Advertisement
E-Paper

ক্রিকেটের গ্র্যান্ড স্ল্যাম ধোনিদেরই পাওয়ার কথা

বিরাট কোহলির কথা ভাবতে ভাবতে নিশ্চয়ই বেশির ভাগ ভারতীয় শুক্রবার রাতে ঘুমোতে গিয়েছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়া, ডিনার টেবলের আড্ডা, সান্ধ্যভ্রমণ সব কিছু জুড়েই ছিল এই তরুণকে নিয়ে আলোচনা। আমরা কি অন্য গ্রহের কোনও মানুষকে দেখছি, যে ভারতকে নিজের ঘর হিসেবে বেছে নিয়েছে? আমার কাছে ও-ই কিন্তু আধুনিক ভিভ রিচার্ডসের সবচেয়ে কাছাকাছি। ওর সেই শরীরী ভাষাটা আছে। ব্যাকরণের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা আছে। বিশাল শক্তি আছে। লড়াকু। ম্যাচ জেতানোর একটা নির্ভুল, ধারাবাহিক ক্ষমতা ওর আছে।

রবি শাস্ত্রী

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৫১

বিরাট কোহলির কথা ভাবতে ভাবতে নিশ্চয়ই বেশির ভাগ ভারতীয় শুক্রবার রাতে ঘুমোতে গিয়েছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়া, ডিনার টেবলের আড্ডা, সান্ধ্যভ্রমণ সব কিছু জুড়েই ছিল এই তরুণকে নিয়ে আলোচনা। আমরা কি অন্য গ্রহের কোনও মানুষকে দেখছি, যে ভারতকে নিজের ঘর হিসেবে বেছে নিয়েছে? আমার কাছে ও-ই কিন্তু আধুনিক ভিভ রিচার্ডসের সবচেয়ে কাছাকাছি। ওর সেই শরীরী ভাষাটা আছে। ব্যাকরণের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা আছে। বিশাল শক্তি আছে। লড়াকু। ম্যাচ জেতানোর একটা নির্ভুল, ধারাবাহিক ক্ষমতা ওর আছে। যেগুলো সবই গ্রেট রিচার্ডসের হলমার্ক ছিল।

অসাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ হল, সাধারণ মানুষের মনে বিস্ময় সৃষ্টি করার ক্ষমতা। এদের মধ্যে খুঁত খোঁজার চেষ্টা করলেও কোনও ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যাবে না। লোকে ভাববে এর মধ্যে নিশ্চয়ই কোথাও কোনও খামতি থাকবে, কোনও না কোনও সময় নিশ্চয়ই এই লোকটা নিজের শ্রেষ্ঠত্বে বোর হয়ে যাবে। সব পরিবেশে, সব বিপক্ষের বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই সব সময় এর টেম্পারামেন্ট, ফোকাস, খিদে আর স্কিল কাজ করবে না। কখনও না কখনও নিশ্চয়ই খাওয়াদাওয়া বা ঘুমে ব্যাঘাত ঘটবে।

মন যার ব্যাখ্যা করতে পারে না, তাকেই অনন্যসাধারণ বলে। এটা এমন একটা ব্যাপার যা সাধারণ মানুষের বোধবুদ্ধির বাইরে। কোহলি এখন ঠিক এই জায়গায় আছে। ও একাই মাঠে হাজার-হাজার দর্শক টেনে আনতে পারে, লক্ষের উপরকে টিভির সামনে বসিয়ে দিতে পারে। সম্ভবত কোটি কোটি মানুষকে সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কে ব্যস্ত রাখতে পারে। ‘বিরাট কোহলি কোড’ এখন নতুন সোনার মাপকাঠি।

যা ভাবা হয়েছিল, ঠিক তা-ই হল শুক্রবার। টুর্নামেন্টে ভারত তাদের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচটা খেলে ফেলল। বল স্পিন করেনি। ধোনিকেও দেখে মনে হল মিশ্র আর জাডেজার কোটা শেষ করানো উচিত কি না, নিশ্চিত না। স্কোয়্যার বাউন্ডারিগুলো ছোট হওয়ায় ওরা আরও অথর্ব হয়ে পড়ে। শুধু অশ্বিন নিজে বৈচিত্র আর স্পিন নিয়ে ব্যতিক্রম হয়ে থাকল। ও দুর্দান্ত।

দক্ষিণ আফ্রিকাকে অবশ্য খুব বেশি লজ্জায় পড়তে হয়নি। ওরা রান করেছে। ওদের বোলিংয়ে বৈচিত্র আছে। সাধারণত যা দেখা যায় না তেমন কিছু স্লোয়ার বাউন্সারও ওরা দিয়েছে। আর ফিল্ডিং তো দুধর্র্র্ষ। ওরা চোক করেছে ঠিকই, কিন্তু ওদের ‘চোকার’ বলতে ইচ্ছে হবে না।

ফাইনাল নিয়ে শ্রীলঙ্কার নার্ভাস হওয়ারই কথা। পরিবেশ যদি একই থাকে, তা হলে ওদের স্পিনাররা মনে হয় না তেমন দাপট দেখাতে পারবে। আর ওদের ব্যাটিং তো শক্তির বিচারে ভারতের অর্ধেকও নয়। যা দেখছি, ওদের সেরা বাজি হতে পারে রান তাড়া করা। আর মাহেলা বা সঙ্গার শেষ একটা মনে রাখার মতো ইনিংস খেলে যাওয়া। দু’জনেই সেটা খেললে তো আরও ভাল।

এত দূর চলে আসার পর মনে হয় না ক্রিকেটের গ্র্যান্ড স্ল্যাম থেকে ভারতকে ফেরানো সহজ হবে বলে। ক্রিকেটের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত কাপটা ধোনি আর ওর সতীর্থদের জন্য অপেক্ষা করছে। রবিবার রাতের মধ্যে সেটা বাস্তব হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ততক্ষণ পর্যন্ত দেশের নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে শুধু ফাইনাল থাকবে। দেশের সাধারণ নির্বাচন, আদালতের মামলা আর যা যা আছে, সবই রবিবার-পরবর্তী ভাবনার বিষয়। রবিবার যা-ই হোক না কেন, ভারত এই টুর্নামেন্টে বিশ্বমানের ক্রিকেট খেলেছে। আর ফ্লেচারকেও বিশ্বমানের কোচ বলে মনে হচ্ছে!

ravi shastri icc t20 world cup
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy