতে তো বড় শট নেওয়া ছাড়া কোনও রাস্তা থাকে না। এ রকম সময় সঠিক শট সিলেকশন বেশি জরুরি। এটাই সে দিন ব্রেথওয়েট দারুণ করেছে। তবে প্রথম ওভার থেকেই আমার বিশ্বাস ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ পারবে। ওদের ব্যাটিং লাইন আপ দুর্দান্ত। শুধু চার-পাঁচ জনের উপর টিমটা দাঁড়িয়ে থাকে না। একের পর এক হার্ড হিটার আছে ওদের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও তো চার-ছয় হাঁকিয়ে ম্যাচ জিতিয়েছে ওরা।
প্র: বিরাট কোহালিও তো দুর্দান্ত শট বাছাই করে ভারতকে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জেতালেন?
ইউসুফ: আপনারা শুধু ওর বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সটা মনে রাখলেন, বিরাট তো এশিয়া কাপেও কঠিন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ বার করে নিয়ে আসছে। তাও আবার এর চেয়েও কঠিন উইকেটে। যুবরাজের সঙ্গে দুর্দান্ত পার্টনারশিপ খেলল একটা, মনে নেই? ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলছে। ও মাঠে নামা মানেই ক্রিকেট দর্শকদের মস্তি।
প্র: আপনিও তো এর আগে আইপিএলে এ রকম বহু পরিস্থিতি সামলেছেন, দলকে জিতিয়েছেনও?
ইউসুফ: হ্যাঁ, আমিও এ রকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছি অনেকবার। এই চ্যালেঞ্জগুলো আমি উপভোগও করি। ক্রিকেটপ্রেমীরাও চান ম্যাচ যে এই অবস্থায় আমি দলকে ম্যাচ জেতাই। এই রকম অবস্থা থেকে ম্যাচ জেতানোটা খুব তৃপ্তিও দেয়।
প্র: কিন্তু সাম্প্রতিক জাতীয় টি-টোয়েন্টিতে তো আপনার ব্যাট থেকে বেশি রান পাওয়া যায়নি। আপনার কি এখন ব্যাড প্যাচ চলছে?
ইউসুফ: না, ঠিক তা বলা যাবে না। ওই ম্যাচগুলোতে আমাকে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাট করতে হয়েছিল। আমাদের দল (বরোদা) ভাল খেলেছে। আমরা ফাইনালেও পৌঁছেছি। ব্যাড প্যাচ বলব না। আসলে উল্টোদিকের ব্যাটসম্যান মারতে শুরু করলে তাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য মাঝে মাঝে নিজেকে সংযত রাখতে হয়। আমাকে সেই কাজটাই করতে হয়েছে মুস্তাক আলি-র বেশিরভাগ ম্যাচে। কেকেআরে গত বছর যেমন রাসেল আর আমার পার্টনারশিপ জমে গিয়েছিল। রাসেল তুমুল মারছিল আর আমি ওকে সমানে সাপোর্ট দিচ্ছিলাম।
প্র: এ বার কি চেনা ইউসুফ পাঠানকে দেখা যাবে?
ইউসুফ: এ বার অনেক বড় কিছু করার ইচ্ছা আছে। দেখা যাক শুরুটা কী রকম হয়। এ বার একটু অন্য রকম কিছু করব বলে ভেবে রেখেছি।
প্র: অন্য রকম কিছু মানে?
ইউসুফ: সেই চেনা ইউসুফ পাঠানকে ফের মেলে ধরার চেষ্টা করব যাকে আপনারা দেখতে চান। হয়তো আগের চেয়ে বেশি আগ্রাসন দেখতে পারেন আমার মধ্যে। এই যে বলছেন ব্যাড প্যাচ চলছে, তার জবাব দিতে হবে আমাকে।
প্র: সে জন্য কি কোনও বিশেষ শট বা টেকনিকে জোর দিচ্ছেন?
ইউসুফ: না, তা কেন করব? আমাকে সিনিয়ররা বলেছেন, যেমন ব্যাটিং আমি করি তেমনই করা উচিত। শুধু নিজেকে মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখতে। ঈশ্বরের কৃপায় এবার সেই চেষ্টাটাই করব।
প্র: জাক কালিস তো গত বছর পর্যন্ত সতীর্থ ছিলেন, এ বার কোচ। কী ভাবে অ্যাডজাস্ট করবেন ওঁর সঙ্গে?
ইউসুফ: কোনও অসুবিধা হবে না। যখন আমাদের সিনিয়র প্লেয়ার ছিল, তখনও একসঙ্গে খেলেছি, ম্যাচও জিতিয়েছি একসঙ্গে। জাক আগে ড্রেসিংরুমে কম কথা বলত। যেটুকু দরকার পড়ত, সেটুকুই বলত। এখন তো ওকেই বেশি কথা বলতেই হবে। তাতে আমাদের বরং আরও উপকার হবে।
প্র: আর এক বড় ব্যাটসম্যান সাইমন কাটিচও তো এ বার আপনাদের কোচ?
ইউসুফ: সাইমন বড় ক্রিকেটার। ওঁর কাছ থেকেও অনেক কিছু শেখা যাবে এ বার। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের ধারাটা অন্য রকম। সেগুলো শিখতে পারব। যেমন ওয়ার্নের কাছে থেকে বোলিংটা শিখেছিলাম। কাটিচের সঙ্গে বোঝাপড়াটা ঠিক করতে কিছুটা সময় লাগবে। লিগের শেষের দিকে ওঁর অভিজ্ঞতাটা বরং আমাদের বেশি কাজে লাগবে।
প্র: ঘরোয়া ক্রিকেটের পর নিজেকে প্রস্তুত রাখার জন্য কী কী করলেন?
ইউসুফ: ভদোদরার মাঠে নিয়মিত ট্রেনিং করছিলাম। বাড়িতে পরিবারের সঙ্গেও সময় কাটিয়েছি। এটা মানসিক ভাবে নিজেকে চাঙ্গা করেছে। তা ছাড়া বিশ্বকাপের সময় দশ-বারো দিন দক্ষিণ আফ্রিকায় কেকেআরের ক্যাম্প ছিল। সেখানেও প্রচুর খেটেছি। ছ’জন ক্রিকেটার ছিলাম আমরা সেখানে।
প্র: নিজেকে মোটিভেট করার জন্য ভিডিও দেখা বা বই পড়ার অভ্যাস আছে আপনার?
ইউসুফ: তার দরকার কী? কেকেআরে যারা আশপাশে থাকে, তাদের কাছ থেকে এত মোটিভেশন পাই যে আর কোনও কিছু থেকে তা পাওয়ার দরকারই পড়ে না। নাইটদের ড্রেসিংরুমটাই তো মোটিভেশনের একটা বড় জায়গা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy