প্রশ্ন: প্রথমেই আটলেটিকো দে কলকাতার জার্সিতে স্বাগত।
গার্সিয়া: ধন্যবাদ।
প্র: চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি অবসর নিলেন পেশাদার ফুটবল থেকে। জুলাইয়ে অবসর ভেঙে ফিরে এলেন আইএসএলে। এত তাড়াতাড়ি প্রত্যাবর্তন?
গার্সিয়া: বিশ্বে নানা ভাইরাসের মধ্যে একটা হল ফুটবল! যেটায় আমি পুরোপুরি আক্রান্ত। আর ইন্ডিয়া নিয়ে ছোটবেলা থেকেই কৌতূহল ছিল। আমার ক্লাব আটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে যখন প্রস্তাব এল, তখন আর না বলতে পারিনি।
প্র: ভারত সম্পর্কে খবর রাখেন। এটা জানেন, আপনার দলের অন্যতম মালিক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়? যিনি ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটের একদা ক্রাউড-পুলার। বিশ্বকাপ ফাইনালে অধিনায়কত্ব করেছেন?
গার্সিয়া: জানি, তবে ব্যক্তিগত ভাবে সৌরভের সঙ্গে এখনও আলাপ হয়নি। ভারতে গেলে নিশ্চয়ই আলাপ হবে। স্প্যানিশ টিভিতে ক্রিকেট অতটা দেখায় না। তবে ইপিএলে খেলার সময় ইংল্যান্ডের খবরের কাগজে ওঁর সম্পর্কে পড়েছি। খুব বড় ক্রিকেটার। আইএসএলে ওঁর দলের হয়ে আমিও একটা মনে রাখার মতো পারফরম্যান্স করতে চাই।
প্র: আপনি লা লিগা আর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ দুটোই খেলেছেন। দুটোর মধ্যে কোন লিগকে এগিয়ে রাখবেন?
গার্সিয়া: স্পেনের নাগরিক হয়েও বলব লা লিগার চেয়ে ইপিএল অনেক কঠিন। ওখানে উত্তেজনার পারদ চড়া, প্লেয়াররা টেকনিক্যালি খুব ভাল, কোচেরাও জবরদস্ত।
প্র: লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন। কোয়ার্টার ফাইনাল আর সেমিফাইনালে গোল করেছেন। আপনার জন্য লিভারপুল সমর্থকরা তো গানও বেঁধেছিল ‘কেম ফ্রম বার্সা, ব্রিং আস জয়। হি ইজ ফাইভ ফিট সেভেন, হি ইজ ফুটবল হেভেন। সো প্লিজ ডোন্ট টেক আওয়ার লুই অ্যাওয়ে।’ কলকাতার ফুটবল অনুরাগী এ রকম গান বাঁধার সুযোগ পাবে?
গার্সিয়া: ওটা দারুণ অনুভূতি। কলকাতাতেও একই অভিজ্ঞতা হবে কি না, সময় বলবে। তার জন্য ভাল খেলতে হবে সবার আগে।
প্র: ২০০৬-এ স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন। দুঃখ হয় না যে, ঠিক পরের বিশ্বকাপেই স্পেন যখন চ্যাম্পিয়ন তখন আপনি নেই!
গার্সিয়া: স্পেনের যা ফুটবল ঐতিহ্য তাতে আরও আগেই আমাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা। আপনার প্রশ্নের মতো ভাবিনি কখনও।
প্র: বার্সেলোনা আর স্পেন দুটো টিমের জার্সি গায়েই খেলেছেন। দু’দলেরই ব্রহ্মাস্ত্র তিকিতাকার অ্যান্টিডোট গত কয়েক বছরে অনেক কোচই বের করেছেন। তিকিতাকা যুগ কি শেষ?
গার্সিয়া: বার্সেলোনা সম্পর্কে এটা বলার আগে শেষ আট বছরে বার্সার পারফরম্যান্সটা দেখুন। গত বছর হয়তো পারফরম্যান্স গ্রাফটা নেমেছে। এ বার দেখবেন ওরা সব ট্রফির জন্যই পাল্টা লড়াই দেবে। আর তিকিতাকা ফিরবেই। আমাদের দেশের অ্যাকাডেমিগুলোই এর উত্তর।
প্র: আটলেটিকো মাদ্রিদের গত বছরের ঝকঝকে পারফরম্যান্সের রহস্য?
গার্সিয়া: রহস্য একটাই দিয়েগো সিমিওনের নিষ্ঠা।
প্র: আইএসএলের প্রস্তুতি কেমন চলছে?
গার্সিয়া: আমাদের কোচ হাবাস ভাল কাজ করছেন। আমরাও নিজেদের নিংড়ে দিচ্ছি মাঠের ভিতর। আর মাঠের বাইরে আমার ভারতীয় টিমমেটরাও দুর্দান্ত। সঞ্জু, বলজিৎ, মাসি, অর্ণব, ক্লাইম্যাক্সরা বেশ মজার ছেলে। ব্যারেটোর (সহকারী কোচ) সঙ্গেও জমে গিয়েছে। এর মধ্যে ম্যানেজার রজতের কথা আলাদা করে বলতেই হবে। ওর ম্যান ম্যানেজমেন্ট দারুণ। সব মিলিয়ে আমাদের টিমটা একটা পরিবার। যারা এ বারের ক্রিসমাসটা আইএসএল ট্রফি নিয়ে সেলিব্রেট করতে এখন থেকেই ফোকাসড।
প্র: অক্টোবর থেকেই পরের দু’মাস ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে দৌড়োবেন। নিজেকে তরতাজা রাখার জন্য বিশেষ কোনও প্ল্যান?
গার্সিয়া: আমি সিনেমার পোকা। অবসরে ভারতীয় সিনেমা দেখতে বসে যাব পরিবার নিয়ে।
প্র: আপনার ঘরের মাঠ যুবভারতীতে ফিল্ড টার্ফ। এই ধরনের মাঠের জন্য অসুবিধা হতে পারে?
গার্সিয়া: টার্ফ সব সময় ভাল ফুটবলের পরিপন্থী। এটা আমার একদম ব্যক্তিগত মত। এর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াও খুব সহজ নয়। তবে তার জন্য নিজের সেরাটা উজাড় করে দেব প্রস্তুতিতে।
প্র: আটলেটিকো দে কলকাতার সমর্থকদের জন্য কোনও বিশেষ বার্তা?
গার্সিয়া: কলকাতা তো ফুটবলের শহর। আর সেই শহরের চ্যালেঞ্জার হওয়াটা গর্বের। সমর্থকরা মাঠে এসে গলা ফাটান। আমরাও প্রথম আইএসএল ট্রফিটা ওঁদের দেওয়ার চেষ্টা করব।
নাম লুই গার্সিয়া
জন্ম বাদালোনা, স্পেন
বয়স ৩৬
উচ্চতা পাঁচ ফুট সাড়ে ন’ইঞ্চি
কেরিয়ার
আটলেটিকো মাদ্রিদ (৩০ ম্যাচে ৯ গোল), বার্সেলোনা (২৫ ম্যাচে ৪ গোল), লিভারপুল (৭৭ ম্যাচে ১৮ গোল), আটলেটিকো মাদ্রিদ (দ্বিতীয় পর্বে ৪৮ ম্যাচে ২ গোল)
স্পেনের জার্সিতে ২০ ম্যাচে ৪ গোল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy