মেয়েদের টেনিসে যে ম্যাচ লাইন-আপটা আমার ভীষণ পছন্দের, আজ ঠিক সেটাই মেলবোর্ন পার্কে!
মারিয়া শারাপোভা বনাম সেরেনা উইলিয়ামস।
দু’জনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইতিহাস সুদীর্ঘ। যেখানে তীক্ষ্ম লড়াই, জেতার তীব্র ইচ্ছে—সব মশলাটশলা মিলে ম্যাচটা সার্কিটে যেমন দারুণ জনপ্রিয়, তেমনই বিরাট কৌতূহলের। টেনিসের বাজারে রেটিংয়েও রীতিমতো উঁচুতে। যদিও এ সবের পাশাপাশি মহাম্যাচের একপেশে পরিসংখ্যানটাও আমাদের মোটেই ভুলে যাওয়া উচিত হবে না।
গ্র্যান্ড স্ল্যামে দশ বছর হয়ে গেল, সেরেনাকে হারাতে পারেনি মারিয়া। যে পরিসংখ্যান গ্ল্যামারাস রাশিয়ানের পক্ষে লজ্জার। বিশেষ করে সেরেনার বিরুদ্ধে সামিট যুদ্ধে নামার প্রাক্কালে। নিঃসন্দেহে শারাপোভাকে সেরেনার মতো প্রচণ্ড সমস্যায় সার্কিটের আর কেউ ফেলতে পারেনি।
মারিয়ার ‘সিগনেচার শট’—ম্যাচের শুরুতেই প্রচণ্ড আক্রমণাত্মক খেলা। যেটা সেরেনা কখনই ওকে খেলতে দেয় না। উল্টে সেরেনাই ওই সময়টা এমন ভয়ঙ্কর পাওয়ার আর আগ্রাসন দেখায়, শারাপোভাকে বাধ্য করে এক পা পিছিয়ে ডিফেন্সিভ খেলতে! যে রকম খেলা মোটেই ওর পছন্দের নয়। এবং দ্রুতই ওর ডিফেন্স নড়বড়ে হয়ে উঠতে থাকে আর সেরেনা ম্যাচ বার করে নিয়ে চলে যায়। শনিবার মারিয়াকে ব্যাপারটা উল্টে দিতে হবে। যার জন্য ওর আরও অনেক বেশি আগ্রাসী থাকা দরকার।
সেরেনাকে অবশেষে ষোলোতম চেষ্টায় কব্জা করতে হলে মারিয়ার সামনে একমাত্র রাস্তা—প্রতিদ্বন্দ্বীকে শুরুতেই ডিফেন্সিভ মোড-এ পাঠাও আর তার পরে সেই ভিতের ওপর নিজের ইমারত গড়ার চেষ্টা চালাও।
আমার অবশ্য আজ মেয়েদের ফাইনাল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী হলপেন্ডুলামের মতো একবার এ দিক আর একবার ও দিকে দোলা তিন সেটের এক লড়াই। যাতে শেষমেশ মারিয়ার বিরুদ্ধে সেরেনা ওর জয়ের ব্যবধান বাড়িয়ে তুলবে।
এ বারের অস্ট্রেলীয় ওপেনে মেয়েদের সিঙ্গলস অবশ্য কয়েক জন কৌতূহল জাগানো প্লেয়ারের সন্ধানও দিল। যাদের মধ্যে ম্যাডিসন কিস বিরাট আগ্রহ জাগিয়েছে। উইলিয়ামস বোনেদের পর তেমন কোনও বড় মার্কিন নাম বেরিয়ে আসছিল না। ম্যাডিসন শুধু ব্যতিক্রমই নয়, বিশ্বের প্রথম দশে উঠে আসার মতো দক্ষতা রয়েছে। টেকনিক জমাট। দুর্দান্ত সার্ভ। কিছু গ্রাউন্ডস্ট্রোক এতটাই বেশি জোরে মেরেছে, যেগুলো ওকে ওর সমসাময়িকদের থেকে অন্য মাত্রায় এখনই পৌঁছে দিয়েছে। নিজের প্রতিভার সম্পূর্ণ বিচ্ছুরণের জন্য কিসকে একটু রোগা হতে হবে আর ফিটনেসের দিকে আর একটু বেশি নজর দিতে হবে।
যদিও বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম তার শেষ দু’দিনে পৌঁছে যাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে ছেলেমেয়ে মিলিয়ে চার ফাইনালিস্টই প্রাক্তন গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন। তার মধ্যে আবার মেয়েদের চূড়ান্ত লড়াইটা দুই গ্রেট ভেটারেন্সের মধ্যে। সুতরাং এই মুহূর্তে টেনিসবিশ্বের অন্য সব কিছু ভুলে আজকের ম্যাচটা উপভোগ করা যাক। এ রকম মহাসুযোগ ভবিষ্যতে খুব বেশি না-ও আসতে পারে কিন্তু!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy