Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

নয়া ভূমিকায় অমিতাভকে পেয়ে মুগ্ধ ভক্তকুল

তারিখটার জন্যই তবে সব কিছু! নইলে তিনি ম্যাচ দেখলে নাকি খুব কম সময়েই ভারত জেতে। তিনি নিজেই সেটা বলে থাকেন। ১৫ ফেব্রুয়ারির রবিবারটা কিন্তু ব্যতিক্রম। কেন? কারণ এ দিন তিনি শুধু ম্যাচ দেখেননি। জীবনে প্রথম বার ‘কমেন্ট্রি বক্সে’ বসেছেন। যদিও অ্যাডিলেড নয়, মুম্বইয়ে স্টার স্পোর্টসের স্টুডিও থেকে ধারাভাষ্যের সময়ে তাঁর পরিচিত ‘ব্যারিটোনে’ চমকে দিয়েছেন ভক্তদের। তবে বলিউডের প্রবীণ অভিনেতার গলার জোরেই ভারত জিতে গিয়েছে, এমনটা কিন্তু প্রথম বারের ধারাভাষ্যকার বলছেন না।

মুম্বইয়ের একটি স্টুডিওতে ভারত-পাক ম্যাচের ধারাভাষ্য করছেন (বাঁ দিক থেকে) কপিল দেব, আকাশ চোপড়া ও অমিতাভ বচ্চন। রবিবার। ছবি: পিটিআই

মুম্বইয়ের একটি স্টুডিওতে ভারত-পাক ম্যাচের ধারাভাষ্য করছেন (বাঁ দিক থেকে) কপিল দেব, আকাশ চোপড়া ও অমিতাভ বচ্চন। রবিবার। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫২
Share: Save:

তারিখটার জন্যই তবে সব কিছু! নইলে তিনি ম্যাচ দেখলে নাকি খুব কম সময়েই ভারত জেতে। তিনি নিজেই সেটা বলে থাকেন।

১৫ ফেব্রুয়ারির রবিবারটা কিন্তু ব্যতিক্রম। কেন? কারণ এ দিন তিনি শুধু ম্যাচ দেখেননি। জীবনে প্রথম বার ‘কমেন্ট্রি বক্সে’ বসেছেন। যদিও অ্যাডিলেড নয়, মুম্বইয়ে স্টার স্পোর্টসের স্টুডিও থেকে ধারাভাষ্যের সময়ে তাঁর পরিচিত ‘ব্যারিটোনে’ চমকে দিয়েছেন ভক্তদের। তবে বলিউডের প্রবীণ অভিনেতার গলার জোরেই ভারত জিতে গিয়েছে, এমনটা কিন্তু প্রথম বারের ধারাভাষ্যকার বলছেন না।

তারিখটার মাহাত্ম্য অন্য জায়গায়। ভারতের জয়ের পরে টুইটারে অমিতাভ বচ্চন নিজেই বলেছেন সে কথা: “ইএএএ! ভারত জিতেছে... আমার দ্বিতীয় বারের অনুমানটাও সত্যি হল.. তা হলে কি ১৫ ফেব্রুয়ারিটাই কিছু করল!!” কী হয়েছিল ১৫ ফেব্রুয়ারি? অমিতাভের টুইট-জবাব, “১৫ ফেব্রুয়ারি..!! আমার জন্য ঐতিহাসিক দিন... ৪৬ বছর আগে ১৯৬৯-এর এই দিনটিতেই জীবনে প্রথম বার ফিল্মে সই করে ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকেছিলাম।”

দিন-মাহাত্ম্য মাথায় রেখেও ক্রিকেটমোদী থেকে অমিতাভ-প্রেমী সকলেই কিন্তু বলছেন, তিনিই আজকের ম্যাচের লাকি চার্ম! অমিতাভ তাঁর অসাধারণ কণ্ঠ ধার দিয়ে এক মূক যুবককে অভিনেতা হতে সাহায্য করেছেন নিজের ছবি ‘শামিতাভ’-এ। বস্তুত এই ম্যাচের ধারাভাষ্য ঘিরেও সে ছবির প্রচার গড়িয়েছে। কিন্তু তা বলে কমেন্ট্রিতে কোনও ফাঁকি দেননি বর্ষীয়ান অভিনেতা।

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে হর্ষ ভোগলের মতো ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার বা কপিল দেবের মতো তারকার সঙ্গে বসে প্রয়োজন মতো টিপস নিয়ে রেখেছিলেন অমিতাভ। এই বিশ্বকাপে প্রথম বার মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। তা নিয়ে স্বাভাবিক উত্তেজনা তো ছিলই। কিন্তু তার পাশাপাশি অন্য আকর্ষণ ছিল ৭২-এর জলদগম্ভীর স্বরে ধারাভাষ্য। যা শুনবেন বলে অনেকেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ছিলেন। যদিও ‘অভিনেতা’ হয়ে ওঠার আগে ১৯৬০-এর শেষের দিকে তাঁর ‘ব্যারিটোনে’ পাত্তা দেয়নি অল ইন্ডিয়া রেডিও!

সেই স্মৃতি পিছনে ফেলে ম্যাচ শুরুর আগে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক কপিল দেব এবং পাকিস্তানের ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ শোয়েব আখতারের সঙ্গে বসে হিন্দিতে তাঁর স্বকীয় ভঙ্গিতে শুরু করে দিয়েছিলেন অমিতাভ। ক্রিকেটের খুঁটিনাটির পাশাপাশি চলছিল টুকটাক মস্করাও। তার পরে আকাশ চোপড়া আর শোয়েবের সঙ্গে কমেন্ট্রি বক্সেও সহজাত ভাবেই এগিয়ে গিয়েছেন তিনি। ওপেনার শিখর ধবনের কৌশল নিয়ে তাঁর চোখা চোখা মন্তব্যে মুগ্ধ হয়ে যান কপিল দেবও। বলেছেন, দারুণ পারফরম্যান্স, চালিয়ে যান।

এর পরে ম্যাটিনি আইডলের পাশে মাইক্রোফোনে চলে আসেন রাহুল দ্রাবিড় আর অরুণ লালও। ১৯৮৩-তে ভারতের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে কথা চলছিল তাঁদের। সেই ফাইনালের দিনটায় কী করছিলেন অমিতাভ? তাঁর বিশেষ ভক্ত দ্রাবিড়, এই সুযোগে খোদ তারকাকেই প্রশ্নটা করে বসেন।

প্রথম বারের ধারাভাষ্য আগাগোড়াই উপভোগ করেছেন অমিতাভ। ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ করার আগে যিনি বলে যান, “আমাকে এখানে ডাকার জন্য ধন্যবাদ। এটা আমার কাছে একটা অসাধারণ সুযোগ। আশা করি ভারত জিতবে।”

ধারাভাষ্য শেষে টুইটারেও নিজের প্রতিক্রিয়া জানান: “কমেন্ট্রি শেষ। কপিল, রাহুল, শোয়েবের মতো ব্যক্তিত্বের সঙ্গে এক ঘরে বসে কথা বলাটা দারুণ সম্মানের। ৩০০ হবে ভেবেছিলাম... তাই হল!”

নতুন ভূমিকায় সিনিয়র বচ্চনকে পেয়ে মুগ্ধ বলিউডও। শাহিদ কপূরের টুইট, “ভারত-পাক ম্যাচে অমিতাভের গলা। কী দারুণ সকাল।” “কমেন্ট্রি কোনও দিন এত মন ছুঁয়ে যায়নি,” টুইটারে জানিয়েছেন সিদ্ধার্থ মলহোত্রের মতো তরুণ বলিউড অভিনেতা। আর এক অভিনেতা রীতেশ দেশমুখের বক্তব্য, “অমিতাভ বচ্চন টিভিতে লাইভ! আর কী চাই!”

শুধু প্রশংসা নয়, টুইটারে একটু-আধটু সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে অমিতাভকে। কেউ বলেছেন, ‘দূরদর্শনের চেয়েও অমিতাভের কমেন্ট্রি খারাপ।’ কারও মতে, ‘অমিতাভ অনেক বেশি কথা বলেছেন। হয়তো প্রতি মিনিটে কত কত শব্দ বলছেন, তার উপরে নির্ভর করেই টাকা পাচ্ছেন উনি।’

যদিও অমিতাভ-ভক্তরা তাতে কান দিচ্ছেন না। বরং তাঁর কণ্ঠেই ভারতের জয় এসেছে, গলা ফাটিয়ে বলতে চেয়েছেন ভক্তের দল। ম্যাচ শেষের পরে ভারতকে অভিনন্দন জানিয়ে ফের টুইট করেন অমিতাভ। আর তার পরে ভক্তদের মতোই তাঁর উপলব্ধি, “হাহাহা... হয়তো আমার আরও কমেন্ট্রি করা উচিত!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE